পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
বছর কয়েক আগেও মালদহের সাতপাকে বাঁধা পড়তে চলা যুবক-যুবতীদের কিন্তু এই প্রি ওয়েডিং নিয়ে কোনও ধারণাই ছিল না। বিয়ের ছবি তোলা মানে বাঁধা গতের অ্যালবামেই সন্তুষ্ট থাকতেন তাঁরা। তবে এখন আর বিয়ে উপলক্ষে ছবি তোলার ‘প্যাকেজ’ মানে কেবল বিয়ের দিন আর বউভাতের অনুষ্ঠানের ছবি তোলা নয়, বিয়ের আগে কোনও সুন্দর লোকেশনে গিয়ে রীতিমতো বিভিন্ন পোজে ছবি তোলাটাই এখন ফ্যাশন। সেইসঙ্গে কোনও কোনও সদ্য হতে চলা দম্পতি আবার একধাপ এগিয়ে ভিডিও শ্যুটও করছেন। এধরণের প্রি ওয়েডিং শ্যুটিংয়ের ক্ষেত্রে মালদহের যুবক-যুবতী ও ফোটোগ্রাফারদের প্রধান গন্তব্য গৌড় বা আদিনার মতো টুরিস্ট স্পট। তবে সে জায়গাগুলিতে কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে কাজ করতে হয়। তাই বিকল্প জায়গা হিসেবে উঠে আসছে মহানন্দা নদীর পাড়, বালির চর, আম বাগান, কোনও বড় বিলের ধার ইত্যাদি।
মালদহের প্রি ওয়েডিং ফোটোগ্রাফারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, তাঁরা যে শুধু মালদহজুড়েই কাজ করেন, এমনটা নয়। জেলার বাইরে শিলিগুড়ি, ধূপগুড়ি, রায়গঞ্জের মতো উত্তরবঙ্গের অন্যান্য জায়গা থেকেও ডাক পান অনেকে। এই কাজের কোনও বাঁধা ধরা রেট নির্ধারিত হয়নি এখনও। ক্লায়েন্টদের চাহিদার উপর খরচ নির্ভর করে। তবে প্রি ওয়েডিং ফটোশ্যুট করতে গেলে অন্তত হাজার ৩০ টাকা লাগবেই। তবে মোটা খরচ হলেও কিন্তু পিছপা হচ্ছেন না পাত্র-পাত্রীরা। বরং দিনকে দিন চাহিদা বাড়ছেই।
পুরাতন মালদহের প্রি ওয়েডিং ফটোগ্রাফার মৃত্যুঞ্জয় কর্মকার বলেন, শুধু মালদহ নয়, সব জায়গাতেই এখন এই প্রি ওয়েডিংয়ের ট্রেন্ড ছড়িয়ে গিয়েছে গত তিন-চার বছর ধরে। চাহিদা ব্যাপক বেড়েছে। ছবি তোলার প্রতি আমার ঝোঁক দীর্ঘদিন ধরেই। তাই এই কাজ করা শুরু করি। মালদহের বাসিন্দাদের ক্ষেত্রে পছন্দের জায়গা হল আদিনা বা গৌড়। তবে সেখানে কাজ করতে গেলে কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হয়। তাই এখন অনেকেই সেই ঝক্কি এড়াতে বেছে নিচ্ছেন মহানন্দা নদীর তীর বা কোনও বড় বিলের ধারকে। এখন এই প্রি ওয়েডিংয়ের ট্রেন্ড কিন্তু আর ইংলিশবাজার বা পুরাতন মালদহ শহরের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। আমরা চাঁচলের মতো এলাকা থেকেও বুকিং পাচ্ছি। গ্রামীণ এলাকাতেও অনেকে চাইছেন প্রি ওয়েডিং ফটোশ্যুট।
সাহাপুরের বাসিন্দা আরও এক প্রি ওয়েডিং ফটোগ্রাফার আদিত্য সাহা বলেন, প্রি ওয়েডিং মানে আসলে বিয়ে করার আগে দুইজন মিলে সুন্দর করে সাজিয়ে গুছিয়ে ছবি তোলা। বছর তিনেক ধরে এর চাহিদা বেড়েছে। আগে যাঁরা এই সুযোগ পায়নি, এখন বিয়ে হয়ে যাওয়ার পরেও তাঁরা এর প্রতি আগ্রহ দেখাচ্ছেন। তাঁদের ফটোশ্যুটকে অবশ্য আর প্রি ওয়েডিং বলা যাবে না, সেটা হল পোস্ট ওয়েডিং। এধরণের ফটোশ্যুটের জন্য নদীর ধার, আম বাগান, ছাড়াও পছন্দ মতো জায়গায় ছবি তুলতে যেতে হয়। বাইরে থেকেও আমরা ডাক পাই। কোনও নির্দিষ্ট খরচ নেই। ক্লায়েন্টদের চাহিদা বুঝে খরচ ধরা হয়।
আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হতে চলেছেন ইংলিশবাজারের রিম্পা চৌধুরী ভুতি ও সুমন ভুতি। রিম্পা দেবী বলেন, এখন তো প্রি ওয়েডিং ফটো ও ভিডিং শ্যুট সকলেই করছে। আমাদেরও এমনটা করার প্রবল ইচ্ছে রয়েছে। তাই এখন থেকেই ফোটোগ্রাফারদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে শুরু করে দিয়েছি। তবে জায়গা এখনও নির্বাচন করিনি। সময় নিয়ে সেসব পরিকল্পনা করতে হবে।