কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
২০১৩ সালের ১০ নভেম্বর। সেদিনটার কথা মনে পড়লে এখনও শিউরে ওঠেন রেশমা বেওয়া। তাঁর স্বামী আলম শেখ সেদিন দুপুর ২টা৩০ নাগাদ বাগানে যান চারা কলম গাছে জল দিতে। তার ঘণ্টা দেড়েকের মধ্যেই বাড়িতে এসে দুঃসংবাদ দেন এলাকার এক বেগুন চাষি। এক গর্তে নিথর ভাবে পড়ে রয়েছেন আলম। তাঁর মাথায় ছিল কোপের চিহ্ন ও হাত পা ছিল ভাঙা। ধানতলা আমবাগানের তরুণীর দগ্ধ মৃতদেহ যেখান থেকে উদ্ধার করা হয়েছে তার কয়েক হাত দূরে একসময় ওই যুবকের মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছিল। সেঘটনায় খুনের অভিযোগ তোলে মৃতের পরিবার। যদিও সেই খুনের কিনারা এখনও পুলিস করতে পারেনি বলে দাবি করেন মৃতের স্ত্রী। সাত বছর পর একই জায়গায় তরুণীর রহস্যজনকভাবে পোড়া দেহ উদ্ধারের পর পুলিস কোনও কিনারায় না পৌঁছতে পারায় সাত বছর আগেকার খুনের অধরা দুষ্কৃতীদের নিয়ে ফের চর্চা শুরু হয়েছে। একই জায়গায় দুটি খুনের ঘটনা ঘটে যাওয়ায় এলাকায় দুষ্কৃতী মূলক কার্যকলাপ নিয়ে অনেকে উদ্বেগ রয়েছেন।
ইংলিশবাজার থানার আইসি অমলেন্দু বিশ্বাস বলেন, এরকম কোনও ঘটনা ঘটে থাকলে খতিয়ে দেখা হবে।
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, এলাকাটি দুষ্কৃতীদের আখড়া হয়ে যাওয়ায় এধরনের ঘটনা ঘটছে। পুলিস মূল অভিযুক্তদের ধারেকাছে পৌঁছতে পারছে না। পুলিস ও প্রশাসনের উপর থেকে ভরসা কমে যেতে শুরু করেছে। স্বামী হারানোর সাত বছর পরেও বিচার না পেয়ে রেশমা বেওয়ার আক্ষেপ রয়ে গিয়েছে।
এবিষয়ে রেশমা বেওয়া বলেন, স্বামীর মৃত্যু আমার কাছে দুঃস্বপ্ন। সেকথা মনে পড়লে গা শিউরে ওঠে। যেভাবে কষ্ট দিয়ে তাকে মারা হয়েছে, আমি এখনও ভুলতে পারিনি। ছেলেমেয়েকে বাড়িতে রেখে জল দিতে বেরিয়ে আর সে ফেরেনি। প্রথমে খবর পেয়ে আমি বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। পরে গিয়ে দেখি তার মৃতদেহ পড়ে আছে। সেটা যে খুনই ছিল সে বিষয়ে পুলিসকে জানিয়েছি। কিন্তু এখনও খুনি অধরা রয়ে গিয়েছে। ঠিক একই জায়গাতে আরও একটি ঘটনা ঘটল। আমাদের নিরাপত্তা কোথায়? এত দিন হয়ে গেল, প্রশাসন আমার পাশে দাঁড়ায়নি। মেয়ে বড় হয়েছে। আমি বাইরে কাজে যাচ্ছি। এখন যা পরিস্থিতি, আমাদের কোনও নিরাপত্তা নেই।
মৃতের দাদা সেলিম শেখ বলেন, আমাদের সঙ্গে কারও কোনও শত্রুতা ছিল না। এধরনের ঘটনা যে ঘটে যাবে তা আমরা ভাবতেই পারিনি। আগে এলাকা শান্ত ছিল। এখন দেখছি একের পর এক দুষ্কর্ম বেড়ে চলেছে। মানুষের কোনও নিরাপত্তা নেই। আমরা চাইছি ভাইয়ের খুনিদের পাশাপাশি ওই যুবতীর খুনিদেরও খুঁজে বের করে করে প্রশাসন শাস্তি দিক।
রেশমা বেওয়ার দুই মেয়ে এক ছেলে রয়েছে। স্বামীর মৃত্যুর পর থেকেই তিনি দিশাহারা। সরকারি কোনও সাহায্য জোটেনি। সংসারের হাল ধরতে তিনি একটি নার্সিংহোমে আয়ার কাজ করে সংসার চালান।