শরীর-স্বাস্থ্যের প্রতি নজর দেওয়া প্রয়োজন। কর্মক্ষেত্রে উন্নতির সম্ভাবনা। গুপ্ত শত্রুতার মোকাবিলায় সতর্কতা প্রয়োজন। উচ্চশিক্ষায় বিলম্বিত ... বিশদ
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার ইংলিশবাজার থানার কোতোয়ালি অঞ্চলের ধানতলা এলাকায় একটি আমবাগানে এক অজ্ঞাতপরিচয় মহিলার অর্ধদগ্ধ দেহ উদ্ধার করা হয়। বিষয়টি নিয়ে সঙ্গে সঙ্গে তদন্ত শুরু করে জেলা পুলিস। পুলিস সুপার অলোক রাজোরিয়া নিজেই ঘটনাস্থলে বেশ কয়েকবার গিয়েছেন। সম্প্রতি হায়দরাবাদে এক পশু চিকিৎসককে ধর্ষণ করে পুড়িয়ে মারা হয়। তারপরেই মালদহের ঘটনা ঘটায় প্রতিবাদে মুখর হয় বাম, কংগ্রেস, বিজেপির মতো দলগুলি। শনিবার তা থেকে রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে আসরে নেমে পড়ে বিজেপি।
এদিন মালদহে এসে প্রথমে জেলা বিজেপি ও মহিলা মোর্চা নেতৃত্বের সঙ্গে একপ্রস্ত আলোচনা সারেন লকেট। তারপরেই সদলবলে তিনি রওনা হয়ে যান ধানতলার দিকে। যে জায়গা থেকে দেহটি উদ্ধার হয়েছিল, সেখানেও যান এই বিজেপি সংসদ সদস্য। ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কিছুক্ষণ কথা বলার পরে তিনি দাবি করেন, পুলিস নিজের দায়িত্ব পালন করছে না। তাই আতঙ্কে রয়েছে স্থানীয় মহিলারা।
এরপরই মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে দলবল নিয়ে ঢুকে পড়েন রাজ্য মহিলা মোর্চার সভানেত্রী। সম্প্রতি হরিশ্চন্দ্রপুরে এক সাড়ে তিন বছরের নাবালিকার উপর যৌন নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। সেই নাবালিকা মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসাধীন। এদিন মেডিক্যাল কলেজে গিয়ে লকেট কথা বলেন ওই শিশুটির পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে। তারপরেই তিনি সটান চলে যান মেডিক্যালের সুপার ডাঃ অমিত দাঁ’র অফিসে। সঙ্গে ছিলেন বিজেপির জেলা সভাপতি গোবিন্দ মণ্ডল। নির্যাতিতা শিশুর এখনও রক্তপাত হচ্ছে বলে দাবি করে মেডিক্যাল সুপারের কাছে ওই মেয়েটির উপযুক্ত চিকিৎসার কথা বলেন বিজেপি নেতৃত্ব।
লকেট চট্টোপাধ্যায় দাবি করেন, ধানতলা কাণ্ড ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে পুলিস। নজর ঘোরানোর চেষ্টা হচ্ছে। ধানতলা কাণ্ড নিয়ে রাজ্য সরকার ও মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করে বিজেপি সংসদ সদস্য বলেন, তিনি হায়দরাবাদেরএনকাউন্টারের সমালোচনা করছেন। তা শুনে এরাজ্যের মহিলারা আতঙ্কিত। রাজ্যে মহিলারা নিরাপদ নয়। বিজেপি মালদহের ঘটনা নিয়ে রাজ্যজুড়ে আন্দোলন করবে।
মৌসম নুরের সমালোচনা করে লকেট বলেন, রাজ্য মহিলা কমিশনের ভাইস চেয়ারপার্সন একবারও হাসপাতালে ধর্ষিতা শিশুকে দেখতে যাননি। ধানতলাতেও যাননি। তিনি ভুলে গিয়েছেন, তৃণমূলের জেলা সভানেত্রী হলেও তিনি একজন নারী।
এপ্রসঙ্গে মৌসম নুর বলেন, কিছু কাজে কলকাতায় রয়েছি। মালদহে ফিরে সবখানেই যাব। বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশে প্রতিদিন মেয়েদের সুরক্ষা ভূলুণ্ঠিত হচ্ছে। তা থেকে চোখ সরাতেই মালদহের ঘটনা নিয়ে বিজেপি আন্দোলন করছে। পুলিসের উপর আমাদের আস্থা আছে। দোষীরা ধরা পড়বেই।
কথা ছিল ধানতলার ঘটনা নিয়ে এদিন ইংলিশবাজারে একটি প্রতিবাদ মিছিল করবে বিজেপি। সেই মতো মিছিল শুরু হয় বিজেপির জেলা কার্যালয় থেকে। মিছিল শেষ হতে না হতেই পুলিস কর্তাদের কার্যত হতভম্ব করে জেলা পুলিসের সদর কার্যালয়ে ঢুকে পড়েন বিজেপি নেত্রী ও তাঁর সঙ্গীরা। ছিলেন দুই বিজেপি বিধায়ক স্বাধীন সরকার ও জয়েল মুর্মুও। বিজেপির জেলা সভাপতি, দুই দলীয় বিধায়ক ও মহিলা মোর্চার বেশ কয়েক জন কর্মীকে নিয়ে অতিরিক্ত পুলিস সুপার অরিন্দম সরকারের ঘরে ঢুকে পড়েন লকেট চট্টোপাধ্যায়। সেখানে পুলিস সুপারের সঙ্গে দেখা করার দাবি তোলেন তিনি। অতিরিক্ত পুলিস সুপার জানান, পুলিস সুপার অলোক রাজোরিয়া তদন্তের কাজে বাইরে রয়েছেন। কিন্তু পুলিস সুপারের সঙ্গে দেখা করার দাবিতে অনড় লকেট ও তাঁর সঙ্গীরা দপ্তরের মধ্যেই তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেন অতিরিক্ত পুলিস সুপারকে। অন্যান্য পুলিস আধিকারিকরা পরিস্থিতি শান্ত করতে এগিয়ে এলে তাঁরাও এই বিজেপি নেত্রীর তোপের মুখে পড়েন।