বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা যার নেতৃত্বে সাফল্য এসেছে, দলের জেলা সভাপতি সেই কানাইয়ালাল আগরওয়াল নিজেই ইসলামপুর পুরসভার চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন। যদিও তিনটি পুরসভাতে দলের টিকিটে অতীতে তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতা দখল করতে পারেনি। তিন ক্ষেত্রেই পুরসভায় কংগ্রেসের টিকিটে জেতা সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যরা দলবদল করে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেওয়ায় তিনটি পুরসভা শাসকদলের দখলে চলে আসে। তবে এবারের পুর নির্বাচনে দলের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যদের জিতিয়ে পুরসভার ক্ষমতা দখল করাই শাসকদলের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ।
কানাইয়ালাল আগরওয়াল বলেন, উন্নয়নের কাজের নিরিখেই আগামী দিনে তিনটি পুরসভাই তৃণমূল কংগ্রেসের দখলে আসবে। যেকোনওদিন পুরভোট হলে তৃণমূল কংগ্রেস ভালো ফল করবে। এখন আমাদের লক্ষ্য পুরসভা নির্বাচন। তাই এখন থেকে সংগঠনকে মজবুত করা হবে। জানুয়ারি থেকে ডোর টু ডোর ক্যাম্পেনিং করা হবে।
বিগত লোকসভা নির্বাচনের প্রায় ৫৭ হাজার ভোটের ব্যবধানকে টপকে তৃণমূল কংগ্রেসের উপনির্বাচনে সাফল্য দলকে বাড়তি অক্সিজেন দিয়েছে। কালিয়াগঞ্জ আসনটি কংগ্রেসের দখল থেকে ছিনিয়ে নেওয়াই শুধু নয়, বিজেপির লোকসভার বিশাল মার্জিনকে টপকে এগিয়ে যাওয়াটা শাসকদলের নেতা-কর্মীদের মনোবল অনেকটাই মজবুত করে দিয়েছে। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে জেলার তিনটি পুরসভার নির্বাচনকে তৃণমূল কংগ্রেস সেমিফাইনাল হিসেবে ধরে নিয়ে এখন থেকেই ময়দানে ঝাপিয়েছে। মানুষের মতামত জেনে দলের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের সম্পর্কে খোঁজখবর নেওয়া শুরু হয়েছে। কার কি রকম ব্যক্তিগত ভাবমূর্তি, সব খুঁটিয়ে দেখছে দল। জনপ্রতিনিধিত্বের টিকিট এবার তাঁরাই পাবেন, যাঁদের স্বচ্ছ ভাবমূর্তি রয়েছে। তাই কারও সম্পর্কে খারাপ রিপোর্ট পেলে তিনি যে স্তরের নেতাই হোন না কেন, তাকে দল প্রার্থী করবে না।
দলের জেলা সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়াল বলেন, অনেক জনপ্রতিনিধির ব্যক্তিগত ভাবমূর্তি ভালো নয়। আমরা তাদের প্রার্থীই করব না। তিনটি পুরসভা একসময় কংগ্রেসের দখলে ছিল। পরবর্তীতে অধিকাংশ কাউন্সিলার তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেওয়ায় তিনটি পুর এলাকাতেই উন্নয়নের বহু কাজ হয়েছে। শহর এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে বাসিন্দারা তৃণমূল কংগ্রেসের হাতেই আগামীতে পুরসভা পরিচালনার দায়িত্বভার তুলে দেবেন। যাতে স্বচ্ছভাবে পুরসভার উন্নয়নের সেই কাজ করা যায়, সেজন্য ব্যক্তিগত ভাবমূর্তি যাচাই করে প্রার্থী করা হবে।
ডালখোলা পুরসভায় ১৬টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২০১৩ সালের পুরভোটে কংগ্রেস ১০টি, বামেরা চারটি ও তৃণমূল কংগ্রেস দু’টি আসনে জয়ী হয়েছিল। ২০১৪ সালে কংগ্রেসের ১০ জন ও বামেদের দু’জন কাউন্সিলার তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেওয়ায় পুরবোর্ডে তৃণমূলের সদস্য সংখ্য বেড়ে দাঁড়ায় ১৪ জন। গত ২৩ অক্টোবর থেকে এই পুরসভায় প্রশাসক বসেছে। পুরসভার বিদায়ী চেয়ারম্যান সুভাষ গোস্বামী বলেন, ডালখোলা পুরসভায় যে কোনওদিন ভোট হলে তৃণমূল কংগ্রেস এককভাবে ক্ষমতা দখল করবে। কালিয়াগঞ্জ পুরসভায় ২০১৫ সালে পুরভোটে ১৭টি আসনের মধ্যে ১৫টিতে কংগ্রেস, একটিতে সিপিএম ও একটিতে বিজেপি জয়লাভ করে। পরবর্তীতে ১৩জন কংগ্রেস কাউন্সিলার তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেওয়ায় পুরসভার ক্ষমতা দখল করে তৃণমূল। ২০১৫ সালের পুরসভা নির্বাচনে ইসলামপুর পুরসভার ১৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে কংগ্রেস ১০টি, তৃণমূল কংগ্রেস তিনটি, বিজেপি তিনটি, নির্দল প্রার্থী একটি আসনে জয়ী হয়েছিলেন। পরবর্তীতে কানাইয়াবাবুর নেতৃত্বে কংগ্রেসের ১০জন কাউন্সিলার তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেওয়ায় ওই পুরসভাও শাসকদলের দখলে চলে আসে। তবে বিরোধীদের দলে টেনে নয়, দলীয় প্রতীকে জেতা জনপ্রতিনিধিদের দিয়ে তিনটি পুরসভার ক্ষমতা দখল করাই রাজ্যের শাসকদলের নেতৃত্বের কাছে এখন বড় চ্যালেঞ্জ।