শরীর-স্বাস্থ্যের প্রতি নজর দেওয়া প্রয়োজন। কর্মক্ষেত্রে উন্নতির সম্ভাবনা। গুপ্ত শত্রুতার মোকাবিলায় সতর্কতা প্রয়োজন। উচ্চশিক্ষায় বিলম্বিত ... বিশদ
তবে এদিনের বৈঠক নিয়ে আধিকারিকরা সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খুলতে চাননি। ভারতীয় প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে থাকা মালদহের জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্র বলেন, অন্যান্য সমস্যার সঙ্গে দুই দেশের সীমান্তে নদী ভাঙন নিয়ে এদিন আলোচনা হয়েছে। এদিনের বৈঠকে আলোচিত বিষয় নিয়ে দু-একদিনের মধ্যে আমরা একটি রিপোর্ট তৈরি করব। তা উপরমহলে পাঠানো হবে। তার আগে বিস্তারিত বলা সম্ভব নয়। বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে থাকা জয়পুরহাটের জেলাশাসক মহম্মদ জাকির হোসেন বলেন, এদিনের বৈঠকে সীমান্তবর্তী জেলাগুলির দ্বিপাক্ষিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকের রেজোলিউশন সরকারের কাছে জমা দেব। সরকার এব্যাপারে যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার নেবে।
প্রসঙ্গত, এদিন বৈঠকে মূলত উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলাগুলির আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে মালদহ ছাড়াও এরাজ্যের কোচবিহার, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর, দার্জিলিং এবং জলপাইগুড়ি জেলার পুলিস ও প্রশাসনের আধিকারিকরা যোগ দেন। অন্যদিকে, বাংলাদেশের চাঁপাই নবাবগঞ্জ, নোয়াগাঁও, জয়পুরহাট, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, নীলফামারি, লালমণির হাট এবং কুড়িগ্রাম জেলার প্রশাসন ও পুলিসের আধিকারিকরা বৈঠকে অংশ নেন। ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) এবং বাংলাদেশের বর্ডার গার্ডের (বিজিবি) আধিকারিকরাও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে। ওই সীমান্তের একটা বড় অংশ এরাজ্যের সঙ্গে রয়েছে। স্থল সীমান্তের পাশাপাশি দীর্ঘ জল সীমান্তও রয়েছে। দুই দেশের মধ্য দিয়ে একাদিক নদী বয়ে গিয়েছে। বেশিরভাগ নদী পশ্চিমবঙ্গের উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার পর বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। ওইসব নদীগুলির মধ্যে গঙ্গা ও মহানন্দা অন্যতম। মহানন্দা ও টাঙন নদী মালদহের হবিবপুর এলাকায় দুই দেশের সীমানা হয়ে বয়ে গিয়েছে। দুই দেশের উত্তর প্রান্তের জেলাগুলিতে একাধিক খরস্রোতা নদী-নালাও একইভাবে প্রবাহিত হয়েছে। ওইসব নদীর স্রোতে ভাঙন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। যার জেরে সীমান্ত সরে যায়। ফলে সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) এবং বাংলাদেশের বর্ডার গার্ডের (বিজিবি) জওয়ানদের সমস্যা হয়।
এদিনের বৈঠকে অংশ নেওয়া জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, নদীর এক পাড়ে ক্ষয় এবং অন্য পাড়ে সঞ্চয় হয়। ফলে একদিকের জমি ভাঙনের গ্রাসে চলে যায়। অন্যদিকে, নতুন নতুন চর জেগে ওঠে। বহু জায়গায় নদীর প্রবাহ দুই দেশকে ভাগ করেছে। ফলে সেখানে সীমানা ক্রমশ একদিক থেকে অন্যদিকে সরে সরে যাচ্ছে। বিষয়টি এদিনের আলোচনায় ওঠে। বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য দুই দেশের আধিকারিকরা প্রস্তাব গ্রহণ করেন। সীমান্তে মাপজোখ করার ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জমা দেওয়া হবে। সীমান্ত মাপার জন্য বিশেষ বিভাগ রয়েছে। বিদেশ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সবুজ সঙ্কেত পেলে তারা ওই কাজ করবে। ওই আধিকারিক আরও বলেন, এদিনের বৈঠকে মাদকের পাশাপাশি জাল নোট ও গোরু পাচারের বিষয়টিও ওঠে। বাংলাদেশের পুলিস সুপাররা গোরু পাচার নিয়ে এদেশের দিকে আঙুল তোলেন। ওইসময় এদেশের পুলিস সুপাররা পাল্টা জাল নোটের বিষয়টি উত্থাপন করেন। সেইসঙ্গে এদিন দু’দেশের মধ্যে বন্দি প্রত্যার্পন নিয়েও আলোচনা করা হয়। এদিন সামগ্রিকভাবে সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশেই আলোচনা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।