সংবাদদাতা, মালদহ: ইংলিশবাজার পুরসভার তিনটি ওয়ার্ডের নিকাশি সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। সরাতে হতে পারে কয়েকটি পরিবারকেও। তবে এই স্থানান্তর অস্থায়ীভাবে হবে, নাকি ওই পরিবারগুলিকে বিকল্প জায়গায় পাকাপাকিভাবে স্থানান্তরিত করা হবে, তা নিয়ে এখনই কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয়নি।
তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভানেত্রী মৌসম নুরের সঙ্গে জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্র ও ইংলিশবাজার পুরসভার চেয়ারম্যান নীহার ঘোষ বিষয়টি নিয়ে বুধবারই বৈঠক করেছিলেন। এরপর জেলাশাসক ও পুরসভার চেয়ারম্যান যৌথভাবে বৃহস্পতিবার রেল কর্তাদের সঙ্গে নিয়ে মালদহ টাউন স্টেশন সংলগ্ন এলাকার নিকাশি ব্যবস্থা ও অন্যান্য সমস্যা খতিয়ে দেখেন। মালদহ টাউন স্টেশনের ম্যানেজার দিলীপ চৌহানও এদিন তাঁদের সঙ্গে ছিলেন।
জেলাশাসক বলেন, আমরা নিকাশি সমস্যার স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে এদিন সংশ্লিষ্ট কিছু এলাকায় পরিদর্শন করেছি। রেলের কয়েকজন আধিকারিকের সঙ্গেও কথা হয়েছে। তাঁরা এদিন আমাদের সঙ্গেই ছিলেন। সব দিক বিবেচনা করেই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে।
রেল ও পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরসভা ও রেলের ইঞ্জিনিয়াররা রবিবার যৌথভাবে নিকাশি সমস্যার সমাধানের সূত্রগুলি নিয়ে আলোচনা করবেন। রেলের ও ওই এলাকাগুলির নিকাশি জল কীভাবে একটি নালার মধ্যে দিয়ে রথবাড়ি এলাকা পর্যন্ত এনে তা নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলা যায়, তা নিয়ে দুই পক্ষের ইঞ্জিনিয়ারদের মধ্যে আলোচনা হবে বলে জানা গিয়েছে।
পুরসভার ২৩, ২৬ ও ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের নিকাশি সমস্যার স্থায়ী সমাধানের উদ্দেশ্যে কয়েকটি পরিবারকে স্থানান্তরিত করার প্রয়োজন হতে পারে বলে ইঞ্জিনিয়ারদের সূত্রে জানা গিয়েছে। তবে এই স্থানান্তরকরণ সাময়িক নাকি স্থায়ীভাবে করতে হবে, তা জানা যায়নি।
ইংলিশবাজার পুরসভার চেয়ারম্যান বলেন, এই বিষয়টি নিয়ে এখনই মন্তব্য করার সময় আসেনি। দুই তরফের ইঞ্জিনিয়াররাই যৌথ আলোচনা করবেন। তার পরে এই বিষয়ে মতামত দিতে পারবেন তাঁরা। যে গভীর নালা বা নর্দমার মাধ্যমে তিনটি ওয়ার্ড ও রেলের বর্জ্য জল বের করা হবে, তা কতটা গভীর হবে এবং সেটিকে রথবাড়ি এলাকা পর্যন্ত নিয়ে যেতে গেলে কোথায় কোথায় বাঁক নেওয়া হতে পারে, তা নিয়ে ইঞ্জিনিয়াররা আলাপ আলোচনা চালাবেন বলে নীহারবাবু জানিয়েছেন।
নিকাশি সমস্যার জন্য এদিনও রেলের ঘাড়েই মূলত দায় চাপিয়েছেন চেয়ারম্যান। ইংলিশবাজার পুরসভার চেয়ারম্যান নীহাররঞ্জন ঘোষের দাবি, রেলের দায়িত্বে থাকা নিকাশি ব্যবস্থার সংস্কারের অভাবেই পুরসভার কয়েকটি ওয়ার্ডে জল জমে থাকছে। ভোগান্তি হচ্ছে বাসিন্দাদের। সমস্যা সমাধানের জন্য সব রকম চেষ্টা চলছে।
এদিনের পরিদর্শন নিয়ে সরাসরি মন্তব্য করতে না চাইলেও মালদহ রেল ডিভিশনের এক গুরুত্বপূর্ণ আধিকারিক বলেন, রেলকে একতরফাভাবে দায়ী করা উচিত নয়। আমাদেরও কিছু বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তবে সমস্যা সমাধানের জন্য একটি সার্বিক উদ্যোগ যখন প্রশাসন ও স্থানীয় পুরসভা নিয়েছে, তখন রেল কোনও রকম প্রতিবন্ধকতা তৈরি করবে না। বরং নিকাশি সমস্যা মেটাতে যথাসম্ভব সাহায্যই করা হবে বলেও জানিয়েছেন ওই রেল কর্তা।