অতিরিক্ত পরিশ্রমে শারীরিক ক্লান্তি। প্রিয়জনের বিপদগামিতায় অশান্তি ও মানহানির আশঙ্কা। সাংসারিক ক্ষেত্রে মতানৈক্য এড়িয়ে চলা ... বিশদ
উপাচার্য বলেন, বেতন না হওয়ায় তাঁদের চরম অসুবিধার মধ্যে পড়তে হয়েছে বলে কয়েকজন অধ্যাপক আমাকে ফোনে জানিয়েছিলেন। সেই মতো আমি ফিনান্স অফিসারকে ই-মেইল মারফত প্রয়োজনীয় নির্দেশিকা পাঠিয়েছিলাম। তার প্রত্যুত্তরে ফিনান্স অফিসার লোকবলের ঘাটতির কথা আমাকে জানান। বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভলপমেন্ট অফিসার এবং পরীক্ষা নিয়ামক নিজের নিজের দপ্তরের কাজ নিজেরাই চালাচ্ছেন। ওইরকমভাবে ফিনান্স অফিসারও বেতন সংক্রান্ত কাগজপত্র তৈরি করতে পারেন। রেজিস্ট্রার বর্তমানে অসুস্থ। রেজিস্ট্রার বেতনের কাগজপত্র তৈরি করেন না। তিনি শুধু চেক ও স্যালারি স্টেটমেন্টে সই করেন। ফলে বেতন সংক্রান্ত নথিপত্র ফিনান্স অফিসার তৈরি করে দিলেই রেজিস্ট্রার তাতে সই করে দেবেন।
রেজিস্ট্রার বিপ্লব গিরি বলেন, আমি ও ফিনান্স অফিসার উপাচার্যের আওতায় কর্মরত। ফলে আমরা সর্বদা উপাচার্যের নির্দেশ মানতে বাধ্য। ফিনান্স অফিসারের মত আমিও রেজিস্ট্রারের অতিরিক্ত দায়িত্ব সামলাচ্ছি। ফলে তিনি আমার নির্দেশ পালন করতে বাধ্য নন। তাই এদিন উপাচার্যই তাঁকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়েছেন।
ফিনান্স অফিসার বলেন, বেতন সংক্রান্ত কাগজপত্র তৈরির ব্যাপারে চারজন অশিক্ষক কর্মী আমাকে সহযোগিতা করেন। ওই চারজন কর্মবিরতিতে অংশ নিয়েছেন। ফলে কর্মীর অভাবে আমি কাগজপত্র তৈরি করতে পারছি না। আমি এক সপ্তাহ আগে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছি। কিন্তু সেই পদত্যাগপত্র এখনও উপাচার্য গ্রহণ করেননি। ফলে আমিই এখনও ফিনান্স অফিসার হিসেবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। তবে নিজের চেম্বার এদিনও আমি বসিনি। অ্যাকাউন্টস অফিসারের ঘরে বসে অফিস করছি। আমি প্রতিদিন বিশ্ববিদ্যালয়ে আসছি। বেতন না হওয়ায় অন্যান্যদের সঙ্গে আমিও সমস্যায় পড়েছি। ফলে দ্রুত অচলাবস্থা কেটে যাক, তা অমিও চাইছি। কর্মীরা কাজ শুরু করলেই বেতন হয়ে যাবে। পুরো বিষয়টি উপাচার্যকে জানিয়ে দিয়েছি।
উল্লেখ্য, গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জেরবার। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মী থেকে উচ্চপদস্থ আধিকারিক দুই ভাগে বিভক্ত। বিশ্ববিদ্যালের রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি বাসা বেঁধেছে বলে অভিযোগ। ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা বসানো থেকে অনুষ্ঠানের প্যান্ডেল টাঙানো, সবেতেই দুর্নীতি ও স্বজনপোষণের অভিযোগ বারবার অভিযোগ উঠেছে। ল্যাবরেটরি থেকে রাসায়নিক চুরির মতো ঘটনাও ঘটেছে। বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন নিয়েও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। ফলে ওই বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে মালদহের শিক্ষাবিদরা বিরক্ত হয়ে রয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপক বলেন, গৌড়বঙ্গে নিয়মিত উপাচার্য ও ছাত্রছাত্রীরা ক্যাম্পাস ছাড়েন। কিন্তু দুর্নীতিগ্রস্তরা বছরের পর বছর বিশ্ববিদ্যালয়ে মৌরসিপাট্টা জমিয়ে রাখেন। উপাচার্যকে তোষামোদ করে আখের গোছানোটা তাঁদের ধ্যানজ্ঞান। তাঁরা কাজের থেকে তৈলমর্দনকে বেশি প্রাধান্য দেন। ফলে দুর্নীতিবাজদের শিকড় কোনও আমলেই উপড়ে ফেলা সম্ভব হয় না। গত কয়েকবছরের হিসেবনিকেশ ও নিয়োগ নিয়ে নিরপেক্ষ তদন্ত হলেই সবকিছু প্রকাশ্যে আসবে।