অতিরিক্ত পরিশ্রমে শারীরিক ক্লান্তি। প্রিয়জনের বিপদগামিতায় অশান্তি ও মানহানির আশঙ্কা। সাংসারিক ক্ষেত্রে মতানৈক্য এড়িয়ে চলা ... বিশদ
অ্যাম্বুলেন্স চালক সুধাদেবী বলেন, ২০১৬ সালে মাঝিয়ালি সংঘ থেকে অ্যাম্বুলেন্স চালানোর ট্রেনিং নিই। ২০১৮ সালে হেমতাবাদে একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমার হাতে অ্যাম্বুলেন্সের চাবি তুলে দেন। এর পরেই প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকার প্রলোভন দেখিয়ে ওই দম্পতি নগদ এক লক্ষ টাকা নেয়। কিন্তু আজ পর্যন্ত বেতন পাইনি। ফলে বহুবার টাকা ফেরত চেয়েছি। টাকা ফেরত চাইলেই অ্যাম্বুলেন্স ফেরত নেওয়ার ভয় দেখায়। বিষয়টি আমি বিধায়ককেও জানিয়েছিলাম। দিদিকে বলোতে ফোন করেও জানিয়েছি। এই ঘটনা জানাজানি হতেই আমাকে বিভিন্ন ভাবে চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে। ফলে থানায় এনিয়ে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছি।
চোপড়া পঞ্চায়েত সমিতির খাদ্য কর্মাধক্ষ তথা মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের চোপড়া ব্লক সভাপতি এবং মাঝিয়ালি সংঘের সভানেত্রী, আসমত আরা বেগম বলেন, মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে। সুধাদেবীর পিছনে লোক আছে, তারা এটা করাচ্ছে। আমাকে ও আমার স্বামীর বদনাম করার জন্য বিরোধীরা উঠে পড়ে লেগেছে। অ্যাম্বুলেন্সটি মাঝিয়ালি সংঘের। সুধা ওই গাড়িটির তালা ভেঙে নিয়ে গিয়েছে। এনিয়ে আমরা পুলিসের কাছে অভিযোগ করেছি। ব্লক কোর কমিটির সদস্য এক্রামুল হক বলেন, আমি সরকারি কোনও প্রতিনিধি বা জনপ্রতিনিধি নই। টাকা নেওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই। আমাদের বদনাম করার জন্য এসব করা হচ্ছে।
চোপড়ার বিধায়ক তৃণমূলের হামিদুল রহমান বলেন, বিষয়টি অনেক দিন আগে থেকেই শুনেছি। আমরা দলের পক্ষ থেকে বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। ইসলামপুর পুলিস জেলার এসপি সচিন মক্কর বলেন, অভিযোগ হয়েছে। বিষয়টি দেখা হচ্ছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মিশন মাতৃকা-১০০ কর্মসূচিতে উত্তর দিনাজপুর জেলার সীমান্তবর্তী এলাকার উন্নয়নে বিএডিপি ফান্ড থেকে মহিলা স্বনির্ভর দলের সদস্যদের নিয়ে গঠিত মাঝিয়ালি সংঘকে জেলা প্রশাসনের তরফে একটি নিশ্চয়যান (অ্যাম্বুলেন্স) দেওয়া হয়। এজন্য আগে থেকেই প্রশাসন উদ্যোগ নিয়ে জেলার বিভিন্ন এলাকার মহিলাদের গাড়ি চালানোর প্রশিক্ষণ দিয়েছিল। সংঘের সিদ্ধান্ত অনুসারে সুধাদেবী ওই অ্যাম্বুলেন্স চালক নিযুক্ত হন। কিন্তু তিনি কোনও বেতন পাচ্ছেন না। প্রসূতিদের হাসপাতালে নিয়ে আসার জন্য নির্দষ্ট ভাউচারে বিল পান। কিন্তু কিছুদিন থেকে সংঘের সঙ্গে সুধাদেবীর সম্পর্ক ভালো যাচ্ছে না। তারপর এবার স্থানীয় প্রভাবশালী নেতা-নেত্রীর বিরুদ্ধে কাটমানির অভিযোগ তোলায় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
রাজনৈতিক মহলের আলোচনা, কাটমানি ইস্যুতে জেলার বিভিন্ন এলাকায় শাসক দলের নেতা-নেত্রী জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ এর আগে উঠেছে। কিন্তু কিছুদিন থেকে এই ধরনের ঘটনা সামনে আসেনি। কয়েকদিন আগে সুধাদেবী কাটমানির অভিযোগ তুলে একটি ভিডিও বার্তা সোশ্যাল মিডিয়াতে ভাইরাল করেন। ৪ ডিসেম্বর এনিয়ে পুলিসের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন।