অতিরিক্ত পরিশ্রমে শারীরিক ক্লান্তি। প্রিয়জনের বিপদগামিতায় অশান্তি ও মানহানির আশঙ্কা। সাংসারিক ক্ষেত্রে মতানৈক্য এড়িয়ে চলা ... বিশদ
বিএসএনএল সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলা প্রাক্তন সৈনিক সঙ্ঘের ব্যানারে চলা এই আন্দোলনের কথা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানোর পরেও কোনও সবুজ সংকেত মেলেনি। বরং বিএসএনএলের গ্রুপ-ডি এবং গ্রুপ-সি কর্মীদের প্রয়োজনে কাজ করানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে এই আন্দোলনের জেরে দপ্তরের কাজকর্ম শিকেয় উঠেছে। আন্দোলনকারীরা দপ্তরের গেটের মুখে অবস্থান আন্দোলন চালানোয় টেলিকম ডিস্ট্রিক্ট ম্যানেজার সহ কোনও কর্মীই দপ্তরে ঢুকতে পারছেন না।
জেলা প্রাক্তন সৈনিক সঙ্ঘের সম্পাদক তপন চৌধুরী বলেন, আমাদের ৬৯ জন অস্থায়ী নিরাপত্তাকর্মীকে বিএসএনএল ছাঁটাই করেছে। আমরা ১৯৯৯ সালে এখানে কাজে যোগ দিয়েছিলাম। আমাদের সঙ্গে সেসময়ে কর্তৃপক্ষের চুক্তি ছিল ৬০ বছর পর্যন্ত কাজ করব। কিন্তু আমরা সেই বয়সে পৌঁছনর আগেই ছাঁটাই করা হয়েছে। প্রতিমাসে আমাদের পিএফ কাটা হয়। কিন্তু সাত মাস ধরে আমরা মজুরি পাচ্ছি না। এই পরিস্থিতিতে আমাদের সঙ্গে কেউ আলোচনায় বসছে না। সেজন্যই আমরা পথসভা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। কিন্তু পুলিসের অনুমতি মেলেনি।
বিএসএনএলের কোচবিহারের ডিস্ট্রিক্ট টেলিকম ম্যানেজার দীপালি রায় বলেন, ওঁদের আন্দোলন নিয়ে আমরা দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেছি। তাঁরা দিল্লির সঙ্গে কথা বলেছেন। কিন্তু সেখান থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে আগের সিদ্ধান্ত জানিয়ে যে চিঠি পাঠানো হয়েছিল তার কোনও পরিবর্তন করা যাবে না। আমাদের যে গ্রুপ-ডি এবং গ্রুপ-সি কর্মীরা রয়েছেন তাঁদের দিয়ে ওঁদের জায়গায় কাজ করাতে হবে। কিন্তু আমরা দীর্ঘদিন ধরে অফিসেই ঢুকতে পারছি না। এরফলে বিভিন্ন প্রশাসনিক কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
কোচবিহারের সাগরদিঘির পাড়ে বিএসএনএল অফিসের সামনে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন অস্থায়ী ওই নিরাপত্তাকর্মীরা। তাঁদের দাবি, ১৯৯৯ সালে মোট ৮৭ জন অস্থায়ী নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে কাজে এখানে যোগ দিয়েছিলেন। এঁরা সকলেই প্রাক্তন সৈনিক। বিভিন্ন সময়ে এঁদের মধ্যে কয়েকজনের মৃত্যু হয়। কয়েকজন ৬০ বছর বয়সে পৌঁছে অবসর গ্রহণ করেন। এরপর থেকে এখানে মোট ৬৯ জন প্রাক্তন সৈনিক অস্থায়ী নিরাপত্তাকর্মীর পদে কাজ করছিলেন। তাঁদেরই ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছিল গত ১৮ অক্টোবর। এরপর ২৪ অক্টোবর থেকে তাঁরা আন্দোলনে শামিল হন। তাঁদের এই আন্দোলনের ফলে বিএসএনএলের প্রশাসনিক ভবনের কাস্টমার কেয়ার সেন্টারের কাজ ওই সময় থেকে বন্ধ হয়ে রয়েছে। এর ফলে গ্রাহকরা নিয়মিত হয়রানির শিকার হচ্ছেন। সিম বদলানো বা মোবাইলের বিল জমা দেওয়ার কাজ করা যাচ্ছে না। পাশাপাশি দপ্তরের কর্মীদের বেতন, ইনক্রিমেন্ট, মেডিক্যাল, ভিআরএস নেওয়া সংক্রান্ত নানা অফিসিয়াল কাজ বন্ধ হয়ে রয়েছে। কর্মীদের সার্ভিস বুকের কাজ করতেও সমস্যা হচ্ছে। কর্তৃপক্ষের আশঙ্কা, এমনটা চলতে থাকলে অচিরেই মোবাইল, ল্যান্ডলাইন ফোন পরিষেবাতেও প্রভাব পড়বে। এদিকে, আন্দোলনকারীদের দাবি, দপ্তরের সামনে এতদিন ধরে অবস্থান চললেও তারা সমস্যার সুরাহা করতে পদক্ষেপ নেয়নি। এমন অবস্থায় তাঁরা আন্দোলনের ঝাঁঝ বাড়াতে তাঁদের কর্মসূচিতে রাজনৈতিক দলগুলিকে আহ্বান জানিয়ে পথসভা করার উদ্যোগ নিয়েছে।