দীর্ঘদিনের পরিশ্রমের সুফল আশা করতে পারেন। শেয়ার বা ফাটকায় চিন্তা করে বিনিয়োগ করুন। ব্যবসায় ... বিশদ
বিপ্লববাবু বলেন, অশিক্ষক কর্মীদের স্থায়ীকরণ সংক্রান্ত দাবির বিষয়টি আমি নিজের লেটার হেডে লিখে উচ্চ শিক্ষাদপ্তরের প্রধান সচিবের কাছে জমা দিয়েছি। বিষয়টি শিক্ষামন্ত্রীর দপ্তরেও জানিয়েছি। গত ২৩ নভেম্বর কলকাতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের এগজিকিউটিভ কাউন্সিলের জরুরি বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। ২৬ নভেম্বর আমি নিজে গিয়ে বিকাশ ভবনে দাবিপত্র জমা দিয়ে এসেছি। আসলে যেসব বিষয় আমাদের এক্তিয়ারে নেই তা নিয়ে অযথা আমাদেরকে ব্ল্যাকমেল করা হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়েরই একাংশ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। এতে আখেরে বিশ্ববিদ্যালয়েরই ক্ষতি হচ্ছে।
সারা বাংলা শিক্ষাবন্ধু সমিতির গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি শুভায়ু দাস বলেন, জরুরি পরিষেবা চালু রেখে আমরা কর্মবিরতি করছি। আমাদের দাবি ন্যায়সঙ্গত। বিশ্ববিদ্যালয়ের অচলাবস্থার জন্য ছাত্রছাত্রীদের একাংশ কর্তৃপক্ষকে দুষছেন। রেজিস্ট্রার আমাদের এড়িয়ে চলছেন। তিনি কলকাতা কী কারণে গিয়েছেন তা আমাদের জানা নেই।
প্রসঙ্গত, বছর দশেক আগে পথ চলা শুরু হলেও গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘চয়েস বেসড্ ক্রেডিট সিস্টেমের’ আওতায় পঠনপাঠন চালু হতে দেরি হয়। ২০১৮ সালে স্নাতকোত্তর স্তরে এবং ২০১৯ সালে স্নাতক স্তরে ওই পদ্ধতিতে পঠনপাঠন শুরু হয়। ফলে নতুন ব্যবস্থায় গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায় থাকা মালদহ, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরের ২৫ টি কলেজের প্রায় ৪৫ হাজার ছাত্র-ছাত্রী এবারই প্রথম পরীক্ষায় বসতে চলেছেন।
নতুন পদ্ধতি সুষ্ঠুভাবে রূপায়ণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের এক্সাম মনিটরিং কমিটি গত ছয় নভেম্বর বৈঠকে বসে। স্নাতকের প্রথম বর্ষের প্রথম সেমেস্টারের প্র্যাকটিক্যাল সহ সমস্ত বিষয়ের পরীক্ষা ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসের তৃতীয় সপ্তাহের মধ্যে শেষের সুপারিশ করা হয়। ঘণ্টা তিনেক ধরে চলা ওই বৈঠকে জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহ নাগাদ কলেজের পরীক্ষা শুরু করার জন্য বলা হয়। সেই অনুযায়ী, ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে অনলাইনে ছাত্রছাত্রীদের ফর্ম ফিল আপ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু এখনও পর্যন্ত ওই প্রক্রিয়া শুরুই করা যায়নি। কর্মবিরতির জেরে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরের বেশ কিছু বিষয়ের প্রশ্নপত্র তৈরি করা যাচ্ছে না। স্নাতকোত্তরের দ্বিতীয় সেমেস্টারের ফল প্রকাশিত হওয়ার পরেও বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ক্যাশ কাউন্টার’ বন্ধ থাকায় ছাত্রছাত্রীরা খাতা পুনর্মূল্যায়নের (রিভিউ) জন্য আবেদন করতে পারছেন না। পরীক্ষা নিয়ামকের দপ্তরে ২৫ জন অস্থায়ী অশিক্ষক কর্মী নিযুক্ত রয়েছেন। বাকিদের সঙ্গে ওই ২৫ জন টানা ১৩ দিন কাজ না করায় এই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। অবিলম্বে তাঁরা কাজ শুরু না করলে কয়েক হাজার ছাত্রছাত্রী অথৈ জলে পড়বেন। বর্তমানে পরীক্ষা নিয়ামককেই পিওন থেকে করণিক, সকলের কাজ করতে হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, অশিক্ষক কর্মী ও শিক্ষা দপ্তরের জাঁতাকলে পড়ে তিন জেলার বিপুল সংখ্যক ছাত্রছাত্রীর কেরিয়ার প্রশ্নের মুখে পড়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ামক বিশ্বরূপ সরকার বলেন, এক্সাম মনিটরিং কমিটির সুপারিশ কার্যকর করা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি দ্রুত উন্নতি হবে বলে আমরা আশাবাদী।
উল্লেখ্য, বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট ১২১ জন অস্থায়ী অশিক্ষক কর্মী রয়েছেন। পাশাপাশি স্থায়ী পদে রয়েছেন ১৬ জন। অস্থায়ী কর্মীদের মধ্যে ১১৮ জন চুক্তিভিত্তিতে এবং তিন জন দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে কাজ করছেন। বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে তাঁরা গত দুই সপ্তাহ ধরে কাজ বন্ধ রেখেছেন।