দীর্ঘদিনের পরিশ্রমের সুফল আশা করতে পারেন। শেয়ার বা ফাটকায় চিন্তা করে বিনিয়োগ করুন। ব্যবসায় ... বিশদ
জলপাইগুড়ি জেলা গ্রামীণ উন্নয়ন সেলের প্রজেক্ট ডিরেক্টর দেবাশিস চট্টোপাধ্যায় বলেন, ২৩ হাজার ৯৪০টি স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে ৬১৫ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হবে। দ্রুত স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে ঋণ দেওয়ার জন্য ব্লকে ব্লকে ক্রেডিট ক্যাম্প করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই ৩২০ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে।
গ্রামীণ এলাকার অর্থনীতি বিকাশের জন্য স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের স্বাবলম্বী করতে জোর দেওয়া হয়েছে। মহিলারা স্বনির্ভর গোষ্ঠী গঠনের পর ছ’মাস পরে ঋণের জন্য আবেদন করতে পারেন। সেই ঋণের টাকায় নিজেরা স্বাবলম্বী হতে ব্যবসা বা অন্যান্য কাজ করতে পারেন। ন্যূনতম ১০ জন বা সর্বোচ্চ ২০ জনের দল তৈরি করা যায়। সেই দলের সদস্যদের ন্যূনতম বয়স ১৮ হতে হবে। দল তৈরি করার পর রেজ্যুলেশন করে গোষ্ঠীর কাজকর্ম পরিচালনা করতে হবে। জেলা গ্রামীণ উন্নয়ন সেলে গোষ্ঠীর নাম নথিভুক্ত হওয়ার তিন মাস পর কিছু টাকা ঋণ দেয় জেলা প্রশাসন। সেই টাকায় নিজের আর্থিক উন্নতির ছ’মাস পরে নিকটবর্তী ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ পাওয়ার জন্য দলটি উপযুক্ত হয়। প্রাথমিকভাবে ছ’মাসের পুরনো গোষ্ঠীকে দেড় লক্ষ টাকা ঋণ দেওয়া হয়। ধাপে ধাপে আড়াই লক্ষ থেকে সাড়ে তিন লক্ষ টাকা ঋণ দেওয়া হয়। এই ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে স্বনির্ভর গোষ্ঠী রেজ্যুলেশন করার পরেই নিকটবর্তী রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কাছে আবেদন করলেই ঋণ পেয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই ব্যাঙ্কের বিরুদ্ধে দীর্ঘসূত্রিতার অভিযোগ উঠে। তাই ঋণ দেওয়ার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে ক্রেডিট ক্যাম্প করছে জেলা প্রসাশন। প্রতিটি ব্লকেই ক্যাম্প করা হচ্ছে। আগ্রহী স্বনির্ভর গোষ্ঠীরা ওই ক্যাম্পে এসে উপস্থিত হয়ে ঋণের জন্য আবেদন করতে পারছে।
জেলার লিড ব্যাঙ্কের ম্যানেজার, নাবার্ডের প্রতিনিধি, ব্লকের ব্যাঙ্ক ম্যানেজাররা, ব্লক প্রশাসনের কর্তা, গ্রামীণ উন্নয়ন সেলের কর্মকর্তারা ক্যাম্পগুলিতে উপস্থিত থাকেন। জলপাইগুড়ি জেলায় গত ২১ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর এবং ১৮ নভেম্বর থেকে ২৬ নভেম্বর ক্রেডিট ক্যাম্প করা হয়েছে। ডিসেম্বরেও ক্রেডিট ক্যাম্প করা হবে। জেলায় ২৩ হাজার ৯৪০টি স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে ঋণ দেওয়া হবে। ১৩ হাজার ২০টি স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে ইতিমধ্যেই ঋণ দেওয়া হয়েছে। ২৬ নভেম্বর পর্যন্ত ৫০৯৭টি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর আবেদন বাকি রয়েছে। বাকি গোষ্ঠীগুলিকে পরবর্তীতে ক্যাম্প করে ঋণ প্রদান করার ব্যবস্থা করা হবে।
জেলায় ধুপগুড়ির ৬৩০৭টি স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে ১৬ কোটি, মেটেলির ১৫৭২ স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে ৪৩ কোটি, মাল ব্লকের ৩২৩১টি স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে ৮০ কোটি টাকা, ময়নাগুড়ির ৪৩০৭ স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে ১০৯ কোটি, নাগরাকাটার ১২৩৯টি স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে ২৯ কোটি, রাজগঞ্জের ৩৪৫৫টি স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে ৯৩ কোটি, সদর ব্লকের ৩৮২৯টি স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে ৯৬ কোটি টাকা ঋণ দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে ধূপগুড়িতে ৩৬৬৭টি, মেটেলিতে ১০০৯টি, মাল ব্লকে ২০০৩টি, ময়নাগুড়িতে ২১১৮টি, নাগরাকাটায় ৬৪১টি, রাজগঞ্জে ১৯৯৯টি, সদর ব্লকে ১৫৯২টি স্বনির্ভর গোষ্ঠী ঋণ পেয়েছে। বর্তমানে ধূপগুড়িতে ৮৬.৮১, মেটেলিতে ৭১.৫৬, মাল ব্লকে ৮৯.৫১, ময়নাগুড়িতে ৬৩.৯৯, নাগরাকাটায় ৭৬.২৭, রাজগঞ্জে ৬৮.৩১, সদর ব্লকে ৬৭.২০ শতাংশ স্বনির্ভর গোষ্ঠীর আবেদন জমা পড়েছে। রাজগঞ্জ, মাল, ধূপগুড়ি, ময়নাগুড়ি এই চারটি ব্লক ন্যাশনাল রুরাল ইকনোমিক ট্রান্সফর্মেশন প্রজেক্টের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এই ব্লকগুলির স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে উৎপাদনশীল গ্রুপে পরিণত করার চেষ্টা চলছে।