রাজনীতিক ও পেশাদারদের ব্যস্ততা বাড়বে। বয়স্করা শরীর স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিন। ধনযোগ আছে। ... বিশদ
কোচবিহারের রাসমেলায় ভেটাগুড়ির জিলিপি, ভাপাপিঠে, ইডলি-ধোসা সহ চাট, ফুচকার চাহিদা থাকলেও দেদার বিক্রি হচ্ছে বেনারসি পান। কখনও কখনও পান কেনার জন্য রীতিমতো লাইন দিয়ে অপেক্ষা করতে হচ্ছে। যে বাঙালি দম্পতি এই বেনারসি পানের দোকান দিয়েছেন তাঁদের পোশাকও রাজা রানির মতো। ঝকমকে পাগড়ি পরে তাঁরা বেনারসি পান বিক্রি করছেন। দেশের বিভিন্ন মেলায় ঘুরে বেনারসি পান বিক্রি করাই গোপালচন্দ্র সাহা ও সান্ত্বনা সাহার পেশা।
গোপালবাবু কোচবিহারেরই তুফাগঞ্জের মানুষ। কিন্তু, ছোটবেলায় তিনি বেনারসে তাঁর কাকার কাছে চলে গিয়েছিলেন। তাঁর কাকারও বেনারসি পানের দোকান ছিল। সেখান থেকেই তিনি এই পান বানানো শিখেছেন। দীর্ঘ ১২ বছর ধরে মেলায় মেলায় এই বেনারসি পান বিক্রি করাই এখন তাঁর পেশা হয়েছে।
গোপালবাবু বলেন, আমি বেনারসে থেকেই বড় হয়েছি। তাই হিন্দিতেই আমি সড়গড়। ভাঙা ভাঙা বাংলায় বলেন, আমার বেনারসি পানের দোকানে বহু ধরনের মশলা রয়েছে। হরেক রকমের পান বানানোর উপকরণ আমি সঙ্গে রাখি। কাকা পানের ব্যবসা করতেন। ওঁর হাত ধরেই আমার এই পেশায় হাতেখড়ি। এখন মেলায় মেলায় স্ত্রীকে নিয়ে বেনারসি পান বিক্রি করি। একবার আমার হাতের তৈরি পান খেলে সকলেই দ্বিতীয়বার আসেন।
রাসমেলার শুরুর দিন থেকেই বেনারসি পানের দোকান জমে উঠেছে। এখানে ৩০ টাকা থেকে শুরু করে ৩০০ টাকা দামের পান পাওয়া যাচ্ছে। পানের নামও হরেকরকম। কোনওটি চকোলেট পান, কোনওটি রাবরি পান, সিঙ্গাপুরী পান, চুসকি পান ইত্যাদি। চকোলেট পানে থাকে চকোলেটের স্বাদ। রাবরি পানে এক ধরনের ফল দেওয়া হয়। চুসকি পানে থাকে বরফের কুচি। এই সব পানের দাম ৫০ থেকে ৬০ টাকা মধ্যে। এছাড়াও রয়েছে ফায়ার পান। যার দাম ৭০ টাকা। পান বানিয়ে সেটিতে আগুন ধরিয়ে তারপর ক্রেতাকে দেওয়া হয়। এরসঙ্গেই রয়েছে স্মোক পান। এর দাম ১১০ টাকা। এই পানের মধ্যে দিয়ে ধোঁয়া বের হয়। মুখে দেওয়ার পরেও ধোঁয়া বের হতে থাকে। এই সব পান খেতে বহু মানুষই রাসমেলায় বেনারসি পানের দোকানে সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ভিড় জমাচ্ছেন। অনেকে আবার দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে অবাক হয়ে হরেকরকম পান ও তার মশলার বাহার দেখছেন।
পানের পাতা বেনারস থেকে আনা হয়েছে। এখানে পাওয়া যায় ৩৬ রকমের জর্দা। যা দিয়ে বিভিন্নরকমের পান বানিয়ে ক্রেতাদের দেওয়া হয়। কস্তুরি এবং ৩৩০০ পাওয়ারের জর্দা দিয়ে যে পান এখানে তৈরি করা হয় সেটির দাম সর্বোচ্চ। ৩০০ টাকায় এই পান বিক্রি করা হয়। গোপালবাবু ও তাঁর স্ত্রী সান্তনাদেবী দু’জনের পান বানিয়ে বিক্রি করছেন। তাঁদের দাবি, মুখে পান গুঁজে ক্রেতারা যখন মুচকি হেসে প্রশংসা করেন তখনই পরম তৃপ্তি মেলে।