কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
প্রসঙ্গত, পুজোর আগে চাঁচলে মহানন্দা নদীতে নৌকাডুবিতে নয় জনের সলিল সমাধি হয়। অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহণের কারণে নৌকাটি ডুবে যায়। ওই ঘটনার পর জেলা প্রশাসনের তরফে একগুচ্ছ পদক্ষেপ করা হয়। চাঁচলে রাতে নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে। পর্যাপ্ত আলোর অভাবে যাত্রীরা সাঁতরে ঘাটে উঠতে পারেননি। ওই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে সূর্য ডোবার পর নৌ পরিবহণের উপর প্রশাসন নিষেধাজ্ঞা জারি করে। পাশাপাশি ঘাটে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করারও নির্দেশ দেওয়া হয়। সবচেয়ে বেশি জোর দেওয়া হয় যাত্রীদের লাইফ জ্যাকেট পরার বিষয়টির উপর। কারণ কোনও কারণে দুর্ঘটনা ঘটলেও লাইফ জ্যাকেটের সাহায্যে সাঁতার না জানা যাত্রীরা বেশ কিছুক্ষণ নদীর জলে ভেসে থাকতে পারবেন। ওই সময় আশপাশের লোকজন এবং অন্যান্য নৌকার মাঝিরা তাঁদের উদ্ধার করতে পারবেন। লাইফ জ্যাকেট না থাকলে নৌকা ডোবার কিছুক্ষণের মধ্যে সাঁতার না জানা থাকলে যাত্রীরা জলে তলিয়ে যান।
পুরাতন মালদহ ব্লকের মহানন্দা নদীর নিমাইসরা ঘাট জেলা পরিষদের আওতায় রয়েছে। দুর্গাপুজোর পর খোদ অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) অরুণকুমার রায় ঘাটে গিয়ে যাত্রী সুরক্ষার জন্য লাইফ জ্যাকেট সহ অন্যান্য সামগ্রী বিতরণ করেন। সেই ঘাটেই ফের লাইফ জ্যাকেট ছাড়া যাত্রী পরিবহণ হচ্ছে বলে অভিযোগ। অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহণ নিয়েও যাত্রীদের একাংশ সরব হয়েছেন। ওই ঘাট পুরাতন মালদহ এবং ইংলিশবাজার পুরসভার মধ্যে যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম। ফলে বহু মানুষ প্রতিদিন ওই ঘাট হয়ে জেলার দুই শহরে যাতায়াত করেন। কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে বহু মানুষের হতাহত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অবিলম্বে বিষয়টি প্রশাসনের দেখা উচিত বলে ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে।
ঘাটের মাঝি রাম মাহাত বলেন, আমরা নৌকায় লাইফ জ্যাকেট রেখেছি। যাত্রীদের ওই জ্যাকেট পরার জন্য বারবার বলা হয়। কিন্তু তাঁরা আমাদের কথা শোনেন না। এব্যাপারে আমাদের কোনও গাফিলতি নেই। অনেক সময় যাত্রীদের কেউ কেউ নেশাগ্রস্ত অবস্থায় থাকে। তাঁরা আমাদের পাত্তা দেয় না। অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহণের বিধি নিষেধের কথা বলার পরেও জোর করে তারা নৌকায় ওঠে।
মালদহের অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) বলেন, লাইফ জ্যাকেট ছাড়া যাত্রীদের নদী পারাপার করা যাবে না। এব্যাপারে আমরা নজরদারি শুরু করেছি। ঘাটগুলিতে সারপ্রাইজ ভিজিট করা হবে। মানুষের জীবন নিয়ে কোনও আপস করা যাবে না।
জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, নৌকায় যাত্রী তোলার ক্ষেত্রে এখনও কমিশন প্রথা চালু রয়েছে। ঘাট মালিকরা মাঝিদের কমিশনের ভিত্তিতে টাকা মেটান। ফলে মাঝিরা বেশি যাত্রী পরিবহণের চেষ্টা করেন। তা যাত্রীদের কাছে কাল হয়ে দাঁড়ায়। সারপ্রাইজ ভিজিট এবং মোটা অঙ্কের জরিমানা ছাড়া পরিস্থিতির কোনও পরিবর্তন সম্ভব নয়। জেলা সদর থেকে সবকিছু নজর রাখা সম্ভব নয়। বিডিও এবং পঞ্চায়েত প্রধানদের এব্যাপারে আরও সক্রিয় হতে হবে। পাশাপাশি যাত্রীদেরও এব্যাপারে সচেতন হতে হবে। কারণ কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে তাঁরাই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।