গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
আসন বিন্যাস অনুযায়ী, প্রশাসনিক বৈঠকের মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রী ও সরকারি আমলাদের সঙ্গে জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারের বসার কথা রয়েছে। জেলা পরিষদের সভাধিপতির পদ রাজ্যের রাষ্ট্রমন্ত্রীর সমতুল্য। প্রোটোকল অনুযায়ী, জেলাশাসক ও পুলিস সুপারের উপরে সভাধিপতি রয়েছেন। ফলে সভাধিপতির মঞ্চের নিচে বসা নিয়ে জেলা প্রশাসনের অন্দরে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সোমবার দিনভর মালদহ জেলা প্রশাসনের অন্দরে চর্চা হয়েছে।
এনিয়ে প্রশ্ন করা হলে সভাধিপতি বলেন, বৈঠকে আমাকে যেখানে বসতে দেওয়া হবে সেখানেই বসব। এব্যাপারে আমার কোনও ছুৎমার্গ নেই। এর বেশি কিছু বলব না।
মালদহের জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্র বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক সভায় কার আসন কোথায় থাকবে, তা আমি ঠিক করি না। তাই এব্যাপারে আমার কিছু বলার নেই।
জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের মতে, মুখ্যমন্ত্রীর সভা মঞ্চের আসন বিন্যাস সরকারের উপর মহলের কর্তারা ঠিক করেন। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে মঞ্চে কারা থাকবেন, তা আগে থেকেই স্থির হয়। ফলে সভাধিপতিকে মঞ্চে না রাখার বিষয়টি উপর মহল থেকেই ঠিক করা হয়েছে। গত লোকসভা নির্বাচনে এজেলায় শাসকদলের ফল খারাপ হয়। ওই ঘটনার পর থেকে মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলার নেতা-নেত্রীদের উপর খুব একটা প্রসন্ন নেই। দুর্গাপুজোর আগে ইংলিশবাজার ও পুরাতন মালদহ পুরসভায় অনাস্থা কাণ্ড নিয়েও দলনেত্রী বিরক্ত। অনাস্থা পর্বে জেলা নেতাদের একাংশের ভূমিকা সঠিক ছিল না বলে বিভিন্ন সূত্রে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে খবর পৌঁছয়। গৌরবাবুও জেলা তৃণমূলের অন্যতম নেতা। সেই কারণেই তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী মঞ্চে রাখতে চাননি বলে ওয়াকিবহাল মহলে জল্পনা।
এব্যাপারে জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, প্রশাসনিক পর্যালোচনা বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী ও সরকারি আমলাদের সঙ্গে জেলাশাসক ও পুলিশ সুপার মঞ্চে থাকবেন। মঞ্চের সামনে ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের প্রতিনিধি জেলা প্রশাসন ও পুলিশের জন্য পৃথক পৃথক বসার জায়গা থাকছে। সভাধিপতি, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ ও সদস্যরা এক জায়গায় থাকবেন। তাঁদের সঙ্গে ইংলিশবাজার ও পুরাতন মালদহ পুরসভার চেয়ারম্যান থাকবেন। অতিরিক্ত জেলাশাসক, মহকুমা শাসক, বিডিওদের পাশাপাশি বিভিন্ন দপ্তরের জেলাস্তরের আধিকারিক ও বিধায়করা এক জায়গায় বসবেন। অন্যদিকে, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ডিএসপি পদমর্যাদার আধিকারিকদের সঙ্গে বিভিন্ন থানার ওসি, আইসিরা নির্দিষ্ট জায়গায় থাকবেন। আসন বিন্যাস ইতিমধ্যে চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে। তার পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা কম। তিনি আরও বলেন, সভাধিপতি জেলার এক নম্বর নাগরিক। তিনি জেলা পরিষদের দণ্ডমুণ্ডের কর্তা। পদাধিকারবলে জেলাশাসক জেলা পরিষদের কার্যনির্বাহী আধিকারিক। তিনি সভাধিপতির আওতায় কর্মরত। পঞ্চায়েত আইন অনুসারে সভাধিপতি পদের গরিমা রয়েছে। সভাধিপতি ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের সর্বোচ্চ পদে আসীন হন। ফলে যেকোনও সরকারি অনুষ্ঠানে সভাধিপতির আসন জেলা পুলিস ও প্রশাসনের আধিকারিকদের আগে নির্ধারিত হয়। এহেন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি তথা পদাধিকারীকে মঞ্চের নীচে বসানো দৃষ্টিকটূ হবে বলে আমরা মনে করছি। বিষয়টি নিয়ে পুলিস সুপার ও জেলাশাসকও অস্বস্তিতে পড়তে পারেন।
জেলা তৃণমূলের এক নেতা বলেন, লোকসভা নির্বাচনের পর থেকে জেলায় মুখ্যমন্ত্রী আসেননি। নির্বাচনোত্তর পরিস্থিতিতে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে সভাধিপতির মঞ্চে জায়গা না পাওয়াটা যথেষ্ট ইঙ্গিতপূর্ণ।