বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
তবে কংগ্রেসও তৃণমূল যখন জাতীয় নাগরিকপঞ্জী চালুর সক্রিয় বিরোধিতায় নিয়মিত পথে থামছে তখন এই ইস্যুতে এখনও অবধি কার্যত হাত গুটিয়ে বসে বিজেপি। জাতীয় নাগরিক পঞ্জীর সমর্থনে এখনও সেই অর্থে ময়দানে নামেনি বিজেপি। তবে শীঘ্রই কেন্দ্র ও রাজ্যস্তরের নেতারা এসে জেলার বিজেপি নেতাদের এনআরসি সংক্রান্ত প্রচারের ব্যাপারে প্রশিক্ষণ দেবেন বলে জানা গিয়েছে। অন্যদিকে, রাজ্যের প্রধান বামপন্থী দল সিপিএম এব্যাপারে তাদেরও প্রচার চলছে বললে দাবি করলেও সাড়া ফেলার মত প্রচার এখনও করতে পারেনি বলেই ধারণা রাজনৈতিক মহলের।
উল্লেখ্য, পশ্চিমবঙ্গের সীমান্তবর্তী জেলাগুলির মধ্যে মালদহ অন্যতম। এই জেলায় সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীভুক্ত বাসিন্দাদের সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য রকমের বেশি। ফলে এনআরসি নিয়ে বিশেষতঃ সংখ্যালঘুদের মধ্যে উদ্বেগ ছড়াচ্ছে তীব্রভাবে। তৃণমূল নেতানেত্রীদের বক্তব্য, যেভাবে বিজেপি’র রাজ্যস্তরের শীর্ষ নেতারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বক্তব্য রাখছেন তাতে সংখ্যালঘু নাগরিকদের মধ্যে এই উদ্বেগ স্বাভাবিক। একই অভিমত কংগ্রেস নেতৃত্বেরও।
তৃণমূলের জেলা চেয়ারম্যান ডাঃ মোয়াজ্জেম হোসেনের বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে মালদহের প্রতিটি ব্লকে আন্দোলন শুরু হয়েছে। জেলা নেতৃত্ব ছাড়াও অন্যতম জেলা পর্যবেক্ষক গোলাম রাব্বানি নিজেও এই সভাগুলিতে থাকছেন। মানুষের কাছে গিয়ে তৃণমূল নেতৃত্ব আশ্বস্ত করছেন যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এনআরসি বা এর অন্য কোন বিকল্প এই রাজ্যে কার্যকরী হতে দেবেন না।
মোয়াজ্জেম হোসেনের দাবি, রাজ্যের মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দৃঢ়তা জানেন। তাই তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর ছাতার তলায় থেকে তৃণমূলকে সমর্থন করছেন দুই হাত তুলে। কংগ্রেস বা অন্যান্য দলের কাছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো ব্যক্তিত্ব নেই। তাই অন্য দল যে যা প্রচারই করুক না কেন, মানুষ তৃণমূলের সঙ্গেই থাকবেন।
অন্যদিকে, তৃণমূলের এই দাবিকে তীব্র কটাক্ষ করেছেন কংগ্রেসের জেলা সভাপতি তথা বিধায়ক মোস্তাক আলম। তিনি বলেন, এনআরসি ইস্যুতে কাজের কাজ যা করার তা আদতে করছে কংগ্রেসই।
মোস্তাক আলমের দাবি, ব্লকে ব্লকে শুধু নয়, পঞ্চায়েত ও অঞ্চল স্তরেও এনআরসির বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রচারে নেমেছে কংগ্রেস। তবে শুধু প্রচার বা জনমত গঠনের কাজেই নিজেদের আটকে রাখেনি কংগ্রেস নেতৃত্ব। এখনও পর্যন্ত অন্তত ৪০ হাজার মানুষের আধার কার্ড বা ভোটার কার্ডের মত নথির ভুল সংশোধনের ক্ষেত্রেও দল সাহায্য করেছে।
তৃণমূলের উদ্দেশ্যে কংগ্রেসের জেলা সভাপতির বক্তব্য, শুধু এনআরসি নিয়ে বললে তো হবে না। ব্লকে ব্লকে প্রচারে গিয়ে কিভাবে বন্যার টাকা, ইন্দিরা আবাস যোজনার টাকা শাসক দলের নেতারা নয়ছয় করেছেন, সেই দুর্নীতির জবাবও একই সঙ্গে তৃণমূল নেতৃত্বকে দিতে হবে।
তবে কংগ্রেস ও তৃণমূল যখন এনআরসি ইস্যুতে জেলাজুড়ে নিজেদের রাজনৈতিক কর্মসূচী নিয়ে ব্যস্ত তখন কার্যত ময়দানে নেই বিজেপি ও সিপিএম।
বিজেপি’র জেলা সভাপতি গোবিন্দ মণ্ডলের বক্তব্য, কয়েকদিনের মধ্যেই এনআরসি নিয়ে আমাদের দলীয় কর্মশালা হবে। রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সেখানে বিষয়টি ব্যাখ্যা করার কথা। দলের মণ্ডল নেতৃত্ব ওই কর্মশালায় অংশ নেবেন। প্রশিক্ষণের পরে তাঁরা গ্রামে গিয়ে মানুষকে এনআরসি নিয়ে দলের অবস্থান ব্যাখ্যা করবেন।
সিপিএমের জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র’র বক্তব্য, এনআরসি নিয়ে আমরা প্রচার করছি না, একথা ঠিক নয়। আমাদের বিভিন্ন গণ সংগঠন নিয়মিত জেলাজুড়ে বিভিন্ন জনবিরোধী ইস্যু নিয়ে সরব হচ্ছে। তার মধ্যে এনআরসি’ও রয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের অন্যান্য জনস্বার্থ বিরোধী নীতি থেকে চোখ ফেরাতেই এনআরসি দিয়ে সব ঢাকা দেওয়া হচ্ছে। আমরা এনআরসি সহ সব ইস্যুই তুলে ধরছি।