উচ্চতর বিদ্যায় আগ্রহ বাড়বে। মনোমতো বিষয় নিয়ে পঠন-পাঠন হবে। ব্যবসা স্থান শুভ। পৈতৃক ব্যবসায় যুক্ত ... বিশদ
প্রায় বছরখানেক আগে রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতাল উন্নীত হয়ে রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ চালু হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ ঘোষণার পর উত্তর দিনাজপুরবাসীর উন্নত পরিষেবা পাওয়ার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিলেন। পরিকাঠামো উন্নয়ন করতে ৩০০ নার্স এবং ১০০ চিকিৎসক নিয়োগ করা হয়। উন্নত প্যাথলজিক্যাল ল্যাব থেকে অন্যান্য পরীক্ষা নিরীক্ষার পরিকাঠামো গড়ে তোলা হয়েছে। কিন্তু সবকিছু ধাপে ধাপে সরকার এগিয়ে নিয়ে গেলেও বাস্তবে পরিষেবা পেতে অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে দালালচক্র। তারা হাসপাতালে আসা রোগীকে পরিষেবা থেকে বঞ্চিত করার নানা ফাঁদ পেতে তো রেখেছে। যতক্ষণ রোগী হাসপাতালে থাকবে তাদের পরিবারের লোকদের কাছে নানা কায়দায় টাকা হাতিয়ে নিয়ে নিখরচায় চিকিৎসা পরিষেবা থেকে বঞ্চিত করছে তারা। হাসপাতালে মদ্যপ নেশাখোররা অবাধে প্রবেশ করে ট্রলি টানছে। রোগীর পরিবারের কাছে ওয়ার্ডে পৌঁছে দেওয়ার জন্য ২০০ -৫০০ টাকা করে আদায় করছে। অথচ ওয়ার্ড বয়রা ওই কাজের জন্য নিযুক্ত হলেও তাদেরকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে বহিরাগতরা রোগীর পরিবারকে দিনের পর দিন লুট করে চলেছে। এছাড়া হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে অবৈধ আয়ারাজ বহাল তবিয়তে চলছে। কিছুদিন আগে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আয়ারাজ বন্ধ করতে হাসপাতালে তাদের প্রবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করলেও আয়াদের দৌরাত্ম্য এখনও বন্ধ হয়নি। প্রতিদিন রোগীপিছু ২০০ টাকা করে আয়াদের জন্য পরিবারের লোকদের গুণতে হচ্ছে। এছাড়া হাসপাতালে আসা রোগীদের শহরের বিভিন্ন নার্সিংহোমে ভালো পরিষেবা দেওয়ার জন্য একটি চক্র সক্রিয় রয়েছে। তারা রোগীর পরিবারের লোকদের শুভাকাঙ্খী হয়ে বলছে, হাসপাতালে পরিষেবা ভালো নয়, বাইরে নিয়ে যান। বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য বাইরে প্যাথলজিক্যাল ল্যাবের কিছু কমিশন এজেন্টও এখানে কারবার চালিয়ে যাচ্ছে। বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষী থাকলেও তাদেরকে তোয়াক্কাই করে না দালালরা। দিনের পর দিন দালালচক্রের সঙ্গে হাত মিলিয়ে একশ্রেণীর চিকিৎসকও নিয়মিত পরিষেবা না দিয়ে বাইরে চেম্বারে চুটিয়ে প্রাকটিস করছেন। নার্সদের একাংশ তাঁদের দায়িত্ব পালন না করে আয়া মাসিদের দিয়ে তাদের কাজ করাচ্ছেন। ফলে উন্নত পরিকাঠামো হলেও উন্নত পরিষেবা রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজে আসা রোগীদের কাছে আজও অধরাই রয়ে গিয়েছে। ভুক্তভোগীরা আক্ষেপ করে বলছেন, হাসপাতালেও যেভাবে পদে পদে টাকা দিতে হচ্ছে, তাতে সরকারি প্রতিষ্ঠানের বাস্তব সুবিধা থেকে গরিব মানুষরাও বঞ্চিত হচ্ছেন। অভিযোগ, চিকিৎসক ওয়ার্ডে এসে রোগী দেখলেও তাঁদের অধিকাংশের প্রেসকিপশনের ওষুধও বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে। শহরের কিছু প্রভাবশালী দালালচক্রের মদতদাতা থাকায় কর্তৃপক্ষ দালালদের টলাতে পারেনি। যদিও রাজ্যের মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বৃহস্পতিবার সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ওসব বরদাস্ত করা হবে না।