কর্মে অগ্রগতি ও নতুন কাজের বরাত প্রাপ্তি। আইটি কর্মীদের শুভ। মানসিক চঞ্চলতার জন্য বিদ্যাচর্চায় বাধা। ... বিশদ
২০১১ সালে রাজ্যের অন্যান্য প্রান্তের সঙ্গে শিলিগুড়িতেও পালা বদল হয়েছিল। তৃণমূলকে রুখতে গাঁটছড়া বাঁধে সিপিএম এবং কংগ্রেস। ভোটযুদ্ধের ময়দানে জন্ম নেয় শিলিগুড়ি মডেলের। ২০১৫ সালের পুরসভা ও মহকুমা পরিষদের নির্বাচনে আসন সমঝোতা না হলেও কংগ্রেস ও সিপিএম ঐক্যবদ্ধভাবে তৃণমূলের মোকাবিলা করে। তখন ওই কৌশল নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে জোরচর্চা হয়। পরবর্তীতে ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে সেই ফরমূলাকে কাজে লাগয়ে সাফল্য পায় তারা। কিন্তু আসন্ন শিলিগুড়ি পুরসভা ও মহকুমা পরিষদের নির্বাচনে ওই কৌশল সফল হবে কি না তা নিয়ে উভয়দলের একাংশের মধ্যে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে।
সিপিএমের নেতা কর্মীদের একাংশ বলেন, ভোটে জেতার পর পুরসভা ও পরিষদ এলাকায় তেমন উন্নয়ন হয়নি। ভোটের পর ওই মডেল নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়। হাতেগোনা কয়েকটি মিছিল, নাগরিক সভা ছাড়া মডেলের নেতাদের সংসদীয় রাজনৈতিক কার্যকলাপ করতে দেখা যায়নি। কাজেই আসন্ন জোড়া নির্বাচনে ওই ফরমূলা কার্যকরী হবে কি না তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।
সিপিএমের দার্জিলিং জেলা সম্পাদক জীবেশ সরকার অবশ্য বলেন, ভোটে জেতার লক্ষ্য নিয়েই সংগঠন শক্তিশালী করার কাজ চলছে। দলের নির্বাচনী কৌশল রাজ্যব্যাপী ঠিক করা হয়। কৌশল কী হবে, তা পরে ঠিক হবে। এরজন্য এখনও অনেক সময় আছে।
শিলিগুড়ি পুরসভার কাউন্সিলার কংগ্রেসের সুজয় ঘটক বলেন, তৃণমূলের মারের মোকাবিলা করতে কংগ্রেসের হাত ধরেছিলেন সিপিএমের অশোক ভট্টাচার্যরা। কিন্তু পুরসভা ও মহকুমা পরিষদের ভোটে কোনও আসন সমঝোতাই হয়নি। সিপিএমের বিরুদ্ধে লড়াই করে জিতেছি। অর্থাৎ ওই মডেল ছিল বানানো গপ্প। পরবর্তীতে বিধানসভা নির্বাচনে আসন সমঝোতা হয়েছিল। কাজেই আগামী নির্বাচনে কী হবে, তা এখনই বলা যাবে না।
প্রসঙ্গত, গত লোকসভা ভোটে শিলিগুড়ি শহরের ৪৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে প্রায় ৪৫টিতেই লিড পায় বিজেপি। শিলিগুড়ির গ্রামীণ এলাকাতেও বিজেপির ব্যাপক লিড ছিল। এই সাফল্য ধরে রাখতে পুরসভা ও মহকুমা পরিষদের ভোট নিয়ে ঘুঁটি সাজাচ্ছে বিজেপি। বিভিন্ন উৎসব ও সামাজিক অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে আমজনতার সঙ্গে জনসংযোগ ধরে রেখেছে বিজেপির শাখা সংগঠনগুলি। তারা কৌশলে দলীয় অ্যাজেন্ডা সম্পর্কে বাসিন্দাদের মগজ ধোলাই করছে বলে অভিযোগ। পাশাপাশি দলের মণ্ডল ও জেলা কমিটিতে এখন পুনর্গঠন চলছে। পুরসভা ও মহকুমা পরিষদ দখল করতে আপাতত ‘ভিসন-২০’ নামে একটি পুস্তিকা ও তথ্যচিত্র তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। এর দায়িত্বে শিক্ষক, সাংবাদিক, চিকিৎসক, ইঞ্জিনিয়ার, ব্যবসায়ী সহ সমাজের সর্বস্তরের মানুষ। চলতি মাসের শেষে কিংবা আগামী মাসে আনুষ্ঠানিকভাবে তা প্রকাশ করে ভোটের ময়দানে নামবে বিজেপি।
দলের শিলিগুড়ি সাংগঠনিক জেলা কমিটির সভাপতি অভিজিৎ রায় চৌধুরী বলেন, কংগ্রেস ও সিপিএমের শিলিগুড়ি মডেল ফ্লপ। উত্তর-পূর্ব ভারতে প্রবেশ দ্বার এই শহরের জন্য তৃণমূলও কিছু করেনি। তাই শিলিগুড়িকে মেগা সিটি হিসেবে গড়ার ভিসন নিয়ে ভোটের ময়দানে নামব।
এদিকে এই শহরের ক্ষমতা দখল করতে তৎপর ঘাসফুল বাহিনী। তাদের নেতারা শহরের একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্ত চষে বেড়াচ্ছেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সামাজিক প্রকল্পগুলি তুলে ধরার পাশাপাশি, তাঁরা পুরসভা ও পরিষদের ব্যর্থতা নিয়ে গলা ফাটাচ্ছেন। তাদের মধ্যে চাপা বিরোধ রয়েছে বলেই অনেকে মনে করছেন। তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা সভাপতি রঞ্জন সরকার বলেন, দলে কোনও বিরোধ নেই। এবার শিলিগুড়ি পুরসভা ও মহকুমা পরিষদ দখল করে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে উপহার দেব।