পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
ওই চা বাগানের শ্রমিক ইন্দ্রা শর্মা, অনিমা টুডু প্রমুখ বলেন, দিনে আমরা ৬০-৮০ কেজি পাতা তুলে কারখানায় জমা দিতাম। কিন্তু কিছুদিন ধরেই মজুরি নিয়ে টালবাহানা চলছিল। আমাদের দৈনিক মজুরি ১৫০ টাকা করে ছিল। ১২ দিন কাজ করলে আটদিনের মজুরি অনেক সময়ে মালিকপক্ষ দিত। এনিয়ে আমরা প্রতিবাদ করাতেই মালিকপক্ষ বাগান বন্ধ করে দিল।
বাগানের শ্রমিক তথা আদিবাসী বিকাশ পরিষদের ইউনিট সম্পাদক নন্দ কিশোর বলেন, বাগানে হাসপাতাল, ঘর, জুতো, ছাতা, ত্রিপাল সহ নানান সমস্যা রয়েছে। আমরা ওসব নিয়ে বলছি না। কিন্তু আমাদের শ্রমিকদের মূল সমস্যা হয়েছিল মজুরি বকেয়া পড়ে যাওয়ায়। শ্রমিকেরা দিনে আট ঘণ্টা কাজ করলেও মালিকপক্ষ বলত, চার ঘণ্টা কাজ হচ্ছে। তারা বাগানটি অন্য কাউকে বিক্রি করে দিতে পারে। তাই বাগান বন্ধ করে চলে গিয়েছে। মজুরি না মিললে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে নামাব।
বাগানের ম্যানেজার সুবীর চক্রবর্তী বলেন, ওরা একসঙ্গে বকেয়া চেয়েছিল। আমরা সময় চেয়েছিলাম। কিন্তু তাতে রাজি হয়নি। নানাভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। নিরাপত্তার অভাব বোধ করায় বাগান বন্ধ করা হয়েছে। তবে ১৩ নভেম্বর শ্রমদপ্তরে আমরা ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে বসব। হেটমুড়ি সিঙ্গিঝোড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ডিয়ান লিম্বু বলেন, আমি মঙ্গলবার এলাকায় গিয়ে শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলব। ফাঁসিদেওয়ার বিডিও সঞ্জু গুহ মজুমদার বলেন, আমি শুনেছি বাগান বন্ধ হয়েছে। কিন্তু বাগান কর্তৃপক্ষ এখনও কিছু জানায়নি। বাগানটি কেন বন্ধ করা হল খতিয়ে দেখব।
প্রসঙ্গত, গত শনিবার বাগানের শ্রমিকেরা মালিকপক্ষকে বকেয়া মজুরির দাবিতে ঘেরাও করেছিলেন। মালিকপক্ষ দ্রুত মজুরি মিটিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিলে শ্রমিকরা দু’ঘণ্টা পর ঘেরাও তুলে নেন। রবিবার বাগানে সাপ্তাহিক ছুটি ছিল। তাই শ্রমিকরা আশায় ছিলেন, সোমবার বাগানে কাজের পর বকেয়া মজুরি পেয়ে যাবেন। কিন্তু এদিন তাঁরা কারখানায় এসে দেখেন গেট তালাবন্ধ অবস্থায় রয়েছে। শ্রমিকদের কয়েকজন মালিকপক্ষকে ফোনও করেন। তাঁদের দাবি, তখন জানানো হয় বাগান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এতে শ্রমিকদের মধ্যে একদিকে যেমন অসন্তোষ বাড়ে, তেমনি তাঁরা কার্মহীন হয়ে পড়লেন।
ফাঁসিদেওয়া ব্লকে মোট ১৪টি নথিভুক্ত চা বাগান রয়েছে। ব্লকে এই প্রথম কোনও বাগান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চিন্তিত ব্লক প্রশাসনও। যদিও প্রশাসন দ্রুত এই সমস্যার সমাধানে চেষ্টা চালাবে বলে জানিয়েছে। ভোজনারায়ণ চা বাগানে প্রায় ২০০০ শ্রমিক কাজ করেন।