বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
উপাচার্য স্বাগত সেন বলেন, আমরা কয়েকটি নতুন বিষয়ে স্নাতকোত্তর পাঠক্রম চালু করার কথা ইতিমধ্যেই ভেবেছি। বিষয়টি নিয়ে অনেকটা অগ্রসরও হয়েছি। রাজ্যের উচ্চ শিক্ষা দপ্তরের কাছে ইতিমধ্যে প্রস্তাবও পাঠানো হয়েছে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে। উচ্চ শিক্ষা দফতর ছাড়পত্র দিলেই দ্রুত এই পাঠক্রমগুলি চালু হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন উপাচার্য।
প্রতিটি নতুন বিষয়ের পাঠক্রমে ২০ থেকে ৩০টি আসন থাকবে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে। সেরিকালচার বা পর্যটনের মত বিষয়ে বিশেষজ্ঞরাই ক্লাস নেবেন। এই ধরণের পাঠক্রম চালু হলে মালদহের রেশম শিল্প বা জেলার পর্যটন শিল্পে খানিকটা গতি আসবে বলেও জানানো হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফ থেকে।
উপাচার্য বলেন, এক সময় মালদহের রেশম জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে খ্যাতি অর্জন করেছিল। উৎপাদনও হত যথেষ্ট। যদিও এখন এই রেশম উৎপাদনের ক্ষেত্রে কিছুটা ভাঁটা পড়েছে। কিন্তু তা আবার আগের জায়গায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব। এর জন্য প্রয়োজন আধুনিক পদ্ধতিতে রেশম উৎপাদন এবং একই সঙ্গে তা বিক্রির জন্য আধুনিক বাণিজ্য নীতি। সেরিকালচার পাঠক্রম চালু হলে এই দু’টি ক্ষেত্রের উপরেই যথেষ্ট আলোকপাত করা হবে।
পাশাপাশি পর্যটনের বিষয়েও আধুনিক সিলেবাসের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলা হবে। মালদহকে কীভাবে দেশের ও রাজ্যের পর্যটন মানচিত্রে উল্লেখযোগ্য ভাবে তুলে ধরা যায় সেই বিষয়টিও পর্যটনের পাঠক্রমে থাকবে বলে জানিয়েছেন উপাচার্য।
উল্লেখ্য, আম ও রেশমের পাশাপাশি মালদহে রয়েছে একাধিক ঐতিহাসিক স্থান। গৌড়, আদিনা, পাণ্ডুয়া, জগজীবনপুরের মতো ঐতিহাসিক জায়গা রয়েছে এই জেলায়। অথচ বিবিধ প্রচেষ্টা সত্ত্বেও এই জেলায় পর্যটন সেভাবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেনি। কীভাবে জেলার ঐতিহাসিক গুরুত্বকে তুলে ধরে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে এই জেলায় পর্যটকদের টেনে আনা সম্ভব, সে সম্বন্ধে বিস্তারিত আলোচনা স্নাতকোত্তর পর্যটন পাঠক্রমের অন্তর্ভুক্ত করা যায় কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে।
উপাচার্য বলেন, মালদহের ইতিহাসে পাল যুগ, সেন যুগ, সুলতানি আমল ও বৌদ্ধ সংস্কৃতির অনেক নিদর্শন রয়েছে। সবগুলিকে একই সূত্রে গেঁথে যদি একটি সার্কিট গড়া হয়, তাহলে পর্যটকদের আগ্রহ বাড়তে পারে। পর্যটনে স্নাতকোত্তর পাঠক্রম চালু হলে আমরা এই বিষয়গুলিকেও অন্তর্ভুক্ত করার কথা ভেবেছি।
পাশাপাশি ফুড ও নিউট্রিশন বিভাগে যথেষ্ট সংখ্যক শিক্ষক নিয়োগ করা শেষ হলে মালদহের অন্যতম প্রধান অর্থকরী উৎস আমের বিষয়েও বেশ কিছু নতুন পেপার যুক্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিরিক্ত ভারপ্রাপ্ত নিবন্ধক বিপ্লব গিরি।
তবে এখনও গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশ কিছু বিষয়ে পর্যাপ্ত সংখ্যক শিক্ষক শিক্ষিকা নেই বলে অভিযোগ পড়ুয়াদের। এছাড়াও ফলাফল প্রকাশের ক্ষেত্রে দেরি, ভুল ফল প্রকাশ সহ বেশ কিছু অভ্যন্তরীণ জটিলতার কারণে মালদহের মেধাবী পড়ুয়াদের একটা বড় অংশ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে চলে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ।
উপাচার্য বলেন, পরীক্ষা ব্যবস্থা ও ফল প্রকাশকে ত্রুটিহীন করে তোলার লক্ষ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপ ইতিমধ্যেই করা হয়েছে। আগামীতে মেধাবী পড়ুয়ারা যেন আধুনিক শিক্ষার মাধ্যমে কর্মসংস্থান করতে পারে, সেই উদ্দেশ্যেই এই ধরণের আধুনিক ও নতুন পাঠক্রমের কথা আমরা ভেবেছি।