বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
হিমাংশুবাবু বলেন, প্রথমে আমি প্রতিমা তৈরি করতে রাজি ছিলাম না। কিন্তু বোল্লাকালী স্বপ্নাদেশ দেয়। একরাতে স্বপ্নে বোল্লাকালী বলে আমাকেই তাঁর প্রতিমা করতে হবে। ওই স্বপ্নাদেশ আমি ফেলতে পারিনি। তাই ২০১১ সাল থেকে প্রতিমা গড়ছি। মাটির প্রতিমা তৈরি করতে আমি কখনও কোথাও প্রশিক্ষণ নিইনি। কিভাবে বোল্লাকলীর সুবিশাল মূর্তি তৈরি হয়ে যায় আজও সেনিয়ে অবাক হই।
দুর্গাপুজোর দশমীর পর থেকে হিমাংশুবাবু প্রতিমা বানানোর কাজ শুরু করেছেন। বালুরঘাটের মাঝিগ্রামে বাড়ি হলেও প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত তিনি বোল্লাতে থাকবেন। তিনি জানিয়েছেন, প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত নিরামিষ আহার করছেন। বোল্লাকালীর মূর্তির পাশাপাশি এবারে তিনি বিভিন্ন লোকের মানত করা ছোটবড় মিলিয়ে মোট ১৩৮টি প্রতিমা বানাচ্ছেন। তাঁর হাতে গড়া বোল্লাকালীর নিরঞ্জন তিনি দেখতে চান না। তাই প্রতিমা নিরঞ্জনের আগেই তিনি বোল্লা ছেড়ে বালুরঘাটে চলে যান।
হিমাংশুবাবুর বাবা অসুস্থ হয়ে যাওয়ার পর বোল্লাকালী পুজোর আয়োজক কমিটির পক্ষ থেকে তাঁকে প্রতিমা করার দায়িত্ব দেওয়া হয়। এতো বড় মূর্তি কিভাবে তৈরি করবেন সেনিয়ে চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলেন। তাই প্রথমে রাজি হননি। তবে এক রাতে বোল্লাকালী তাঁর স্বপ্নে এসে নির্দেশ দেয় তাঁকেই মূর্তি করতে হবে। সেজন্য বোল্লাকালী নিজেই তাঁকে সাহায্য করবে। সেই থেকে এদিন পর্যন্ত মূর্তি তৈরি কাজ করছেন হিমাংশুবাবু। মূর্তি বানানোর পর থেকে আর্থিক কোনও সমস্যায় এখনও তিনি পড়েননি। তাঁর দাবি, মা বোল্লা তাঁকে খুশিতে রেখেছেন। আগামী দিনেও তিনি বোল্লার মূর্তি গড়বেন।
বোল্লাকালীর প্রতিমা আগে বানাতেন হিমাংশুবাবুর বাবা ভবেন মহন্ত। ২০১১ সালে হঠাৎ ভবেনবাবু অসুস্থ হয়ে পড়েন। তিনি অসুস্থ হয়ে যাওয়ার পরে পুজো কমিটির পক্ষ থেকে হিমাংশুবাবুকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। বোল্লাকালী প্রতিমা গড়ে তিনি ৩০ হাজার টাকা মজুরি পান। বোল্লাকালীর পাশাপাশি ছোটবড় কালী প্রতিমা বানিয়ে তাঁর লক্ষাধিক টাকা উপার্জন হয়। তাঁকে এই কাজে সাহায্য করেন নিকুন হেমব্রম। প্রতিমা তৈরির পর সোনা দিয়ে মূর্তিকে হিমাংশুবাবুই সাজান। আগামী দিনে নিজের দুই ছেলেকে তিনি প্রতিমা তৈরির কাজে যুক্ত করাতে চান।