ব্যবসা সূত্রে উপার্জন বৃদ্ধি। বিদ্যায় মানসিক চঞ্চলতা বাধার কারণ হতে পারে। গুরুজনদের শরীর-স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতন ... বিশদ
কংগ্রেস কর্মী সমর্থকদের অনেকেই আক্ষেপ করছেন প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির বাড়ি কালিয়াগঞ্জে। প্রিয়দার কাছে লোক ছিলেন বিধায়ক প্রমথনাথ রায়। বিধায়কের মৃত্যুর পর এই উপনির্বাচন হচ্ছে। এখানে কংগ্রেসের প্রেস্টিজ ফাইট। অথচ নেত্রী না আসায় তাঁরা হতাশ। এনিয়ে মানুষকেও জবাব দিতে হচ্ছে। বিরোধীরা সুযোগ বুঝে একে ইস্যু করছে।
কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা উপনির্বাচনের দিন ঘোষণার অনেক আগেই জেলা কংগ্রেস প্রমথবাবুর মেয়ে ধীতশ্রীকে প্রার্থী হিসেবে প্রজেক্ট করে দেয়। এনিয়ে প্রচারও তারা শুরু করে দেয়। প্রয়াত কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির খাসতালুক কালিয়াগঞ্জ বামজমানার পাশাপাশি তৃণমূলের আমলেও কংগ্রেসের দখলে ছিল। এহেন কেন্দ্রে কংগ্রেস নেত্রীর অনুপস্থিতি নিয়ে ঘরেবাইরে চর্চা হচ্ছে। এবারে রায়গঞ্জ লোকসভা আসনে কংগ্রেসের প্রার্থী হয়েছিলেন দীপা দাশমুন্সি। তবে লোকসভা ভোটে কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা এলাকাতেও দলের ভরাডুবি হয়। ভোটের ফলাফল ঘোষণার পর দীপাদেবী আর রায়গঞ্জ তথা কালিয়াগঞ্জে ফেরেননি। এনিয়ে কংগ্রেস শিবিরে হতাশা ছেয়ে আছে। ২০১৪ সালে লোকসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে দীপাদেবীর সম্মানজনক হার হলেও ওই ভোটের পরও তাঁকে আর নির্বাচনী এলাকায় বিশেষ দেখা যায়নি। দলের একাংশের অভিযোগ, নিজের এলাকার সঙ্গে সংযোগ না থাকায় দীপা দাশমুন্সিকে মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছে। সাধারণ ভোটাররাও বলছেন, প্রিয়দা যতদিন সুস্থ ছিলেন, যেখানেই থাকতেন এলাকার মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন। যে কোনও সমস্যা নিয়ে তাঁর কাছে গেলে তিনি সাধ্যমতো সহযোগিতা করতেন। যে কারণে প্রিয়দা সকলের ‘প্রিয়’ হয়ে উঠেছিলেন। কিন্তু দীপা দাশমুন্সি সেই জায়গা দখল করতে পারেননি। দলের নিচুতলার কর্মীরাও অনেকেই আক্ষেপ করে বলছেন, দীপাদেবী কর্মীদের সঙ্গে কথা বলা তো দূরের কথা তিনি ফোনও ধরেন না। এর ফলে অনেকেই দল ছেড়ে দিয়েছেন। প্রিয়দা বেঁচে থাকলে কংগ্রেসের এই শক্ত মাটিতে কেউ আঁচড় কাটতে পারত না। কংগ্রেসের খাসতালুক কালিয়াগঞ্জ পুরসভা দীর্ঘদিন কংগ্রেসের দখলে ছিল। কিন্তু এখানেও এখন ঘাসফুল ফুটে গিয়েছে। এবার উপনির্বাচনে আগে দীপাদেবী প্রচারে এলেও কতটা সমর্থন কুড়াতে পারবেন তা নিয়ে সন্দিহান দলের নিচুতলার অনেকেই।
কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা নির্বাচনে এবারে কংগ্রেসের পক্ষে সহানুভূতির ভোট থাকলেও সাংগঠনিক দূর্বলতা দলের ভোট ম্যানেজারদেরকেও চিন্তায় ফেলে দিয়েছে। শিক্ষিকা ও প্রাক্তন বিধায়ক কন্যা ধীতশ্রী রায়কে প্রার্থী করে কংগ্রেস যেমন সহানুভূতির হাওয়া ধরে রাখতে চেয়েছে, তেমনই বিজেপিও এখানে স্বচ্ছ ভাবমূর্তির সহজ সরল কমল সরকারকে প্রার্থী করে বাজিমাত করতে চাইছে। এদিকে তৃণমূলেও তপন দেব সিংহকে প্রার্থী করে জোর টক্কর দিচ্ছে। কালিয়াগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির সহকারী সভাপতি তপনবাবুও স্বচ্ছ ভাবমূর্তির লোক।
বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ লাহিড়ি বলেন, আমাদের প্রার্থী কমল সরকার দলমত নির্বিশেষে সকলের পরিচিত ও প্রিয় মানুষ। দীপা দাশমুন্সি এখানে প্রচারে এলেও কোনও প্রভাব পড়বে না। ওঁকে কালিয়াগঞ্জের মানুষ ভোটপাখি বলে চিনে ফেলেছেন। ফলে কংগ্রেস কালিয়াগঞ্জে কোনও ফ্যাক্টর হবে না। তৃণমূল নেতা অসীম রায় বলেন, দীপা দাশমুন্সির আর কোনও ক্যারিশ্মা নেই। মানুষ রাজনীতিটা বোঝে, শৌখিনতা নয়।