কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
গত রবিবার সকাল ৮টায় রায়গঞ্জ থানা থেকে ৫০০ মিটার দূরেই আগ্নেয়াস্ত্রধারী ছ’জন দুষ্কৃতী বস্ত্র ব্যবসায়ী প্রকাশ আগরওয়ালের বাড়িতে ঢুকে গুলি করে যায়। শিলিগুড়ির একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা চলছে। প্রকাশবাবুর বাড়ির চারদিকেই বিভিন্ন বাড়ি ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে সিসিটিভি ক্যামেরা রয়েছে। সেখান থেকে পুলিস দুষ্কৃতীদের ইতিমধ্যেই চিহ্নিত করেছে। কিন্তু কোথাকার ওই দুষ্কৃতীরা? তারা কি খুনের উদ্দেশ্যেই এসেছিল? নাকি তোলা না দেওয়ায় শুধু আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে আগরওয়াল পরিবারকে ভয় দেখাতে এসেছিল? বিহারের দুষ্কৃতীরা ঘটনায় জড়িত থাকলেও স্থানীয় দুষ্কৃতী যোগ উড়িয়ে দিচ্ছে না তদন্তকারীরা। পরিবারের লোকরাও পুলিসকে খুব একটা সহযোগিতা করছে না বলে তদন্তকারীরা জানিয়েছেন। কিছু কি গোপন করার চেষ্টা? সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে তদন্তকারীরা। যদিও আক্রান্ত ব্যবসায়ীর মায়ের দাবি হামলাকারীরা তাঁর কপালে পিস্তল ঠেকিয়েছিল। দুষ্কৃতীরা হিন্দিভাষি ছিল। তাদের কাউকেই চিনতে পারেননি। তবে তদন্তকারীদের ধারণা, খুনের উদ্দেশ্যে দুষ্কৃতীরা এলে সাত সকালে কেন আসবে? চারদিকে সিসিটিভি ক্যামেরা রয়েছে। পেশাদার ভাড়াটে খুনি আসতে পারে। তবে সেক্ষেত্রে ব্যবসায়িক বিরোধ, অথবা ব্যক্তিগত শত্রুতা ছাড়া হামলা হতে পারে না। সিসিটিভি ক্যামেরায় অল্পবয়সি কয়েকজন যুবককে পুলিস চিহ্নিত করলেও তারা পুলিসের ধরাছোঁয়ার মধ্যে নেই। ফলে ৪৮ ঘণ্টা কেটে গেলেও ওই ঘটনার কিনারাই করে উঠতে পারেনি পুলিস।
করণদিঘির পাশাপাশি রায়গঞ্জের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে বিরোধীদের পাশাপাশি শাসক দলের নেতারাও পুলিস প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে রাস্তায় নেমেছেন। ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন শহরে প্রতিদিন প্রতিবাদ বিক্ষোভ আন্দোলন করছেন। মঙ্গলবার বিকালে রায়গঞ্জ মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে শহরের ঘড়ি মোড়ে একটি বিক্ষোভ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অতনুবন্ধু লাহিড়ি বলেন, রায়গঞ্জ শহরে দিনের বেলা বাড়িতে ঢুকে যেভাবে একজন ব্যবসায়ীকে খুনের চেষ্টা হয়েছে, এটা কোনওভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। দুষ্কৃতীরা অবিলম্বে গ্রেপ্তার না হলে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে নামব। ওয়েস্ট দিনাজপুর চেম্বার অফ কমার্সের সাধারণ সম্পাদক শঙ্কর কুণ্ডু বলেন, স্থানীয় দুষ্কৃতী যোগ ছাড়া দিনের বেলা এধরনের হামলা হতে পারে বলে মনে হয় না। ৪৮ ঘণ্টা পরেও কেন দুষ্কৃতীরা ধরা পড়ছে না আমরা সেটাই বুঝে উঠতে পারছি না। সোমবার জেলা কংগ্রেস সভাপতি মোহিত সেনগুপ্ত আইনশৃঙ্খলার প্রশ্ন তুলে পুলিস সুপারকে স্মারকলিপি দিয়েছেন। বিজেপির জেলা সভাপতি নির্মল দাম বলেন, একের পর এক খুন, হামলা, চুরি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটলেও পুলিসের হেলদোল নেই।
রাজনৈতিক মহল থেকে ব্যবসায়ী মহল পুলিস প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে বারবার প্রশ্ন তোলায় অস্বস্তিতে জেলা পুলিস। সব মহলেই অভিযোগ উঠেছে, সমাজবিরোধী কার্যকলাপ জেলার সর্বত্র মারাত্মকভাবে বেড়ে গিয়েছে। একদিকে বিভিন্ন হামলা খুনের ঘটনায় দুষ্কৃতীদের পাকড়াও করা ও অন্যদিকে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখাটাই এখন উত্তর দিনাজপুর জেলা পুলিস প্রশাসনের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।