বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
ডুয়ার্সের অন্যতম প্রাচীন পুজো এই মেটেলি কালীবাড়ির পুজো। এখানকার দেবীর জাগ্রত বলে খ্যাতি রয়েছে গোটা ডুয়ার্সজুড়েই। বছরের অন্যান্য সময়েও এই মন্দিরে পুজো দিতে ও দেবী দর্শন করতে ভিড় করেন পুণ্যার্থীরা। সেই ভিড় আরও বাড়ে কালীপুজোর সময়ে। মেটেলি কালীবাড়ির পুজোয় অংশ নিতে ডুয়ার্সের বিভিন্ন এলাকার মানুষের সঙ্গে পর্যটকরাও মুখিয়ে থাকেন। এই পুজোয় না আছে থিমের বাহুল্য, না আছে আলোকসজ্জার চাকচিক্য। কিন্তু ভুটানের শিল্পরীতিতে তৈরি এই প্রতিমা দর্শন করতে ও পুজো দেখার জন্য এখনও ব্যাপক ভিড় হয়। এবছর এই পুজোর ১৪৮তম বর্ষ। এই কালীপুজোর আয়োজনে এখন ব্যস্ত পুজো কমিটি ।
পুজো কমিটির পক্ষে বিশ্বজিত মণ্ডল, সুকান্ত দে, তপনকুমার দাস প্রমূখ বলেন, মেটেলি কালীবাড়ির পুজো ডুয়ার্সের প্রাচীনতম কালীপুজো। এই পুজোতে অংশ নিতে ডুয়ার্সের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসেন মানুষ। ভিড় করেন পর্যটকরাও। এবছর থেকে এই পুজোয় আর পশুবলি দেওয়া হবে না। একসময় ১০১টি পাঁঠা বলি দেওয়া হত কালীপুজো উপলক্ষে। পরে সেই সংখ্যা ক্রমশ কমিয়ে নিয়ে আসা হয়। গত বছর পর্যন্ত ২৫টি পাঁঠা বলি দেওয়া হয়েছে। এবছর সেই পশুবলির প্রথাই পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
ডুয়ার্স তথা উত্তরবঙ্গের মধ্যে একাধিক প্রাচীন কালীপুজো রয়েছে। সেগুলির মধ্যে অন্যতম হল মেটেলির কালীবাড়ি পুজো। এই কালীবাড়ির পিছনে অনেক ইতিহাস রয়েছে। অনেকের মতে এই পুজো দেড়শো বছরেরও অনেক বেশি পুরোনো। তবে তার কোনও প্রামাণ্য তথ্য পাওয়া যায় না। তাই ধরে নেওয়া হয়েছে এই পুজো প্রায় দেড়শো বছরের পুরোনো। জানা গিয়েছে, অতীতে মেটেলি এলাকাটি ভুটানের অন্তর্গত ছিল। সেসময় ভুটানিরা এখানে পুজো করতেন। ১৯৬৮ সালে পুরোনো মন্দিরের উপর একটি গাছ উপড়ে পড়ে। সেই গাছ পড়ার ফলে মন্দিরটি ভেঙে যায়। স্বভাবতই মন্দিরটির সংস্কার করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। ওই সময় নতুন করে মন্দিরের নির্মাণ কাজ করার সময়ে মাটির ভিতর থেকে একটি মাটির প্রদীপ, পাকা বেদির অংশ সহ নানা ঐতিহাসিক সামগ্রী পাওয়া যায়। পাকা ওই বেদির মধ্যে খোদাই করে লেখা ছিল বাংলার ১২৭৮ সন। সেই হিসেবে এবারের পুজো ১৪৮তম। মন্দিরে প্রাচীন একটি খাঁড়াও পাওয়া যায়। ওটা দিয়ে নাকি বলি দেওয়া হত অতীতে। ১৯৮৩ সালে মন্দিরে খুঁড়ে একটি পিলারও পাওয়া যায়। বর্তমানে সেটিকে একটি প্রাচীর দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে।
এখানকার কালীপ্রতিমা অদ্ভুত দর্শনের। কষ্টিপাথরের তৈরি এই প্রতিমার চোখ টানা টানা।
মেটেলি কালীবাড়ির এই পশুবলি রদের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন স্থানীয় বিশিষ্ট পুরোহিত দেবজ্যোতি চট্টোপাধ্যায়।