বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
দিন কয়েক আগেই কোচবিহারে বিজেপির সংকল্প যাত্রাকে কেন্দ্র করে পুন্ডিবাড়ি, পাতলাখাওয়া, মধুপুর প্রভৃতি জায়গায় তৃণমূল কংগ্রেসের পার্টি অফিসে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়েছিল। সেই ঘটনায় বিজেপির দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলেছে তৃণমূল। তাদের অভিযোগ, সেই সময়ে পাতলাখাওয়া এলাকায় মজিরুদ্দিন সরকারকে মারধর করে বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। এরপর সেদিন রাতেই নার্সিংহোমে মজিরুদ্দিন সাহেবের মৃত্যু হয়।
এই ঘটনায় কোচবিহারের রাজনীতিতে ব্যাপক আলোড়ন পড়ে যায়। ঘটনার পরেই উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ মৃত নেতার বাড়িতে গিয়েছিলেন। এবার সুব্রতবাবু গিয়ে ওই নেতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করে তাঁদের পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেন। তবে এদিন এই বিষয়ে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে তিনি কোনও কথা বলতে চাননি।
এদিকে, এদিন বিজয়া সম্মিলনীতেও সুব্রতবাবুর কথায় অন্য নানা বিষয়ের সঙ্গে উঠে এসেছে মজিরুদ্দিন কাণ্ডের কথাই। কোচবিহারের উৎসব ভবনে আয়োজিত ওই বিজয়া সম্মিলনীতে বক্তব্য শেষে সুব্রতবাবু দলের কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, মহাত্মা গান্ধীর সংকল্প যাত্রার নাম করে ভারতীয় জনতা পার্টি একটা সভা করে, একটা যাত্রার প্রচেষ্টা চালিয়ে সংঘাত ঘটিয়ে আমাদের এক সহকর্মীর মৃত্যু ঘটিয়েছে। আজকে যখন কোচবিহারে এসেছি, তখন আমরা ওই সহকর্মীর বাড়িতে যাব। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওই মৃত ব্যক্তির পরিবারের প্রতি কিছু বার্তা দিয়েছেন, সেটা পৌঁছে দিতেই আমি যাব।
এদিনের বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠানে উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ উপস্থিত ছিলেন না। তিনি শিলিগুড়িতে মুখ্যমন্ত্রীর অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়েছেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। তবে রবিবাবু বাদে কোচবিহার জেলার অধিকাংশ বিধায়ক উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও দলের বিভিন্ন স্তরের নির্বাচিত প্রতিনিধি ও নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এদিনের অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সুব্রতবাবু বলেন, আমার বলতে কোনও দ্বিধা নেই যে, ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পর আমাদের দলের কর্মীদের মধ্যে একটা মানসিক প্রস্তুতি তৈরি হলো, বোধহয় বাংলার মাটিতে মানুষের পাশে না থাকলেও এই রাজনৈতিক দল বোধহয় বছরের পর বছর ক্ষমতায় থাকবে। মানুষের ক্ষমতা ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের থেকেও বেশি। ২০১৬ সালের পর ধাপে ধাপে যা দেখেছি, কোথাও কোথাও আমাদের কিছুটা আচার-আচরণ, ব্যবহার এবং কোথাও কোথাও ঔদ্ধত্য মানুষ থেকে কিছুটা দূরে সরিয়ে দিয়েছে। যাঁরা দূরে সরিয়ে দিয়েছেন, যাঁরা আমার সহকর্মী আছেন, তাঁরা লক্ষ্য করে বলবেন, যাঁরা দূরে সরিয়ে দিয়েছেন, তাঁরাই বলছেন যে, কিছু নয়, আপনারা সবাই সংঘবদ্ধভাবে চলুন। আস্তে আস্তে সব ঠিক হয়ে যাবে। আমরা যতটা বিচলিত ছিলাম দলীয় কর্মী হিসাবে, তার চেয়েও বেশি বিচলিত ছিল মানুষ।
তিনি আরও বলেন, দল মানে সমষ্টি। কাজেই সকলকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে চলার চেষ্টা করুন। মানুষের কাছে পৌঁছান। দল বহু কর্মসূচি নিচ্ছে। আমাদের কর্মীদের নাম ঠিকানা জোগাড় করা হচ্ছে। ডিসেম্বর মাসের মধ্যে দিদিকে বলো কর্মসূচি শেষ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। বিধায়কভিত্তিক কর্ম সমিতি তৈরি করে দিয়ে ওই বিধানসভার সর্বস্তরের সহকর্মীদের সংঘবদ্ধ ভাবে কাজ করার আহ্বান জানাচ্ছি।