পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
ওয়েস্ট দিনাজপুর চেম্বার অফ কমার্সের সাধারণ সম্পাদক শঙ্কর কুণ্ডু বলেন, বেআইনি অস্ত্রধারীরা এতটাই সক্রিয় যে জেলায় একের পর এক ব্যবসায়ীকে টার্গেট করে খুন, হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। এতে ব্যবসায়ীরা আতঙ্কিত। বেআইনি অস্ত্রের দাপটে জেলায় আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি হয়েছে। রায়গঞ্জের বিধায়ক মোহিত সেনগুপ্ত বলেন, বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্রধারীরা একের পর এক খুন, হামলার ঘটনা ঘটিয়ে চলেছে। আইনশৃঙ্খলা বলে কিছু নেই। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন সাধারণ মানুষ। পুলিস সুপারকে বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগের কথা জানিয়েছি। উত্তর দিনাজপুরের পুলিস সুপার সুমিত কুমার বলেন, জেলার বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে দুষ্কৃতীদের পাশাপাশি আগ্নেয়াস্ত্রও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। দুষ্কৃতী কার্যকলাপ ঠেকাতে পুলিস সবসময় সতর্ক রয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র বাজেয়াপ্ত করতে পুলিস অভিযান চলছে।
জেলার বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে বিহার সীমান্ত রয়েছে। বিহারের সমাজবিরোধীদের একটি চক্র উত্তর দিনাজপুর জেলার সমাজবিরোধীদের সঙ্গে যোগ রেখে জেলায় অস্ত্র কারবার দীর্ঘদিন ধরে চালিয়ে আসছে। দুষ্কৃতীদের ধরপাকড় বেড়ে গেলে অস্ত্র কারবারিদেরও কারবারে কিছুটা মন্দা অবস্থা চলে। কিন্তু কিছুদিন ধরে শহরের পাশাপাশি গ্রামাঞ্চলে অনেকের হাতেই বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র পৌঁছে যাওয়ায় দুষ্কৃতী কার্যকলাপ সর্বত্রই বেড়ে গিয়েছে। কয়েকদিন আগে রায়গঞ্জ শহরের শক্তিনগর এলাকা থেকে বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র সহ দু’জনকে পুলিস গ্রেপ্তার করে। রবিবার করণদিঘির ব্যবসায়ী খুনের ঘটনায় ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র সহ পাঁচ দুষ্কৃতীকে পুলিস গ্রেপ্তার করে। ওই ব্যবসায়ীর গাড়ির চাকা লক্ষ্য করে গোয়ালপোখর থানা এলাকায় গত ৭ জুলাই দুষ্কৃতীরা গুলি চালিয়ে টাকা লুট করেছিল। নবমীর সন্ধ্যায় সুবেশ দাস(৪২) নামে ব্যবসায়ীকে কাছে থেকে গুলি করে খুন করা হয়।
রবিবার সকালে আগ্নেয়াস্ত্রধারীরা রায়গঞ্জ শহরের কুমারডাঙিতে ব্যবসায়ী প্রকাশ আগরওয়ালের বাড়িতে হামলা চালায়। বাসিন্দারা জানিয়েছেন, উত্তর দিনাজপুর জেলা সংলগ্ন বিহারের বিভিন্ন গ্রামে দুষ্কৃতী চক্র সক্রিয় রয়েছে। দুই রাজ্যের সীমান্তবর্তী কিছু গ্রামে দুষ্কৃতীদের অস্থায়ী ঠেক রয়েছে। আস্তানা বদল করলেও দুই রাজ্যের সীমান্ত গ্রামগুলিকে সমাজবিরোধীরা নিজেদের মুক্তাঞ্চল ধরে নিয়ে বিভিন্ন সময় এই জেলার বিভিন্ন শহরে, জাতীয় সড়কে বাড়িতে চুরি ছিনতাই, ডাকাতি, লুটপাট চালিয়ে দুষ্কৃতীরা সহজেই বিহারের গ্রামে গা ঢাকা দিচ্ছে।
গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, বিহারের মুঙ্গেরের কিছু গ্রামে বেআইনি অস্ত্র তৈরি করাটাই সেখানকার কুটিরশিল্প। পাঁচ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকায় বেআইনি ওই আগ্নেয়াস্ত্র দুষ্কৃতীদের মাধ্যমে হাত ঘুরিয়ে বিক্রি হয়। বিভিন্ন থানার পুলিস বিভিন্ন সময় বেআইনি অস্ত্র বাজেয়াপ্ত করলেও উত্তর দিনাজপুরে সমাজবিরোধীদের কাছে প্রচুর বেআইনি অস্ত্র রয়েছে। গত শুক্রবারই ইটাহারের এক পেট্রল পাম্পের কাছ থেকে পুলিস আগ্নেয়াস্ত্র সহ এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে। এছাড়া আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের ঘটনা হামেশাই ঘটে। সেগুলি বেশিরভাগই বিহারের তৈরি বলে পুলিসি তদন্তে উঠে এসেছে। এথেকে পরিষ্কার বিহার থেকে আগ্নেয়াস্ত্র উত্তর দিনাজপুর জেলায় ঢুকছে। বিহারের সঙ্গে জেলার বিস্তীর্ণ সীমান্ত থাকার সুবিধাকে দুষ্কৃতীরা কাজে লাগাচ্ছে। পুলিস এনিয়ে মাঝেমধ্যে নাকা চেকিং, অভিযানের মতো পদক্ষেপ করলেও কিছুতেই তা নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে না। এনিয়ে জেলা পুলিসও উদ্বিগ্ন।