পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
বামফ্রন্ট পরিচালিত শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের সভাধিপতি তাপসবাবু অবশ্য বলেন, এবার প্রচুর বৃষ্টি হয়েছে। যার জেরে কিছু এলাকায় মশা বাহিত ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। বিষয়টি নজরে এসেছে। এই রোগ প্রতিরোধ করতে এলাকার সাফাই অভিযানে জোর দেওয়া হবে। পাশাপাশি গ্রামবাসীদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে ধারাবাহিক প্রচার অভিযানে নামা হবে।
এবার পুজোর মধ্যেই শিলিগুড়ি শহরে ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দেয়। প্রথমে শহরের ২১ নম্বর ওয়ার্ডে ডেঙ্গু আক্রান্ত কয়েকজন রোগীর হদিশ মেলে। তারপর তা শহরের অন্য আরও কয়েকটি ওয়ার্ডে তা ছড়িয়ে পড়ে। ঠিক শহর এলাকার মতো শিলিগুড়ি মহকুমার মাটিগাড়া ব্লকেও ডেঙ্গু রোগ ছড়াচ্ছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গত জানুয়ারি মাস থেকে চলতি মাস পর্যন্ত মাটিগাড়া ব্লকের ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ৬৪ জন। যারমধ্যে মাটিগাড়া-২ গ্রাম পঞ্চায়েতে আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এখানে ২৪ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এরবাইরে আঠারোখাই ও চম্পাসারি গ্রাম পঞ্চায়েতে ন’জন করে, মাটিগাড়া-১ গ্রাম পঞ্চায়েতে ১৬ জন ও পাথরঘাটায় ছ’জন আক্রান্ত হয়েছেন। এদিন মহকুমা পরিষদের বৈঠকে জেলার উপ মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক-২ তুলসী প্রামাণিক এই রিপোর্ট পেশ করেছেন বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। একইসঙ্গে স্বাস্থ্যদপ্তরের আধিকারিকরা বৈঠকে অভিযোগ করেন, মাটিগাড়া বাজার, হাট ও স্বাস্থ্যকেন্দ্র চত্বর নিয়মিত সাফাই হচ্ছে না। সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলিতে জমে থাকছে আবর্জনা। নিকাশি নালা, রাস্তার ধারের ফাঁকা জমি, ঘরের বাঁশের খুঁটির কোটরে জমে থাকছে জল। যারফলে সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলি ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশার আঁতুরঘরে পরিণত হয়েছে।
উল্লেখ্য, সংশ্লিষ্ট ব্লকের বাসিন্দা মহকুমা পরিষদের সভাধিপতি। তিনি এই ব্লক এলাকা থেকেই নির্বাচিত হয়েছেন। বৈঠকে নিজের এলাকা সম্পর্কে এমন রিপোর্ট পেয়ে সভাধিপতি চিন্তায় পড়েছেন। মশার আঁতুরঘর নির্মূল করতে তিনি একগুচ্ছ পরিকল্পনা নিয়েছেন। স্বাস্থ্যকর্মীদের পাশাপাশি তিনি নিজেও বাড়ি বাড়ি গিয়ে গ্রামবাসীদের সচেতন করবেন বলে জানিয়েছেন। সভাধিপতি বলেন, বর্ষার মরশুম শুরুর সময়তেই গ্রামে গ্রামে ভেক্টর কন্ট্রোল টিম গঠন করা হয়। গ্রামবাসীদের নিয়ে সিটিজেন টাস্ক ফোর্স গঠন করা হয়েছে। এলাকার স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল, বাজার সহ বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন সময় প্রচার অভিযান চালানো হয়। তা সত্ত্বেও এলাকায় ডেঙ্গুর আক্রমণ অব্যাহত থাকবে তা ভাবতে পারছি না। তাই ফের ব্লকের প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতে সচেতনতা শিবির করব। শনিবার মাটিগাড়া-২পঞ্চায়েতে শিবির করা হবে। তাতে পঞ্চায়েতের সমস্ত সদস্যদের ডাকা হয়েছে। স্বাস্থ্যদপ্তরের আধিকারিকরাও সেখানে হাজির থাকবেন। আক্রান্তের সংখ্যা বেশি হওয়ায় এই পঞ্চায়েতে প্রথম সভা করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, গত বছরের তুলনায় এবার মহকুমার গ্রামীণ এলাকায় ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, গতবছর মহকুমার গ্রামীণ এলাকায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন ৯৪ জন। এবার এখন পর্যন্ত তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০৩। যারমধ্যে মাটিগাড়ায় ৬৪ জন, ফাঁসিদেওয়ায় ১০ জন, নকশালবাড়িতে ২২ জন এবং খড়িবাড়িতে সাতজন আক্রান্ত হয়েছেন। এদিন মহকুমা পরিষদের সভায় সভাধিপতি ছাড়াও মহকুমা পরিষদের সমস্ত সদস্য ও আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন।