পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রলয় আচার্য বলেন, এই প্রথম পাহাড়ে আশাকর্মী নিয়োগ করল রাজ্য সরকার। এবার থেকে পাহাড়ের বাসিন্দাদের কাছে স্বাস্থ্য পরিষেবা সহজেই পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে।
ন্যাশেনাল রুরাল হেলথ মিশনের সহযোগিতায় রাজ্যের প্রতিটি জেলার গ্রামে গ্রামে দীর্ঘদিন আগেই আশাকর্মী নিয়োগ করা হয়। তাঁরা নিয়মিত বাড়ি বাড়ি গিয়ে গর্ভবতী মহিলা, শিশু ও মা’দের স্বাস্থ্য সম্পর্কে খোঁজখবর নেন, পরিষেবা প্রদান করেন। ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া, জ্বর সহ বিভিন্ন রোগ সম্পর্কে তাঁরা গ্রামে গ্রামে সচেতনতামূলক প্রচার অভিযান চালান। প্রাতিষ্ঠানিক প্রসবের ক্ষেত্রেও তাঁদের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। কিন্তু শৈলশহর দার্জিলিংয়ে এতদিন পর্যন্ত ছিল না কোনও আশাকর্মী। ফলে পাহাড়বাসীরা সরকারি চিকিৎসা পরিষেবা থেকে কিছুটা হলেও বঞ্চিত ছিলেন। এটা উপলব্ধি করতে পেরেই বছর খানেক আগে পাহাড়ে আশাকর্মী নিয়োগের উদ্যোগ নেওয়া হয়।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, দার্জিলিং শহর ও গ্রামীণ এলাকায় আশাকর্মী নিয়োগের ব্যাপারে রাজ্য সরকারের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়। তা বিবেচনা করার পর পাহাড়জুড়ে সমীক্ষা চালায় স্বাস্থ্যদপ্তর। তারা ৩০০-৫০০ বাসিন্দা পিছু একজন করে আশাকর্মী নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়। সেই মতো প্রায় পাঁচমাস আগে আশাকর্মীর ৯৮৩টি পদ অনুমোদন করে স্বাস্থ্যভবন। যার মধ্যে কার্শিয়াংয়ে ১৮০টি, বিজনবাড়িতে ২৮৫টি, সুখিয়াপোকরিতে ২৫১টি, তাকদায় ১৬১টি এবং মিরিকে ১০৬টি পদ রয়েছে। ইতিমধ্যে পরীক্ষা নিয়ে কার্শিয়াংয়ে ১৬৩ জন, বিজনবাড়িতে ২১১ জন, সুখিয়াপোকরিতে ১৯৩ জন, তাকদায় ১১৩ জন এবং মিরিকে ৯২ জনকে নিয়োগ করা হয়েছে। এঁদের শিক্ষাগত যোগ্যতা মাধ্যমিক উত্তীর্ণ। বয়স ৩০-৪০বছরের মধ্যে। এসসি এবং এসটি সম্প্রদায়ভুক্ত পরিবারের মহিলাদের বয়সের ক্ষেত্রে কিছুটা ছাড়া রয়েছে। সকলে পাহাড়বাসী। এঁদের প্রত্যেকের প্রশিক্ষণ চলছে। মাসে তাঁরা সাড়ে ৩৫০০ টাকা করে পাবেন। পাশাপাশি পারফরমেন্সের নিরিখে তাঁরা উৎসাহ ভাতা পাবেন। শীঘ্রই তাঁরা কর্মস্থলে যোগ দেবেন। এরপর বাকি ২১১টি পদ পূরণে উদ্যোগ নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, চলতি মাসেই শিলিগুড়ি সহ পাহাড় সফরে আসতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রশাসন সূত্রে খবর, এই সফরের প্রশাসনিক বৈঠকে পাহাড়ে আশাকর্মী নিয়োগের ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রী জানতে চাইতে পারেন। সম্ভবত সেই কারণেই ওই কর্মীদের প্রশিক্ষণে জোর দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, আশাকর্মীদের নিয়োগ কমিটির চেয়ারম্যান পদে রাজ্যসভার সংসদ সদস্য শান্তা ছেত্রি এবং সম্পাদক পদে স্থানীয় মহকুমা শাসক রয়েছেন। এর বাইরে স্বাস্থ্যদপ্তরের ও প্রশাসনের আধিকারিকদের একাংশ নিয়োগ কমিটিতে আছেন। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, নিয়ম অনুসারে সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার পর সংশ্লিষ্ট পদগুলির জন্য নিয়োগ পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল।
এরবাইরে আরএক পাহাড়ি জেলা কালিম্পং এবং জিটিএ এলাকাতেও আশাকর্মী নিয়োগের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কালিম্পং ও জিটিএ এলাকায় প্রায় ৫০০ জন আশাকর্মী নিয়োগ করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।