দীর্ঘমেয়াদি সঞ্চয় ও ব্যবসা থেকে অর্থাগম যোগ। প্রেমের প্রস্তাব পেতে পারেন। পুজো পাঠে মন। ... বিশদ
বৃহস্পতিবার পঞ্চায়েত সদস্যদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দিয়ে তাদের সঙ্গে নিয়ে গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে যান মাথাভাঙার বিধায়ক তথা তৃণমূলের জেলা সভাপতি বিনয়কৃষ্ণ বর্মন। এদিন প্রধান রুম্পা বর্মন জানান, তিনি তৃণমূলের টিকিটে নির্বাচনে জিতে প্রধান হয়েছেন। গত লোকসভা নির্বাচনের পর ভয় দেখিয়ে, হুমকি দিয়ে তাঁকে বিজেপিতে যোগদান করতে বাধ্য করা হয়েছিল। কিন্তু তাঁকে কাজ করতে দেওয়া হয়নি। সমস্ত ব্যাপারে নাক গলাতো স্থানীয় বিজেপির লোকজন। তিনি তৃণমূলেরই লোক, তাই আবার তৃণমূলেই ফিরে এলেন।
গত লোকসভা নির্বাচনের পর জেলাজুড়ে একটার পর একটা গ্রাম পঞ্চায়েত তৃণমূল কাছ থেকে কেড়ে নেয় বিজেপি। বিজেপিতে যোগদান করার হিড়িক পড়ে যায় তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যদের মধ্যে। হাজরাহাট -১ পঞ্চায়েতের প্রধান সহ ৭ জন পঞ্চায়েত সদস্য বিজেপিতে যোগদান করেন। ওই পঞ্চায়েতে মোট ১৩ জন সদস্য রয়েছেন। পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূলের ১১ জন ও বিজেপির ২ জন সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। প্রধান সহ ৭ জন বিজেপিতে যাওয়ায় পঞ্চায়েতের ক্ষমতা বিজেপির হাতে চলে যায়। প্রধান বিজেপিতে যোগদান করার পরই এই পঞ্চায়েতে আদি বনাম নব্য বিজেপির দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসে। বিজেপিতে যোগ দেওয়া প্রধানের বিরুদ্ধে কাটমানি নেওয়ার অভিযোগে তাঁর বাড়ি ঘেরাও করেন বিজেপিরই কর্মী-সমর্থকরা। তাঁরা আবার এলাকায় বিজেপির পুরোনো কর্মী-সমর্থক বলে পরিচিত। দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষও হয়, চলে গুলিও। এই ঘটনার পর থেকে স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে প্রধানের দূরত্ব তৈরি হয়। তৃণমূল এই সুযোগকে কাজে লাগিয়েই আবার পঞ্চায়েতটি নিজেদের দখলে নিয়ে আসল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
তৃণমূলের জেলা সভাপতি বিনয়কৃষ্ণ বর্মন বলেন, বিজেপি যে একটি অগণতান্ত্রিক দল তা নিয়ে আর নতুন করে বলার কিছু নেই। এরা জোর করে আমাদের পঞ্চায়েত প্রধানদের নিজেদের দলে নিয়েছিল। এখন সবাই সেটা বুঝতে পেরেছে।
বিজেপির জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অভিজিৎ বর্মন অবশ্য নব্য-পুরোনো দ্বন্দ মানতে চাননি। তিনি বলেন, শুধু হাজরাহাট-১ গ্রাম পঞ্চায়েত নয়, জেলাজুড়ে যে সমস্ত পঞ্চায়েত সদস্য তৃণমূল ছেড়ে আমাদের দলে এসেছিলেন, তাঁদের ভয় দেখিয়ে নিজেদের দিকে নিয়ে যাচ্ছে তৃণমূল। হাজরাহাটে প্রধানের সঙ্গে স্থানীয় নেতৃত্বের মতানৈক্য হয়েছিল। সেটা মিটেও গিয়েছে। তৃণমূলের ভয়েই আবার প্রধান সহ পঞ্চায়েত সদস্যরা ফিরে গিয়েছেন।
তবে রাজনৈতিক মহলের মতে গত লোকসভা নির্বাচনের পর বিজেপিতে তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিদের একটি অংশ গেলেও তাঁদের বিশেষ গুরত্ব দেওয়া হয়নি। বরং পুরোনো বিজেপি কর্মীরাই তাঁদের উপর ছড়ি ঘুরিয়েছেন। সেজন্যই ক্ষিপ্ত হয়ে অনেকে আবার তৃণমূলে ফিরে যাচ্ছেন। হাজরাহাট-১ গ্রাম পঞ্চায়েতেও একই ঘটনা ঘটেছে। নতুন করে বিজেপিতে আসা প্রাক্তন তৃণমূলীদের সংগঠনের কোনও কাজেই দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। এতেই গেরুয়া শিবিরের প্রতি মোহভঙ্গ হয়েছে তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যাওয়া জন প্রতিনিধিদের।