বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
শহরের ২১ নম্বর ওয়ার্ডে কয়েকদিন আগেই থাবা বসিয়েছে ডেঙ্গু। ইতিমধ্যে ডেঙ্গুর উপসর্গ নিয়ে নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন থাকাকালীন ওয়ার্ডের এক শিক্ষিকার মৃত্যু হয়েছে। তারপর সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড পরিদর্শনে যান পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব। এমনকি শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়র সিপিএমের অশোক ভট্টাচার্য ওই ওয়ার্ডে গিয়ে ডেঙ্গু সম্পর্কে বাসিন্দাদের সচেতন করেন। এই অবস্থায় সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডে ডেঙ্গু আক্রান্ত আরও চার রোগীর হদিশ মিলেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওয়ার্ডের রবীন্দ্রনগরের বাসিন্দা নার্সিংহোম কর্মী ও তাঁর তিন মাসের পুত্রসন্তান কয়েকদিন আগে জ্বর নিয়ে শহরের একটি নার্সিংহোমে ভর্তি হন। রক্ত পরীক্ষা করার পর জানা গিয়েছে, তাঁরা দু’জনেই ডেঙ্গু আক্রান্ত।
আক্রান্ত ব্যক্তির মা বলেন, কয়েকদিন আগে আমাদের বাড়ির মালিক ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। আরও কয়েকজন প্রতিবেশী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন। এখন আমার ছেলে ও নাতির ডেঙ্গু হয়েছে। আমরা সারা বছর মশারি ব্যবহার করি। ঘরের প্রতিটি অংশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা হয়। তার পরেও ছেলে ও নাতি কীভাবে ডেঙ্গু আক্রান্ত হল তা বুঝতে পারছি না।
রাবীন্দ্রনগরের পাশেই দাসপাড়া। সেখানেও আরও দু’জন যুবক ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। পুরসভা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডে এই চার রোগীকে নিয়ে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৯ জন। এদিন দুপুরে রবীন্দ্রনগর ও দাসপাড়ার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায় পিচের রাস্তা পরিষ্কার। তবে রাস্তার দু’ধারে ব্লিচিং পাউডার ছড়ানো হয়েছে। বেশ কিছু নিকাশি-নালায় জল জমে আছে। তাতে প্লাস্টিক, কাগজ, গাছের পাতা পড়ে আছে। নালাগুলিই মশার আঁতুর ঘরে পরিণত হয়েছে বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের সন্দেহ।
শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়র সিপিএমের অশোক ভট্টাচার্য বলেন, সমগ্র পরিস্থিতি নজরে রয়েছে। মশার বংশ নিধন করতে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডে বিশেষ অভিযানে নামা হয়েছে। পাশাপাশি বাসিন্দাদেরও সতর্ক করা হচ্ছে।
অন্যদিকে মশা ধরতে মঙ্গলবার ২১ নম্বরের ওয়ার্ডের তিনটি বাড়িতে পাতা হয় লাইট ট্রাপ। স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, বিদ্যুতের সাহায্যে বাতি ওয়ালা ওই ফাঁদ চালানো হয়। লাইট জ্বলার পাশাপাশি তাতে এক ধরনের রাসায়নিক পদার্থ আছে। সেই পদার্থের আকর্ষণেই মশা, মাছি সহ বিভিন্ন ধরনের পতঙ্গ ফাঁদে জড়িয়ে পড়ে। ২১ নম্বর ওয়ার্ডে বসানো তিনটি ফাঁদে অসংখ্য পতঙ্গ ফেঁসেছে। গবেষণার জন্য সেগুলি থেকে পূর্ণ বয়স্ক মশা বাছার কাজ চলছে। পাশাপাশি এদিন শহরের ২ এবং ৩ নম্বর ওয়ার্ডে সমীক্ষা চালানো হয়। সেখানে হাজির ছিলেন জেলার উপমুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক-২ তুলসী প্রামাণিক। এদিন দু’টি ওয়ার্ডের ১০টি জায়গা থেকে মশার লার্ভাও সংগ্রহ করা হয়। স্বাস্থ্যদপ্তরের এক আধিকারিক বলেন, ডেঙ্গু রোগের বাহক মশার চরিত্র বোঝার জন্যই এমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি মশার উপদ্রব কমাতে পুরসভা ও প্রশাসনকে ভেক্টর কন্ট্রোল টিম ও সিটিজেন টাস্ক ফোর্সকে আরও সক্রিয় করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।