বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
এবছর বাজারের এই দুর্দশার জন্য একশো দিনের কাজের প্রসঙ্গ টেনে কেন্দ্রীয় সরকারের দিকেই আঙুল তুলেছেন ময়নাগুড়ি ব্লকের তৃণমূল নেতারা। তবে তৃণমূলের তোলা সকল অভিযোগ উড়িয়ে বিজেপির দাবি, তৃণমূলের অরাজকতার ফলেই বাজারের এই অবস্থা।
ময়নাগুড়ি ব্লকের রাজারহাট এলাকার ব্যবসায়ী ক্ষিতীশ সরকার বলেন,আমি পেশায় একজন কাপড় বিক্রেতা। চলতি বছরে বিক্রিবাট্টা একদম ভালো হয়নি। ২০ থেকে ২৫ লক্ষ টাকার কাপড় মজুদ করেছিলাম। কিন্তু ২ লক্ষ টাকারও বিক্রি করতে পারিনি। এই অবস্থায় কী করব, তা নিয়ে চিন্তায় পড়ে গিয়েছি। ময়নাগুড়ি সদর এলাকার এক কাপড় ব্যবসায়ী বাপিন গুহ বলেন, চলতি বছরে ব্যবসা খারাপ হয়েছে। ত্রিশ থেকে চল্লিশ শতাংশ বিক্রি কম হয়েছে।
বাজারের এই পরিস্থিতির কারণ হিসেবে তৃণমূলের ময়নাগুড়ি-১ ব্লক আহ্বায়ক সুভাষ বসু বলেন, মূলত এনআরসি আতঙ্ক ও একশো দিনের কাজ বন্ধ হয়ে থাকার কারণেই বাজারের এই পরিস্থিতি। এজন্য কেন্দ্রীয় সরকারই দায়ী। প্রতিবছর পুজোর আগে ময়নাগুড়ি ব্লকের ১৬ টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় একশো দিনের কাজে ২০ থেকে ২৫ কোটি টাকা ঢোকে। কিন্তু লোকসভা নির্বাচনের পর থেকে একশো দিনের কাজ বন্ধ হয়ে রয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার এই একশো দিনের কাজে নানা বাধা সৃষ্টি করে রেখেছে। নদীতে বাঁধ দেওয়া যাবে না, কাঁচা রাস্তা করা যাবে না সহ বিভিন্ন নিয়ম করে রেখেছে। এর উপর লোকসভা ভোটের পর নানাভাবে একশো দিনের কাজের সুপারভাইজারদের ধমকি দিয়েছিল বিজেপি নেতা-কর্মীরা। এসবের ফলেই মানুষজন তাঁদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়ে পড়েছে। আর এই কাজ বন্ধের প্রভাব পড়েছে বাজারে। অপরদিকে এনআরসি আতঙ্ক তো রয়েছেই। এনআরসি নিয়ে মানুষজন এমনভাবে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন যে তাঁরা কাগজ জোগাড় করবেন, নাকি নতুন জামা কাপড় কিনবেন?
বিজেপির জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি দেবাশিস চক্রবর্তী বলেন, এনআরসি’র নামে মানুষকে ভুল বোঝাচ্ছে তৃণমূল। সেজন্যই লোকজনের মনে ভয়ের সঞ্চার হয়েছে। অপরদিকে, রাজ্য সরকারের ভ্রান্ত আর্থিক নীতি, একশো দিনের নামে সরকারি টাকা নয়ছয়, সঠিক সময়ে কাজের হিসেব দিতে না পারা —এসব কারণেই আজ কাজ বন্ধ। এজন্য রাজ্য সরকার দায়ী। তৃণমূলের নেতাদের কথা মানুষ আর শোনেন না। এরপর মানুষ এই সরকারের কাছে কৈফিয়ত চাইবে। বর্তমানে পুজোর বাজার এমন হওয়ার পেছনে রাজ্য সরকারই দায়ী।