কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
রায়গঞ্জ মহিলা থানার এক আধিকারিক বলেন, শিক্ষিকা লিখিত অভিযোগ না করলেও মাসখানেক আগে মহিলা থানায় এসে দুই মেয়ের অত্যাচারের কথা জানিয়েছিলেন। রায়গঞ্জ থানার আইসি সুরজ থাপা বলেন, শিক্ষিকার দুই মেয়ের উপর এদিন বাসিন্দারা চড়াও হয়েছিল। তাদের পুলিস উদ্ধার করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। এটি খুন না আত্মহত্যার ঘটনা এখনও তা স্পষ্ট নয়।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, অষ্টমীর দিন থেকে ওই শিক্ষিকাকে পাড়ায় দেখা যায়নি। তাঁর নিখোঁজ নিয়ে পুলিসে কোনও অভিযোগও হয়নি। এক প্রতিবেশী বলেন, ওই বাড়ি থেকে দু’দিন আগে একটা উৎকট গন্ধ আসছিল। শিক্ষিকার দুই মেয়ে প্রতিবেশীদের কাউকেই বলেনি তাদের মাকে পাওয়া যাচ্ছে না। শনিবার সকালে বাড়ি থেকে ৫০০ মিটার দূরের গোয়ালপাড়ার একটি পুকুরে মহিলার মৃতদেহ ভাসতে দেখে বাসিন্দাদের সন্দেহ হয়। রায়গঞ্জের পূর্ব কলেজপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা বলে বাসিন্দাদের সন্দেহ হয়। তাঁরাই শিক্ষিকার পাড়ায় খবর দিলে দুই মেয়ে সেখানে গিয়ে মায়ের দেহ শনাক্ত করে। শিক্ষিকার দুই মেয়ে এরপর পাড়ায় এলে মহিলারা তাদের মারধর করে। এরপর রায়গঞ্জ থানার পুলিস ঘটনাস্থলে এসে দুই মেয়েকে থানায় নিয়ে যায়। মৃত শিক্ষিকার বড় মেয়ে রায়গঞ্জ শহরের একটি কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী। ছোট মেয়ে দশম শ্রেণীতে পড়ে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, শিক্ষিকার দুই মেয়ে উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপন করে। তারা নেশায় আসক্ত। অনেকদিন গভীর রাতে তাদের বাড়ি ফিরতে দেখা গিয়েছে। বাড়িতে বহিরাগতদের আনাগোনাও ছিল। স্থানীয় ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার অসীম অধিকারী বলেন, পুজোর আগে ওই শিক্ষিকা আমার কাছে এসে দুই মেয়ের নামে অত্যাচারের অভিযোগ করেছিলেন। মেয়েরা টাকার জন্য তার উপর চাপ দিত ও অত্যাচার করত। তাই রায়গঞ্জ থানার পুলিসের কাছে অস্বাভাবিক ওই মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত দাবি করেছি। শিক্ষিকার প্রতিবেশী ও আত্মীয় দুলালি ভৌমিক বলেন, সপ্তমীর সন্ধ্যায় একবার কথা হয়েছিল। তারপর থেকে তাঁকে দেখতে পাইনি। মেয়েরাও কিছু জানায়নি। আজই পুকুরে মৃতদেহ ভেসে ওঠার পর সব জানলাম।
শিক্ষিকা কয়েকদিন আগেই মারা গিয়েছে সেবিষয়ে নিশ্চিত তদন্তকারীরা। মৃতদেহের মাথার চুল উঠে গিয়েছে। শরীর ফুলে দুর্গন্ধ ছড়িয়েছে। নিছকই এটি আত্মহত্যার ঘটনা নাকি দুষ্কৃতীরা কোথাও খুন করে পুকুরের জলে মৃতদেহ ফেলে গিয়েছে কিনা তা পুলিস তদন্ত করে দেখছে। মৃত শিক্ষিকার দুই মেয়েকে আটক করে পুলিস বাড়িটি তালাবন্ধ করে দিয়েছে। ঘটনার কিনারা করতে শিক্ষিকার দুই মেয়েকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে রায়গঞ্জ থানার পুলিস। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতের স্বামী রণজিৎ রায় পেশায় স্কুল শিক্ষক ছিলেন। ২০০৮ সালে তাঁর মৃত্যু হয়। স্বামীর মৃত্যুর পর কল্পনাদেবী শিক্ষিকার চাকরি পান। তিনি দুই মেয়েকে নিয়ে থাকতেন। বাসিন্দাদের অভিযোগ, মেয়েদের মডেল হওয়ার স্বপ্ন, উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপনের জন্য দৈনিক হাতখরচের টাকা নিয়ে মাঝেমধ্যেই মা মেয়েদের গোলমাল হতো।