বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
জলপাইগুড়ি জেলা কিষাণ খেত মজদুর তৃণমূল কংগ্রেস কমিটির জেলা সভাপতি দুলাল দেবনাথ বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কগুলি কৃষকদের লোন দিচ্ছে না। কেন্দ্রীয় সরকারের কৃষিনীতির জন্য কৃষকরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন। বিজয়া উপলক্ষ্যে মুখ্যমন্ত্রীর শুভেচ্ছা বার্তা জানিয়েছি সিপিএম ও কংগ্রেস নেতাদের। পাশাপাশি কেন্দ্রের কৃষক বিরোধী নীতির বিরুদ্ধে যৌথ কর্মসূচী নেওয়ার জন্য আহ্বান করেছি তাঁদের।
কংগ্রেস নেতা তথা প্রাক্তন সাংসদ দেবপ্রসাদ রায় বলেন, দেশজুড়ে ক্রমশ বেড়ে ওঠা সাম্প্রদায়িক শক্তিগুলির বিরুদ্ধে ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিগুলির এক হয়ে লড়াই করা দরকার। যে কোনও স্তরেই তাদের এক হওয়া প্রয়োজন।
এদিকে জলপাইগুড়ি জেলা কংগ্রেস সভাপতি নির্মল ঘোষ দস্তিদার বলেন, দুলাল দেবনাথ শুভেচ্ছা জানাতে এসেছিলেন। অনেক রাজনৈতিক কথাবার্তা হয়েছে। তাঁর নির্বাচিত এলাকায় বিজেপির উত্থান সর্ম্পকে সর্তক করেছি তাঁকে। কিন্তু তৃণমূলের সঙ্গে এক মঞ্চে আন্দোলনের নামার কোনও ইচ্ছা আমাদের নেই।
সারা ভারত কৃষক সভার জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি জিতেন দাস বলেন, অনেকেই বিজয়ার শুভেচ্ছা জানাতে আসেন। দুলালবাবুও এসেছিলেন। শুভেচ্ছা বিনিময় হয়েছে। তবে তাঁদের নীতির সঙ্গে আমাদের নীতির কোনও মিল নেই। পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলের কার্যকলাপের জন্য সাধারণ মানুষ তাদের থেকে দূরে সরে গিয়েছেন। বিজেপি’র বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তৃণমূলের সঙ্গে হাত মেলানোর কথা আমরা কল্পনাও করছি না।
সাম্প্রতিক লোকসভা নির্বাচনে জলপাইগুড়িতে আশাতীত ভালো ফল করেছে বিজেপি। বিপুল ভোটে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থীকে পরাজিত করেছেন বিজেপি প্রার্থী। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অধিকাংশই জলপাইগুড়িতে বিজেপির উত্থান সর্ম্পকে আগে থেকে কিছু আঁচ করতে পারেননি। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল আর কাটমানি তাদের বিপক্ষে গিয়েছে। সেইসঙ্গে সিপিএম ও কংগ্রেসের অধিকাংশ ভোটই বিজেপি পেয়েছে। তাই সাংগঠনিক জোর সেই অর্থে না থাকলেও বিরোধী ভোট এককাট্টা হতেই জয়ের পথ সহজ হয়েছে বিজেপি’র। তাই বিজেপি কাঁটা তুলতে সিপিএম ও কংগ্রেসকে নিয়েই আন্দোলনে নামতে চাইছে তৃণমূল। বিরোধী ভোট এক করে ময়দানে ফিরতে চাইছে তারা।
সম্প্রতি এনআরসি ইস্যুতে খানিকটা ব্যাকফুটে গিয়েছে বিজেপি। জলপাইগুড়ি জেলায় এনআরসি আতঙ্কে একাধিক আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। এনআরসি লাগু হওয়ার আশঙ্কায় নিজের কাগজপত্র ঠিক করতে লম্বা লাইন দেখা যাচ্ছে বিডিও অফিসগুলিতে। পুজোয় উৎসবে সবাই মেতে উঠলেও পুজোর পরে বিজেপি বিরোধী হাওয়া যাতে জারি থাকে সেই প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তৃণমূল। কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে পুজোর পরেই কৃষক আন্দোলন গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়েছে তারা। সেই আন্দোলনের ঝাঁজ বাড়াতে বিজেপি-বিরোধীদের এককাট্টা করার প্রচেষ্টা নিয়েছে তারা। তবে আপাতত সিপিএম ও কংগ্রেস তৃণমূলের প্রস্তাবে রাজি না হওয়াতে সেই কৌশল ভেস্তেই গেল।