কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
এবছর দুর্গা পুজোয় প্রচলিত রেস্তরাঁর পাশাপাশি রাস্তার ধারে কিংবা ফুটপাথে বসে পড়া খাবারের দোকানে ছিল তাক লাগানো ভিড়। পঞ্চমীর দিন থেকেই এবার প্রতিমা দর্শনে রাস্তায় নেমে পড়েছিল মানুষ। শহরের বাসিন্দাদের পাশাপাশি জেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকেও হাজার হাজার মানুষ ঘুরে বেরিয়েছেন ইংলিশবাজারের মণ্ডপে মণ্ডপে। প্রতিমা দর্শনের পাশাপাশি উপচে পড়া ভিড় দেখা গিয়েছে চাট, ফুচকা, মোমো, চপ-ঘুগনি থেকে রোল, চাউমিনের দোকানে। এইসব দোকানিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেলে পঞ্চমীর দুপুর থেকে বিজয়া দশমীর রাত পর্যন্ত শুধু ফাস্ট ফুডের ব্যবসার পরিমাণই কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। অন্যান্য খাবার এই হিসাবের সঙ্গে জুড়লে আরও এক থেকে দেড় কোটি টাকার ব্যবসা হয়েছে শুধু খাবার দোকানেই। এই খতিয়ানের সঙ্গে অনেকটাই একমত রেস্তরাঁ মালিকরা। তাই তাঁদের মুখেও চওড়া হাসি।
মালদহ মার্চেন্ট চেম্বার অব কমার্সের সম্পাদক জয়ন্ত কুণ্ডু বলেন, এবারের পুজোয় মালদহে জামাকাপড়ের ব্যবসাকে ছাপিয়ে গিয়েছে খাবারের ব্যবসা। যেকোনও ব্যবসায়ীর মুখে হাসি ফুটলে আমাদের ভালোলাগে। একই সঙ্গে আমরা ক্ষুদ্র খাবার ব্যবসায়ীদের আবেদন জানিয়েছি, তাঁরা যেন খাবারের উৎকৃষ্টতা ও স্বাস্থ্যবিধির দিকে আরও নজর রাখেন। তাতে যে কোনও উৎসবেই এই ব্যবসা অত্যন্ত লাভজনক হবে।
মকদমপুর বাজারে মাছ বিক্রি করেন সাহাপুরের বাসিন্দা উদয় মণ্ডল। পুজোর আগে থেকে বিসর্জন পর্যন্ত প্রায় সাতদিন সন্ধ্যাবেলায় এগরোল ও চাউমিন বিক্রির অস্থায়ী দোকান করেছিলেন তিনি। নিজেই জানালেন লাভের পরিমাণ প্রত্যাশার চেয়ে বেশ খানিকটা বেশি। খাবার বিক্রেতাদের সকলেই প্রায় যথেষ্ট লাভের মুখ দেখেছেন বলে তিনি জানান। মালদহ শহরের এক নামকরা রেস্তরাঁর ম্যানেজার বলেন, খাবারের খোঁজে রাত ৩টে পর্যন্ত মানুষ এসেছে। এত মানুষকে খাবার সরবরাহ করতে গিয়ে প্রতিদিনের মেনুও কাটছাঁট করতে হয়েছে কিছুটা। কিন্তু তারপরেও ভিড় কমেনি। ভোররাতের দিকে খাবার ফুরিয়ে যাওয়ায় অনেকে রাগারাগিও করেছেন। নতুন করে খাবার বানিয়ে দেওয়ার দাবিও জানিয়েছেন কেউ কেউ।
এবার মালদহের বেশকিছু এলাকা বন্যা কবলিত থাকায় জেলা সদরে প্রতিমা দর্শনের ভিড় খানিকটা কম হবে বলে আশঙ্কা করেছিলেন অনেকেই। কিন্তু ফরাক্কা, ধূলিয়ান কিংবা ঝাড়খণ্ডের পাকুড়, সাহেবগঞ্জ থেকেও অনেকেই আসেন ইংলিশবাজারের প্রতিমা দর্শনে। ফলে আশঙ্কা কেটে মুখে হাসি ফুটেছে খাবার ব্যবসায়ীদের। পাঁপড় থেকে শুরু করে প্যাটিস, ফিশফ্রাই থেকে বিরিয়ানি সব কিছুই বিক্রি হয়েছে দেদার। চাহিদা কম ছিল না পরোটা, লুচি কিংবা ডালপুরিরও। সব মিলিয়ে রসনা তৃপ্তির জন্য মানুষ এই হাত খুলে খরচ করায় সকাল থেকে রাত পর্যন্ত পুজোর দিনগুলিতে ম-ম করেছে শহরের রাস্তা।