বিদ্যার্থীদের বেশি শ্রম দিয়ে পঠন-পাঠন করা দরকার। কোনও সংস্থায় যুক্ত হলে বিদ্যায় বিস্তৃতি ঘটবে। কর্মপ্রার্থীরা ... বিশদ
মদনমোহন বাড়ির কর্মী জয়ন্ত চক্রবর্তী বলেন, যথাযথ মর্যাদার সঙ্গে এবারও বড়দেবীর বিসর্জন পর্ব সমাধা হয়েছে। দশমীর দিন লম্বাদিঘিতে সকাল নটার মধ্যে প্রতিমার বিসর্জন হয়েছে। কোচবিহারের অন্যতম ইতিহাস গবেষক ও প্রাবন্ধিক দেবব্রত চাকি বলেন, রাজ আমলে বড়দেবীর প্রতিমা বিসর্জনের আগে বড় শোভাযাত্রা হতো। এখন আর তা হয় না। সেই সময়ে বিসর্জনের পর হাতির পিঠে চেপে খঞ্জনা পাখি ওড়ানো ও রাজবাড়িতে অপরাজিতা পুজোর রেওয়াজ ছিল। এখন সেই প্রথাও নেই। তবে লম্বা দিঘিতে বিসর্জনের আগে শাপলা চালের ভাত দিয়ে দেবীকে ভোগ দেওয়ার রীতি এখনও প্রচলিত রয়েছে।
কোচবিহার রাজ পরিবারের প্রচলিত এই পুজো পাঁচশো বছরেরও বেশি পুরানো। দুর্গা পুজোর প্রায় এক মাস আগে এই পুজোর প্রস্তুতি পর্ব শুরু হয়ে যায়। দেবী প্রতিমার মূল কাঠামোটিতে ময়না কাঠ ব্যবহার করা হয়। সেই ময়না কাঠকে পুজো করা হয় স্থানীয় ডাঙ্গরআই মন্দির ও পরে মদনমোহন মন্দিরে। সেখান থেকে ওই ময়না কাঠকে বড়দেবীর মন্দিরে নিয়ে আসা হয়। সেখানেই একটি ট্রলির উপরে ধীরে ধীরে বিরাট আকারের এই প্রতিমা নির্মাণ করা হয়। এই প্রতিমায় লক্ষ্মী, সরস্বতী, গণেশ ও কার্তিক দেবীর সঙ্গে থাকেন না। তার বদলে এখানে জয়া ও বিজয়া থাকেন। পুজোর দিনগুলোতে মহিষ বলি, পাঠা বলি, পায়রা বলি প্রভৃতির প্রচলন রয়েছে। এখানকার নিশাপুজোর সময়ে নির্দিষ্ট একটি পরিবারের সদস্যরা রক্ত দিয়ে আলপনা দেন। সব দিক থেকেই কোচবিহারের দেবীবাড়ি এলাকায় অবস্থিত এই বড়দেবীর পুজো অন্যান্য পুজোর থেকে একেবারেই আলাদা। কোচবিহার সহ আশপাশের জেলা থেকেও বহু মানুষ এই পুজো দেখতে আসেন।
প্রতি বছরই দশমীর দিন দেরোত্তর ট্রাস্ট বোর্ডের সদস্য ও স্থানীয় মানুষ ট্রলি ঠেলে প্রতিমাকে লম্বাদিঘির সামনে নিয়ে আসেন। সেখানে পুজোর আয়োজন করা হয়। রাজ পুরোহিত হীরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য সেখানে পুজো সারেন। সেখানেই শুয়োর ও পায়রা বলি দেওয়া হয়। এরপর বিরাট প্রতিমাকে ভাগ ভাগ করে ওই দিঘিতে বিসর্জন দেওয়া হয়। বিসর্জন দেখতে বহু মানুষ সেখানে ভিড় জমান। বিসর্জনের এক মাস পরে এখানে বামা পুজো হয়। এরপরেই মদনমোহন মদির থেকে হনুমান দণ্ড নিয়ে আসা হয়। সেটি আনার পরেই মন্দির বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরবর্তী পুজোর আগে পর্যন্ত মন্দির বন্ধ থাকে।