কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
রাজ্যের পর্যটন মানচিত্রে শৈলশহর দার্জিলিং অন্যতম। অশান্তির মেঘ কাটিয়ে পাহাড়ের পরিস্থিতি বর্তমানে স্বাভাবিক। তাই এবার পুজোয় পর্যটকদের অনেকেরই গন্তব্য শৈলশহর। কিন্তু পুজো বোনাসের দাবিতে চা শ্রমিকরা ১২ ঘণ্টার পাহাড় বন্ধের ডাক দেওয়ায় বেকায়দায় পড়েন পর্যটকরা। এদিন দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর্যটকরা শিলিগুড়িতে পৌঁছেও নির্দিষ্ট সময়ে পাহাড়ে উঠতে পারেননি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বন্ধের জেরে পর্যটকদের কেউ তেনজিং নোরগে বাস টার্মিনাস আবার কেউ এনজেপি স্টেশন চত্বরে দিনভর ঘোরাঘুরি করেন। কয়েকজন পর্যটক বলেন, পাহাড়ে হোটেল বুক করা আছে। বিকেলে বন্ধ উঠে যাবে শুনে বাস্ট্যান্ড ও স্টেশন চত্বরে ঘোরাঘুরি করছি।
কয়েকজন আবার রুট বদল করে কোচবিহার, জঙ্গল ও চা বাগান ঘেরা জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার ঘুরতে যান। তাঁরা বলেন, পাহাড় ঘুরতে এসে বন্ধের জেরে সফর সূচিতে কিছুটা বদল করলাম। শনিবার কিংবা রবিবার পাহাড়ে উঠব।
তবে দার্জিলিং ও কালিম্পং শহরগামী পর্যটকদের অধিকাংশই শিলিগুড়ি শহরের বিভিন্ন হোটেলে এদিন দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করেন। পর্যটন দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, শিলিগুড়ির মৈনাক ট্যুরিস্ট লজে থাকা পর্যটকদের এদিন সকালে দার্জিলিংয়ের উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়া কথা ছিল। বন্ধের জেরে ওই পর্যটকরা সকালে লজ থেকে বের হননি। লজের ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলে তাঁরা বিকেল পর্যন্ত সেখানেই ছিলেন। বন্ধ ওঠার পর তাঁরা পাহাড়ের উদ্দেশ্যে রওনা হন।
শিলিগুড়ি একটি বেসরকারি ট্যুর অপারেটার সংস্থার কাছ থেকেও মিলেছে একই তথ্য। ওই সংস্থার পক্ষে সম্রাট সান্যাল বলেন, দিল্লি ও দক্ষিণ ভারত থেকে পর্যটকদের পাঁচটি দল শৈলশহর ঘুরতে এসেছে। প্রতি দলে পাঁচ থেকে ছ’জন করে আছেন। এদিন সকালে দার্জিলিংয়ে পৌঁছনোর কথা থাকলেও তাঁদের শিলিগুড়িতে একটি হোটেলে দিনভর রাখা হয়। বিকেলে বন্ধ ওঠার পর তাঁদের পাহাড়ে পাঠানো হয়।
অন্যদিকে বন্ধ ঘিরে অশান্তির কোনও খবর না মিললেও দার্জিলিং, মিরিক, কার্শিয়াং, কালিম্পং সর্বত্রই দোকান বন্ধ ছিল। যানবাহনও চলাচল করেনি। সমস্ত চা বাগানও বন্ধ ছিল। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পাহাড়ের ৭৮টি চা বাগানের শ্রমিকরা বোনাসের দাবিতে আন্দোলনে শামিল হয়েছেন। চা শ্রমিক সংগঠনের জয়েন্ট ফোরামের নেতৃত্বে দার্জিলিং রেল স্টেশনে রিলে অনশন চলছে। ৬ অক্টোবর থেকে সেখানে আমরণ অনশনে বসতে চলেছেন মোর্চা নেতা বিনয় তামাং। চা শ্রমিকদের এই আন্দোলনকে সিপিএম সমর্থন করেছে।
সিপিএমের দার্জিলিং জেলা সম্পাদক জীবেশ সরকার বলেন, চা শ্রমিকদের এই বন্ধকে আমরা সমর্থন করছি। তাঁদের দাবি ন্যায্য। তা মালিক পক্ষের মেনে নেওয়া উচিত। এক্ষেত্রে রাজ্য সরকার নীরব রয়েছে।
দার্জিলিং জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র এনবি খাওয়াস বলেন, চা শ্রমিকদের দাবি ন্যায্য। এই আন্দোলনকে আমরা সমর্থন করছি। তৃণমূলের জেলা সভাপতি রঞ্জন সরকার বলেন, পাহাড়ের বিষয়ে আমাদের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সর্বদাই চিন্তিত। পাহাড়ের চা শ্রমিকদের সমস্যা শীঘ্রই মিটবে বলে আশা করছি।