কর্মক্ষেত্রে অশান্তি সম্ভাবনা। মাতৃস্থানীয় কারও শরীর-স্বাস্থ্যের অবনতি। প্রেমে সফলতা। বাহন ক্রয়-বিক্রয়ের যোগ। সন্তানের বিদ্যা-শিক্ষায় উন্নতি।প্রতিকার— ... বিশদ
মালদহের পুলিস সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, বাংলাদেশ থেকে জাল নোট এরাজ্যে ঢুকেছে। জাল নোট পাচারকারীরা আসল ভারতীয় মুদ্রার বিনিময়েই জালনোট পেত বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে। ঘটনার তদন্তে নেমে বৈষ্ণবনগরের বাসিন্দা আরও এক ব্যক্তির নাম আমরা জানতে পেরেছি। তার খোঁজ চলছে। ছোট নোট পাচারের বিষয়টি নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। যে কোনও উপায়ে পাচারকারীদের শিকড় আমাদের উপড়ে ফেলতে হবে।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার রাতে রাজা পাল সিং নামে মধ্যপ্রদেশের গোয়ালিয়রের বাসিন্দা এক ব্যক্তিকে জেলা পুলিসের গোয়েন্দারা গ্রেপ্তার করেন। ধৃতের কাছ থেকে ৬০০ পিস ২০০ টাকা ও এক হাজার পিস ৫০ টাকার জাল নোট উদ্ধার হয়। ধৃতকে রাতভর জেরা করে বৈষ্ণবগনর থানার মোহনপুর এলাকা থেকে কাফিকুল শেখ নামে এক যুবককে পুলিস গ্রেপ্তার করে। তারপর ক্রাইম ব্রাঞ্চের কর্তারা দফায় দফায় দু’জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। ধৃতদের জেরা করে গোয়েন্দারা বিভিন্ন তথ্য পায়। বৈষ্ণবনগর থানা এলাকার বাসিন্দা কাসিরুদ্দিন শেখ ওরফে ফিটু নামে এক দুষ্কৃতীকে বর্তমানে মালদহ জেলা পুলিস হন্যে হয়ে খুঁজছে। কাফিকুলকে জেরা করে গোয়েন্দারা কাসিরুদ্দিনের নাম জানতে পারেন। দু’জনে একসঙ্গে বাংলাদেশ থেকে এরাজ্যে নোট পাচার করত। কাসিরুদ্দিনের হাত ধরে কাফিকুল এই কারবারে নামে। কাফিকুল পুলিসের জালে ধরা পড়ার পর থেকে কাসিরুদ্দিন পলাতক বলে পুলিস জানিয়েছে। কাসিরুদ্দিনের নাগাল পেলে জাল নোট পাচারের মাথাদের কাছে পৌঁছনো যাবে বলে গোয়েন্দারা মনে করছেন।
এদিকে, নোট পাচারের ঘটনার তদন্তে নেমে ছাপাখানার ব্যাপারে পুলিস তথ্য জোগার করতে উঠেপড়ে লেগেছে। বাংলাদেশের রংপুর এবং ঢাকার কিছুটা দূরে জাল নোট ছাপার মেশিন রয়েছে বলে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন। সেখান থেকে প্যাকেটজাত হয়ে নোট এরাজ্যে ঢোকে। পরে তা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে দেওয়া হয়।
জেলা পুলিসের এক আধিকারিক বলেন, রংপুর এবং ঢাকার শহরতলি এলাকায় জাল নোট ছাপানো হয়। সেখান থেকে নোট ছাপিয়ে এরাজ্যের সীমান্তবর্তী এলাকায় আনা হয়। সীমান্তের কাছাকাছি বাংলাদেশের নোট পাচারকারিদের একাধিক ‘ডেরা’ রয়েছে। কাঁটাতারের বেড়ার কাছকাছি গ্রামগুলিতে তারা ডেরা বানিয়েছে। প্যাকেটবন্দি জাল নোট ওইসব ডেরায় এনে রাখা হয়। পরে তা সুযোগ বুঝে এপাড়ে পাঠানো হয়। বর্ষার মরশুমে নদীপথে নজরদারি রাখা সম্ভব হয় না। গোরু পাচারকারীদের মতো সেই সুযোগ জাল নোটের কারবারিরাও নেয়। মালদহের বিভিন্ন জায়গায় নদীর মাঝ বরাবর সীমান্ত চলে গিয়েছে। অনেক সময় ডুব সাঁতার দিয়ে পাচারকারীরা নদী পার হয়। তারা শরীরের সঙ্গে প্যাকেট বন্দি নোট বেঁধে নেয়। দুই হাজার টাকার নোট ওইভাবে পাচার হয় বলে আমরা আগেই জেনেছি। তবে ৫০ এবং ১০০ টাকার নোট বেশি সংখ্যক থাকায় কীভাবে তা পাচার করা হয়েছে তা জানার চেষ্টা চলছে।
পুলিস সুপার বলেন, আমরা যাবতীয় তথ্য সিআইডিকে দিয়ে দিয়েছি। সিআইডি ওইসব তথ্য এনআইএ সহ অন্যান্য কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার কাছে পাঠিয়ে থাকে। তবে এখনও পর্যন্ত আমরা কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা বা সিআইডি’র তরফে কোনও সাড়া পাইনি। দ্রুত এব্যাপারে তারা পদক্ষেপ নেবে বলে আমাদের অনুমান। তিনি আরও বলেন, জাল নোটের বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর। আমি নিজে ধৃতদের জেরা করে এব্যাপারে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করছি। সেইমতো পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।