ঝগড়া এড়িয়ে চলার প্রয়োজন। শরীর স্বাস্থ্য বিষয়ে অহেতুক চিন্তা করা নিষ্প্রয়োজন। আজ আশাহত হবেন না ... বিশদ
মৃত কিশোরের মা গীতা মাহাতো বলেন, ছেলের সাত বছর বয়সে ওকে ওই হোমে পাঠানো হয়। গতকাল আমরা জানতে পারি যে মহাদেব অগ্নিদগ্ধ হয়েছে। আমি হাসপাতালে এসে ছেলের কাছে জানতে পারি যে একটা হাতঘড়ি নিয়ে ওর সঙ্গে কয়েকজনের গণ্ডগোল হয়েছিল। সেই সময়ে আবাসিক তিন জন ছেলে ওর গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে দেশলার কাঠি জ্বালিয়ে দেয়। পরে আমি পুলিসে অভিযোগ দায়ের করেছি।
ওই হোমের ইনচার্জ প্রীতীশ চন্দ বলেন, সোমবার সকালের খাবার ওই ছেলেটি স্কুলে যাওয়ার আগেই খেয়ে নিয়েছিল। আমি খাবার পরিবেশন করছিলাম। সেই সময়ে হাত ধুতে আমি আমার ঘরে ঢুকি। তখন মহাদেবকে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় দেখতে পাই। সাত বছর ধরে আমাদের এখানে ছিল মহাদেব। কখনও খারাপ কোনও আচরণ দেখিনি। ঘড়ি নিয়ে কোনও সমস্যা হয়ে থাকলে তো আমাদের জানাত! কেউ ওর গায়ে আগুন ধরিয়ে দেবে সেটা অবাস্তব। পুলিস তদন্ত করে দেখুক।
কোচবিহারের ডিএসপি (সদর) সমীর পাল বলেন, পনেরো বছরের এক কিশোর ওই হোমে থাকতো। তার মৃত্যু হয়েছে। ওই কিশোরের মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
কোচবিহার ডিস্ট্রিক্ট চাইল্ড ওয়েল ফেয়ার কমিটির সদস্য কৃষ্ণা দত্ত বিশ্বাস বলেন, ওই হোমে অনেকবার পরির্দশনে গিয়েছি। সেখানে কোনও প্রাচীর নেই। সঠিক পরিকাঠামো নেই। বাচ্চাদের পক্ষে মোটেই নিরাপদ বলে মনে হয়নি। এই বিষয়টি নিয়ে উচ্চপর্যায়ের তদন্ত হওয়া উচিত।
ওই হোম সূত্রে জানা গিয়েছে, সেখানে মোট ৬৮ জনের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। কর্তৃপক্ষের দাবি, এটি একটি ‘গভর্নমেন্টএইডেড হোম’। সোমবার সেখানে ৫৭ জন ছিল। মৃত কিশোর ঘুঘুমারি হাইস্কুলে পড়াশুনো করতো। কেউ তার গায়ে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল, নাকি কোনওভাবে তার গায়ে আগুন লেগে যায় তা নিয়ে ধন্দ দেখা দিয়েছে। কেন এই বিষয়টি সবার নজর এড়িয়ে গেল এসব নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। মৃত কিশোরের মায়ের অভিযোগ, তার ছেলেকে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় মেডিক্যাল কলেজে ভরতি করে দেওয়া পরও পুলিসে কোনও অভিযোগ দায়ের করেনি কর্তৃপক্ষ। পরে তিনি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
অপর দিকে, হোম কর্তৃপক্ষের দাবি, কিশোরের উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে যাতে শিলিগুড়ি নিয়ে যাওয়া হয়, সেজন্য তাঁরা পরিবারকে বলেছিলেন। সেই বিষয়ে সাহায্য করতেও তারা রাজি ছিল। কিন্তু পরিবারের পক্ষ থেকে বন্ড সই করে কিশোরটিকে কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজেই রেখে দেওয়া হয়েছিল। হোমের ভিতরে এভাবে অগ্নিদগ্ধ হওয়া ও পরে কিশোরের মৃত্যুকে ঘিরে বিভিন্ন মহলে চর্চা শুরু হয়েছে।