কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
জেলার পুলিস সুপার সন্তোষ নিম্বালকার বলেন, ঘটনার তদন্ত চলছে। গণপিটুনি রুখতে ও এব্যাপারে সচেতনতা বাড়াতে সচেতনতামূলক প্রচার চলছে। দিনহাটার যে এলাকায় এই ঘটনা ঘটেছে সেই এলাকায় মাইকিং করতে বলা হয়েছে।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, জোসেফ দিন কয়েক আগে তাঁর বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন। তিনি মানসিক সমস্যায় ভুগছেন বলে পুলিস তাঁর পরিবারের কাছ থেকে জানতে পেরেছে। জানা গিয়েছে, বাড়ি থেকে বেরিয়ে জোসেফ প্রথমে আলিপুরদুয়ার চলে গিয়েছিলেন। সেখানে আলিপুরদুয়ার স্টেশন সংলগ্ন এলাকাতেও তাঁকে মারধর করা হয়েছিল। এরপর কীভাবে তিনি দিনহাটা চলে এসেছেন তা জোসেফ স্পষ্ট করে পুলিসকে বলতে পারেননি। কারণ জোসেফের ধারণা ছিল যে তিনি আলিপুরদুয়ারেই রয়েছেন।
এদিকে শনিবার সন্ধ্যায় দিনহাটার খড়খড়িয়া এলাকায় জোসেফকে ইতস্তত ঘুরতে দেখে স্থানীয়দের সন্দেহ হয়। এলাকার বাসিন্দাদের একাংশ তাঁকে ঘিরে ধরে। এরপরেই ছেলেধরা সন্দেহে তাঁকে মারধর করা শুরু হয়। কয়েকশো মানুষ তাঁকে ঘিরে ধরে গণপিটুনি দেয়। তার ফলে গুরুতর আহত হয়ে পড়েন ওই ব্যক্তি। এরপর পুলিস গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে।
বেশ কিছু দিন ধরেই কোচবিহার সহ আশপাশের জেলাগুলিতে ছেলেধরা সন্দেহে ভবঘুরে, মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তি, ফেরিওয়ালা সহ অপরিচিত কোনও ব্যক্তিকে মারধর ও গণপিটুনি দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটছে। কিছু দিন আগেই কোচবিহারের বাণেশ্বর এলাকায় অসমের এক ব্যক্তিকে এই কায়দাতেই গণপিটুনি দেওয়া হয়েছিল। ওই ব্যক্তি বাণেশ্বর এলাকায় গুঁইসাপ ধরতে এসেছিলেন কলে জানা গিয়েছে। অসম থেকে ট্রেনে চেপে তিনি ওই এলাকায় নামেন। তারপর বস্তা হাতে একটি নীচু জমিতে গুঁইসাপ খুঁজছিলেন। সেই সময়ে কিছু মানুষ তাঁকে ধরে গণপিটুনি দেয়। গুরুতর আহত অবস্থায় ওই ব্যক্তিকে কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভরতি করতে হয়েছিল।
শুধুমাত্র কোচবিহারেই নয়, এধরনের ঘটনা ঘটছে উত্তর দিনাজপুরেও। সেই জেলার ইসলমাপুরের রামগঞ্জে দুই ফেরিওয়ালাকে ছেলেধরা গুজবে মারধর করা হয়েছে শনিবার দুপুরেই। বেশ কয়েক জায়গায় ভবঘুরে ও ফেরিওয়ালাদের উপরে চড়াও হওয়ার ঘটনা নজরে আসছে। একই সঙ্গে জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার জেলাতেও একইভাবে বেশ কয়েক জায়গায় ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনি দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। গত ৪ সেপ্টেম্বর জলপাইগুড়ি জেলার রাজগঞ্জ এলাকায় এক ব্যক্তিকে মারধর এমনকী খুনের চেষ্টা পর্যন্ত করা হয়।
ঘটনাগুলিকে কেন্দ্র করে এলাকাগুলিতে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়াচ্ছে। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, গণপিটুনির কবল থেকে উদ্ধার করার পর জোসেফের পরিবারের সঙ্গে পুলিস যোগাযোগ করার চেষ্টা শুরু করে। পুলিস জানতে পারে, ওই ব্যক্তির স্ত্রী ও সন্তান রয়েছেন। তাঁর শ্বশুর গণেশ সাঁওতালের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পেরেছে পুলিস। এদিকে, এই ধরণের ঘটনা রুখতে পুলিস এলাকায় এলাকায় সচেতনতা মূলক প্রচার করবে বলে জানিয়েছে। গুজবে কান না দেওয়ার কথা বলে মাইকিং করা হবে বলেও পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে।