সঠিক বন্ধু নির্বাচন আবশ্যক। কর্মরতদের ক্ষেত্রে শুভ। বদলির কোনও সম্ভাবনা এই মুহূর্তে নেই। শেয়ার বা ... বিশদ
পুলিস এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মোথাবাড়ি থানার কবিরাজটোলা গ্রামে আনজিমার বাপের বাড়ি। ২০১৫ সালে তিনি মাধ্যমিক পাশ করেন। তারপর দেবীপুরের বাসিন্দা সাজিউলের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। সাজিউল পেশায় টোটোচালক। ওই দম্পতির একটি দেড় বছরের মেয়ে রয়েছে। আনজিমা সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই আনজিমার উপর শ্বশুরবাড়ির লোকজন অত্যাচার চালাত। স্বামী সহ শ্বশুরবাড়ির অন্য সদস্যরা তাঁকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করত। আনজিমাকে শ্বশুরবাড়িতে ঠিকমতো খেতে দেওয়া হতো না। প্রতিবাদ করলেই মারধর করা হতো।
মৃতার মায়ের অভিযোগ, বিয়ের আগে থেকেই এক আত্মীয়ার সঙ্গে সাজিউলের অবৈধ সম্পর্ক ছিল। সেই কারণে জামাই আনজিমাকে সহ্য করতে পারত না। ওই মহিলার উস্কানিতেই সাজিউল স্ত্রীকে মারধর করত বলে তাঁর মায়ের অভিযোগ। সম্প্রতি অত্যাচারের মাত্রা বেড়ে গিয়েছিল। ১০ আগস্ট রাতে প্রতিবেশীদের কাছ থেকে তাঁরা মেয়ের অগ্নিদগ্ধ হওয়ার খবর পায়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে প্রথমে কালিয়াচক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় সেখান থেকে তাঁকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আনজিমা একটি মৃত সন্তান প্রসব করেন। পরে তাঁরও মৃত্যু হয়।
মৃতার মায়ের অভিযোগ, এক আত্মীয়ার সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক থাকায় মেয়ের উপর জামাই অত্যাচার করত। সেদিন রাত ১১টা নাগাদ পরিকল্পনা করে সাজিউল গ্যাস সিলিন্ডার খুলে রাখে। পরে ঘুম থেকে মেয়েকে জোর করে তুলে রান্নাঘরে পাঠায়। বাইরে থেকে রান্নাঘরের দরজা বন্ধ করে আগুন ধরিয়ে দেয়। এদিকে, অভিযুক্তরা পলাতক থাকায় তাদের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। চেষ্টা করেও মৃতার স্বামীর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। জেলার পুলি সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, মৃতার পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে একটি খুনের মামলা রুজু হয়েছে। পুলিস তদন্ত শুরু করেছে। মোথাবাড়ি থানার এক আধিকারিক বলেন, মঙ্গলবার মৃতার বাপের বাড়ির তরফে স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি এবং ননদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। সেইমতো আমরা একটি মামলা রুজু করি। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। ওই বধূকে খুন করা হয়েছে নাকি নিছক দুর্ঘটনার কারণে আনজিমা অগ্নিদগ্ধ হয়েছিলেন তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তাঁর মৃত্যুকালীন জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছে। তা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।