কর্মে অগ্রগতি ও নতুন কাজের বরাত প্রাপ্তি। আইটি কর্মীদের শুভ। মানসিক চঞ্চলতার জন্য বিদ্যাচর্চায় বাধা। ... বিশদ
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের মাঝামাঝি জেলা বিজেপি’র সভাপতির দায়িত্ব নেন প্রাক্তন সমর কর্মী ও ডাক বিভাগের প্রাক্তন কর্মচারী সঞ্জিত মিশ্র। সুব্রত কুণ্ডুর পরে তিনি জেলা সভাপতি হতেই বিদ্রোহ দানা বাঁধতে থাকে দলের মধ্যে। সঞ্জিতবাবুর বিরুদ্ধে বিজেপি’র রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে অভিযোগ জানান প্রাক্তন জেলা সাধারণ সম্পাদক মানবেন্দ্র চক্রবর্তী। আরও বেশ কয়েকজন নেতাও সঞ্জিতবাবুর বিরুদ্ধে প্রকাশ্যেই মুখ খোলেন। কিন্তু নিজস্ব ভঙ্গিতে মালদহে বিজেপি’কে পরিচালনা করতে থাকেন সঞ্জিতবাবু। এই সময়ে দলের রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে তাঁর মতপার্থক্য বেশ কয়েকবার প্রকাশ্যে আসে।
দল সূত্রে জানা গিয়েছে, লোকসভা নির্বাচনে সঞ্জিতবাবুর সুপারিশ কার্যত উড়িয়ে দিয়ে উত্তর মালদহে খগেন মুর্মু ও দক্ষিণ মালদহে শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরিকে মনোনয়ন দেয় বিজেপি। প্রবল ক্ষোভ হলেও নির্বাচনের প্রচারে সদলবলেই নামেন তিনি। সাফল্যও আসে। উত্তর মালদহে জয় পায় বিজেপি। দক্ষিণ মালদহে মাত্র ৮২০০ ভোটে হারে দল। হবিবপুর বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনেও জয়ী হয় দল।
তবে এই সাফল্যের পরেও মাস খানেক আগে রাতারাতি সঞ্জিতবাবুকে সরিয়ে দেওয়া হয় বিজেপি’র জেলা সভাপতির পদ থেকে। তাঁর জায়গায় আসেন আরেক প্রবীণ নেতা গোবিন্দ মণ্ডল। পদ খোয়ানোর পরে দলের জেলা কার্যালয়ে বসেই সংবাদমাধ্যমের সামনে বিজেপি রাজ্য নেতৃত্বকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেন তিনি। এরপরেই দল থেকে বহিষ্কার করা হয় তাঁকে।
সম্প্রতি নিজের ফেসবুকে দলের রাজ্য নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ফের সরব হয়েছেন সঞ্জিতবাবু। এর আগে রাজ্য বিজেপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক তাঁর নিশানায় থাকলেও এবার সরাসরি তিনি কটাক্ষ করেছেন রাজ্য বিজেপি’র সভাপতি দিলীপ ঘোষকে। সঞ্জিত মিশ্র লিখেছেন, “এদের (বিজেপি রাজ্য নেতৃত্বের) এই অন্যায়, আমার বিশ্বাস কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব নিশ্চয়ই অনুমোদন করবেন না। বিষয়টি কেন্দ্রীয় স্তরে নিয়ে যাব, এই জন্য নয় যে পার্টি আমাকে করতেই হবে, শুধু এই জন্য যে রাজ্যা স্তরের এই সব অপদার্থ ও স্বেচ্ছাচারী নেতাদের বিরুদ্ধে যাওয়ার সাহস কেউ তো রাখে এটা দেখাবার জন্য”। পরে তিনি লিখেছেন, “জেলা সভাপতিকে (সঞ্জিত মিশ্র) রাজ্য সভাপতি কোনও কারণ না দেখিয়েই চূড়ান্ত অপমান করে পদ থেকে সরিয়ে পরে দল থেকেও বহিষ্কার করে ক্ষমতার অপব্যবহার করেন”।
তবে ওই পোস্টেই আবার সঞ্জিতবাবু ইঙ্গিত দিয়েছেন সাম্প্রতিক মালদহ সফরের সময় কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতা অরবিন্দ মেনন তাঁর কাছে রাজ্য নেতৃত্বের সিদ্ধান্তের জন্য খেদ প্রকাশ করেছেন। তাঁর দাবি, মালদহে এলে মেননের মতো নেতা যেখানে তাঁর সঙ্গে কথা বলেন সেখানে দিলীপবাবু মালদহে এলে তাঁর খোঁজও নেন না।
সঞ্জিতবাবুর এই প্রকাশ্য বিদ্রোহে খুশি জেলা তৃণমূল। দলের নেতা বাবলা সরকার বলেন, এই হচ্ছে বিজেপি’র তথাকথিত শৃঙ্খলার নমুনা। প্রাক্তন বিজেপি সভাপতি নিজেই দলের সব দোষত্রুটি জানিয়ে দিচ্ছেন প্রকাশ্যে। এতেই প্রমাণ হচ্ছে বিজেপি’তে গণতন্ত্র নেই।
বিজেপি’র জেলা সভাপতি গোবিন্দ মণ্ডলের বক্তব্য, আমাদের দল ঐক্যবদ্ধ। শৃঙ্খলাই আমাদের মূল পরিচয়। ব্যক্তি নয়, দল বড়— এই শিক্ষাই আমরা পেয়েছি। যিনি যাই বলুন, বিজেপি নিজস্ব আদর্শ নিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই করেই আগামীতে এই রাজ্য দখল করবে। নির্বাচনী সাফল্য ব্যক্তিগত নয়, সমষ্টিগত লড়াইয়ের ফল।