কোনও কিছুতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ভাববেন। শত্রুতার অবসান হবে। গুরুজনদের কথা মানা দরকার। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সুফল ... বিশদ
জানা গিয়েছে, প্রত্যেক বছর জুন থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত শুধু ওই পাখিদের জন্যই মাসে অন্তত ২০ দিন বিদ্যুৎ বিভ্রাট হয়। মেরামত করতে দপ্তরের কর্মীদের ছোটাছুটি করতে হয়। বিদ্যুৎ দপ্তরের রায়গঞ্জের ডিভিশনাল ম্যানেজার উৎপল দাস বলেন, জুন থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত পরিযায়ী পাখিদের জন্য মাসে একাধিক দিন রায়গঞ্জে সরবরাহ লাইনে বিভ্রাট হয়। এতে মাঝে মধ্যে বিদ্যুৎ পরিষেবা বিঘ্নিত হয়। আমাদের কর্মীরা দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সক্রিয় থাকেন।
রায়গঞ্জের গ্রামাঞ্চলে গরম পড়তেই প্রায় প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও বিদ্যুতের ঝামেলায় ভুগছেন বাসিন্দারা। দপ্তরের ইঞ্জিনিয়াররা জানিয়েছেন, বিদ্যুৎ সরবরাহে ঘাটতির জন্য সবসময় ওই সমস্যা হয় না। এখানে সরবরাহ লাইনের আশেপাশে বাঁশ ও মটকা গাছ থাকার ফলে সমস্যা হয়। ঝড়-বৃষ্টি হলে গাছের ডাল ভেঙে সরবরাহ লাইনে পড়ে মাঝেমধ্যে বিপত্তি হয়। রায়গঞ্জ ডিভিশনের অধীনস্থ সাতটি সাব স্টেশন থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করার লাইনের দৈর্ঘ্য অনেক বেশি। তাই লাইনের ফল্ট খুঁজে পেতে কর্মীদের মাঝেমধ্যে কালঘাম ছুটে যায়। মেরামতির জন্য ক্ষত চিহ্নিত করতে অনেক বেশি সময় লাগে। তাই ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন অবস্থায় কাটাতে হয় বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের। তবে লাইনে ডাল বা বাঁশ পড়ে সমস্যা হলে সেটা চিহ্নিত করতে মেহনত কম হয়। এলাকার বাসিন্দারাও তখন দপ্তরের কর্মীদের জায়গা চিহ্নিত করতে সাহায্য করেন। কিন্তু কুলিকে আসা বড় আকারের পরিয়ায়ী পাখিদের নিয়ে মারাত্মক সমস্যা হয়। জুন থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ওই পাখিরা কুলিকে স্থায়ীভাবে থাকে। তারা দিনের বেলা আশেপাশের গ্রামের মাঠে আহারের খোঁজে বেরিয়ে যায়। কুলিক পক্ষ্মীনিবাসের পাশে বিদ্যুৎ দপ্তরের একটি সাবস্টেশন রয়েছে। ওই সাব স্টেশন থেকে ছয়টি সরবরাহ লাইন বেরিয়েছে। কুলিক ফরেস্টের কাছে সাব স্টেশন থেকে রায়গঞ্জের বিভিন্ন প্রান্তে বিদ্যুতের লাইন চলে গেলেও মেইন লাইনে কভার নেই। তাই অনেক সময় পাখিরা সেখানে বসে পড়তেই বিদ্যুৎ বিভ্রাট হচ্ছে। অনেক সময় ফল্ট খুঁজে পেতে সমস্যা হচ্ছে। দপ্তরের আধিকারিকরা বলেন, পাখিরা মাঠে গিয়ে সরবরাহ লাইনে বসে ঘনঘন এমন বিপত্তি ঘটায়। অনেক সময় শর্ট সার্কিট হয়ে বিদ্যুতের তার পুড়ে যায়। আবার অনেক সময় ট্রান্সফরমার পুড়ে গিয়ে বিস্তীর্ণ এলাকা বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে। পাখিদের ডানার ঘায়ে রায়গঞ্জের বিভিন্ন প্রান্তে বিদ্যুৎ পরিষেবা ভেঙে পড়লেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে পাখিরা মারা যায় না।
বন দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, এবছর পরিযায়ী পাখিরা গত বছরের তুলনায় অন্তত ২০ শতাংশ বেশি এসেছে। ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত ওই পাখিরা এখানে থেকে বংশবিস্তার ঘটিয়ে ফের উড়ে যাবে নতুন ঠিকানায়। আগামী কয়েক মাস ধরে ওই পাখিদের টানে এলাকায় আসবেন পর্যটকরাও। কিন্তু পর্যটকদের আকর্ষণকারী সেই পাখিরাই এখন রায়গঞ্জের বিদ্যুৎ দপ্তরের কর্মীদের মাথাব্যাথার কারণ।