বিএনএ, জলপাইগুড়ি: স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তিগুলি যাতে কোনওভাবে নাশকতামূলক ঘটনা ঘটাতে না পারে সেজন্য উত্তরবঙ্গজুড়ে কড়া নজরদারি রাখছে পুলিস। স্বাধীনতা দিবসের পরেই আগস্ট মাসে পৃথক রাজ্যের দাবিতে আন্দোলনে নামবে কেপিপি ও গ্রেটার কোচবিহারের যৌথ মঞ্চ ভূমিপুত্র ঐক্য মঞ্চ। সেই সুযোগে কেএলওরা যাতে সক্রিয় না হয় সেজন্যও পুলিস প্রশাসন সর্তক রয়েছে। স্বাধীনতা দিবসের আগে উত্তরবঙ্গজুড়ে তাই বিভিন্ন এলাকায় নাকা চেকিং চলছে। সীমান্তবর্তী এলাকায় বিএসএফ’কে সর্তক থাকতে বলা হয়েছে।
রাজ্য পুলিসের উত্তরবঙ্গের আইজি আনন্দ কুমার বলেন, স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে উত্তরবঙ্গজুড়ে জোর সর্তকতা নেওয়া হয়েছে। কোনও বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন যাতে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটাতে না পারে সেই জন্য প্রতিনিয়ত নজরদারি চলছে। বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিস নাকা চেকিং করছে।
গত বছর দুর্গাপুজোয় দিনহাটায় তিনজন জঙ্গি ঢুকে পড়ার খবরে উত্তাল হয়ে উঠেছিল উত্তরবঙ্গ। পুজোর সময় এই খবরে পুলিস কর্তাদের অনেকেরই ঘুম কেড়ে নয়। উত্তরবঙ্গজুড়ে কড়া নিরাপত্তায় ঘিরে ফেলা হয়েছিল। প্রসঙ্গত, কোচবিহারকে ফের পৃথক রাজ্য ঘোষণার দাবিতে আন্দোলন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। মালদহকে বাদ দিয়ে উত্তরবঙ্গের বাকি জেলাগুলি ও নিম্ন অসমকে নিয়ে পৃথক রাজ্যের দাবিতে আন্দোলনে নামবে ভূমিপুত্র ঐক্য মঞ্চ। রাজ্য পুলিসের এককর্তার দাবি, ভুটানে অপারেশন ফ্লাশ আউটের পরে জঙ্গি কার্যকলাপ অনেকটাই বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ২০১৩ সালের ডিসেম্বর মাসে জলপাইগুড়িতে বোমা বিস্ফোরণে পাঁচজন মারা যায়। ওই ঘটনার কয়েকদিন পরেই মালদহে প্রকাশ্যে গুলি চালনার ঘটনা ঘটে। দু’টি ঘটনায় বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কেএলওর নাম জড়িয়েছিল। এরপরে আর কোনও ঘটনা না ঘটলেও সর্তক রয়েছে পুলিস। সম্প্রতি কোচবিহারে অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়। অসম থেকে বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর হাত হয়ে ওই অস্ত্রগুলি কোচবিহারে আসতে পারে বলে পুলিস কর্তাদের ধারণা। কাশ্মীর ঘটনার পরে কামতাপুর রাজ্যের দাবিতে ফের গা ঝাড়া চেষ্টায় আছে কেএলও। স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে তাদের উপস্থিতি জানান দিতে নাশকতামূলক ঘটনা ঘটাতেই পারে। সেজন্যই জোর সর্তকতামূলক ব্যবস্থা পুলিস নিয়েছে। কোচবিহারের দিনহাটা, তুফানগঞ্জের বিস্তীর্ণ এলাকায় কাঁটাতার বিহীন এলাকা রয়েছে। দুর্গোপুজোর সময় তুফানগঞ্জের বালাভূত দিয়ে জঙ্গি প্রবেশের খবর ছিল। সর্তকতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে উত্তরবঙ্গে বিভিন্ন জায়গায় নাকা চেকিং বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। রেল, বিমানবন্দর সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় পুলিসি নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। ভিভিআইপিদের নিরাপত্তার ব্যবস্থাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বাংলাদেশ সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় বিএসএফের উচ্চ পদস্থ কর্তারা নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখছেন।