কোনও কিছুতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ভাববেন। শত্রুতার অবসান হবে। গুরুজনদের কথা মানা দরকার। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সুফল ... বিশদ
পুলিস সুপার বলেন, একান্দর গ্রামে তৃণমূল নেতা প্রদীপ রায়(২৫) খুনের দিন সন্ধ্যায় টাকা চেয়ে বিশ্বজিৎকে ফোন করেন। বিশ্বজিৎ ওই সময় গাজোলে ছিল। আধঘণ্টা পর সে প্রদীপের দিদির বাড়ি পৌঁছনোর কথা ফোনে জানায়। কিন্তু প্রতিশ্রুতি মতো বিশ্বজিৎ সেখানে যায়নি। যদিও গ্রেপ্তারের পর সে পুলিসকে বিভ্রান্ত করার জন্য প্রদীপের সঙ্গে দিদির বাড়িতে দেখা করার কথা জানায়। তবে মৃতের দিদির বাড়ির লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সেখানে ঘটনার দিন বিশ্বজিতের না যাওয়ার ব্যাপারে নিশ্চিত হয়। ফোনে অবশ্য সে এক-দু’দিনের মধ্যে পাওনা টাকা ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিল। খুনের ব্যাপারে পুলিস সুপার বলেন, ঘটনাস্থলে বিশ্বজিতের উপস্থিতির বিষয়টি ইতিমধ্যেই আমরা তথ্য প্রমাণ জোগাড় করেছি। তবে সে একা খুন করেছে কি না আমরা এখনও নিশ্চিত নই। খুনে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। ধৃতকে জেরা করে শীঘ্রই সবকিছু জানা যাবে।
পুলিস এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গাজোল ব্লকের বিধানপল্লি বুথের সভাপতি প্রদীপ রায় খুন হওয়ার পর জেলার রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। একান্দর গ্রামে মৃতের শ্বশুরবাড়ি। তিনবছরের মেয়েকে নিয়ে ওই গ্রামেই মৃতের স্ত্রী বিচিত্রা রায় ছিলেন। পড়াশোনার কারণে বিচিত্রাদেবী বেশিরভাগ সময় বাপেরবাড়ি থাকতেন। প্রদীপবাবু সেখানে মাঝেমধ্যে যেতেন। এদিকে পাশের মাঝরা গ্রামের বাসিন্দা বিশ্বজিতের সঙ্গে প্রদীপবাবুর বছরচারেক আগে বন্ধুত্ব হয়। বিশ্বজিৎ বিবাহিত। তদন্তকারী অফিসাররা জানিয়েছেন, দু’জনে বিবাহিত হওয়ার পরেও একাধিক মহিলার সঙ্গে সম্পর্ক রাখত। এক্ষেত্রে স্ত্রী বাপের বাড়িতে থাকায় প্রদীপবাবু বেপরোয়া জীবনযাপনে অভ্যস্ত হয়ে পড়েন। তা নিয়ে স্ত্রী’র সঙ্গে তাঁর বিবাদ শুরু হয়। তিনি সম্প্রতি বিশ্বজিতের সঙ্গ ত্যাগ করেন। প্রদীপবাবু সম্প্রতি কয়েকজনের কাছে বিশ্বজিতের সম্পর্কে নানা কথা বলে বেড়াচ্ছিলেন। তা নিয়ে দু’জনের সম্পর্কের চরম অবনতি হয়।
তদন্তকারী এক অফিসার বলেন, দিন দশেক আগে প্রদীপের ভগ্নিপতি মারা যান। মাঝরা গ্রামে প্রদীপের দিদির বাড়ি। অভিযুক্ত যুবকও ওই গ্রামের বাসিন্দা। কিছুদিন ধরেই বিশ্বজিৎ সেভাবে কোনও রোজগার করত না। তা সত্ত্বেও সে কিছু জমি কিনেছিল। জমি কেনার টাকা সে কোথা থেকে পেয়েছিল তা জানার চেষ্টা চলছে। প্রদীপের টাকায় সে জমি কিনে থাকতে পারে। জমিতে বিনিয়োগ করার ফলে তার কাছে আর টাকা ছিল না। এদিকে জমি বিক্রি করে সে টাকা দেওয়ার পক্ষপাতি ছিল না। ফলে সে প্রদীপকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করে। অন্যদিকে সম্প্রতি বিশ্বজিৎ এবং প্রদীপের মধ্যে দূরত্ব বেড়েছিল। তৃণমূল নেতা মহিলা সংসর্গ এড়িয়ে চলছিলেন। যদিও বিশ্বজিতের স্বভাবের কোনও পরিবর্তন হয়নি। প্রদীপও ঘনিষ্ট বন্ধুবান্ধবের কাছে বিশ্বজিতের কুকীর্তির কথা ফাঁস করেছিল। সেই বিষয়টি বিশ্বজিতের কানে যায়। এতেই একসময়ের অন্তরঙ্গ বন্ধু কার্যত চক্ষুশূল হয়ে ওঠে। প্রদীপ কয়েকদিন ধরে পাওনা টাকা চাওয়ায় বিশ্বজিতের মনে চরম বিদ্বেষ তৈরি হয়। তা থেকেই সে ঠান্ডা মাথায় খুনের পরিকল্পনা করে।