বিদ্যার্থীরা শুভ ফল লাভ করবে। মাঝে মাঝে হঠকারী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করায় ক্ষতি হতে পারে। নতুন ... বিশদ
শনিবার সকাল থেকেই কোতোয়ালি ভবন ঘেরাওয়ের প্রস্তুতি শুরু করেন কালিয়াচক-২ ব্লকের দলের নেতাকর্মীরা। প্রাক্তন জেলা পরিষদ সদস্য আসাদুল আহমেদ, ব্লকের প্রাক্তন দলীয় চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি টিঙ্কু রহমান বিশ্বাস প্রমুখ নেমে পড়েন আসরে। তাঁদের অনুগামীরা দলে দলে জড়ো হতে থাকেন মোথাবাড়িতে। তাঁদের বক্তব্য, স্থানীয় মোথাবাড়ির বিধায়ক সাবিনা ইয়াসমিনের পরামর্শে ব্লক কমিটি তৈরি করেছেন মৌসম। তাতে সর্বনাশ হচ্ছে তৃণমূলের।
বাস বোঝাই করে সকাল ১১টা নাগাদ বিক্ষোভকারীরা এসে পৌঁছন স্টেশন রোডে মৌসমের কার্যালয় নুর ম্যানসনে। সেখানে জেলা সভাপতিকে না পেয়ে বিক্ষোভকারীদের গাড়ি রওনা হয় কোতোয়ালি ভবনের উদ্দেশে। সেখানেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। এতেই ক্ষোভ আরও বাড়ে। দলের মহিলা কর্মীরা বলতে শুরু করেন, তাঁদের এড়িয়ে যেতেই কোতোয়ালি ভবন ছেড়েছেন মৌসম।
মৌসম নুর অবশ্য এদিনও ছিলেন অত্যন্ত শান্ত। হবিবপুরে আদিবাসী দিবসের অনুষ্ঠানে ছিলেন তিনি। পরে বলেন, ছোটখাট ক্ষোভ বিক্ষোভ থাকতেই পারে। আলোচনার মাধ্যমেই সব মিটিয়ে ফেলা যায়। তবে দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গের চেষ্টা বরদাস্ত করা হবে না।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনে মোথাবাড়ি কেন্দ্রে তৃণমূলের হয়ে লড়াই করে কংগ্রেস প্রার্থী সাবিনা ইয়াসমিনের কাছে হেরে যান নজরুল ইসলাম। দু’জনের ব্যক্তিগত বৈরিতা তৃণমূলের অভ্যন্তরে বহুল চর্চিত। সাবিনার এক সময়ের ঘনিষ্ঠ অনুগামী আসাদুলও জেলা পরিষদের সদস্য থাকাকালীনই যোগ দেন তৃণমূলে। তাঁর সঙ্গে ক্রমশ দূরত্ব বাড়ে বিধায়কের। টিঙ্কু রহমান বিশ্বাস ২০১১ সালে কংগ্রেস-তৃণমূল জোট প্রার্থী সাবিনা’র বিরুদ্ধে গোঁজ প্রার্থী শাহানাজ কাদরির প্রধান সহায়ক ছিলেন। এই মুহূর্তে সবাই তৃণমূলে। সাবিনাও যোগ দিয়েছেন শাসক দলে। ফলে বিধায়ক ও বিধায়ক বিরোধী গোষ্ঠীতে কার্যত আড়াআড়ি বিভিক্ত কালিয়াচক-২ ব্লকের তৃণমূল।
এদিন আসাদুল আহমেদ, নজরুল ইসলাম প্রমুখ তৃণমূল নেতাদের দাবি, সাবিনা ইয়াসমিন পুরনো তৃণমূল নেতানেত্রীদের সরিয়ে রেখে নিজের পছন্দের লোকেদের জায়গা করে দিয়েছেন নতুন ব্লক কমিটিতে। নামে মাত্র রাখা হয়েছে জেলা পরিষদের দুই নির্বাচিত দলীয় সদস্যকে। ইতিমধ্যে একজন ব্লক কমিটির সদস্য সরে আসার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। বাকিদের মধ্যে আরও দু’জন পদত্যাগ করবেন বলে দাবি বিক্ষুব্ধ নেতাদের।
আসাদুল আহমেদ বলেন, কংগ্রেস ও বিজেপি ঘনিষ্ঠ নেতাদের ব্লক কমিটিতে স্থান দেওয়া হয়েছে। খাতায় কলমে কংগ্রেসের বিধায়ক তৃণমূলে এসে আসলে চেষ্টা করছেন তৃণমূলকেই খতম করতে।
সাবিনা ইয়াসমিনের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে তাঁর ঘনিষ্ঠ এক প্রবীণ তৃণমূল নেতা বলেন, দলের সর্বোচ্চ নেত্রীর নির্দেশ মোতাবেক স্থানীয় বিধায়ক হিসেবেই তিনি ব্লক কমিটি গঠনে কার্যকরী ভূমিকা নিয়েছেন। যাঁরা প্রবীণ তৃণমূল নেতা তাঁদের সম্মান দিয়ে নতুন কমিটিতে রাখা হয়েছে। এতেই আঁতে লেগেছে তাঁদের যাঁরা এতদিন দলটাকে কুক্ষিগত করে রেখে নিজেদের ব্যক্তিগত স্বার্থ চরিতার্থ করেছেন। লোকসভা নির্বাচনে তাঁদের ভূমিকা থেকেই বোঝা গিয়েছে আসলে তাঁরা তৃণমূলকে জনবিচ্ছিন্ন করে ফেলেছেন। তাই যখন দল নতুন করে ঘুরে দাঁড়াতে চাইছে তখন প্রকাশ্যে দলের নেতৃত্বকে কটূক্তি করে দলের গায়ে কালি লাগাতে উঠেপড়ে লেগেছেন।