উচ্চতর বিদ্যায় সাফল্য আসবে। প্রেম-ভালোবাসায় আগ্রহ বাড়বে। পুরনো বন্ধুর সঙ্গে সাক্ষাতে আনন্দলাভ হবে। সম্ভাব্য ক্ষেত্রে ... বিশদ
সাগরদিঘি ফিশফার্মের ম্যানেজার জীবেশ পোদ্দার বলেন, আমরা হ্যাচারিতে রুই, কাতলা, বাটা প্রভৃতি মাছের ডিম তৈরি করছি। ওসব ডিম ফুটে বের হওয়া পোনা কিছুদিন আগেও চাষিরা হাঁড়িতে করে নিয়ে যেতেন। তাতে মালদহ থেকে কোচবিহার কিংবা দার্জিলিংয়ের মতো দূরববর্তী জায়গায় নিয়ে যাওয়ার সময়ে অনেক মাছ মরে যেত। এতে চাষিদের ক্ষতি হতো। তাই আমরা এবছর থেকে অক্সিজেন প্যাকে মাছের চারাপোনা সরকারি মূল্যে বিক্রি করছি। এই পদ্ধতিতে পোনা বিক্রি করে আমরা খুব ভালো সাড়া পাচ্ছি।
জেলা পরিষদের মৎস্য কর্মাধ্যক্ষ সরলা মুর্মু বলেন, সাগরদিঘি প্রকল্পের কথা শুনেছি। খুব ভালো উদ্যোগ তারা নিয়েছে। এতে মাছচাষিরা উপকৃত হচ্ছেন।
ফিসফার্মে উৎপাদিত বিভিন্ন প্রজাতির মাছ অক্সিজেন ভর্তি আধুনিক প্যাকেটে বন্দি করে উত্তরবঙ্গের জেলায় জেলায় পাঠানোর কাজ শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যেই দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার এবং দুই দিনাজপুরের বিভিন্ন ব্লকের চাষিরা সাগরদিঘি ফিশফার্মে এসে মাছের চারাপোনা কিনে নিয়ে গিয়েছেন। বিভিন্ন জেলা থেকে বরাত আসছে। আগে সাধারণত হাঁড়িতে করে মৎস্যজীবীরা মাছের চারাপোনা নিয়ে যেতেন। বেশিরভাগ সময়েই দেখা যেত কিছু মাছ মরে গিয়েছে। এতে মৎস্যচাষিদের লোকসান হতো। কিন্তু এবার সাগরদিঘিতে অক্সিজেন প্যাক যুক্ত বিশেষ ধরনের প্যাকেট করা হয়েছে। এভাবে মাছের পোনা দূরবর্তী জায়গায় নিয়ে গেলেও সেসব মরছে না। স্বাভাবিকভাবেই এই ব্যবস্থা শুরু হওয়ায় জেলার মৎস্যজীবীরা চারাপোনা নিয়ে যেতে উৎসাহ দেখাচ্ছেন। সাগরদিঘি ফিশফার্ম সূত্রে জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত অক্সিজেন প্যাকে দু’লক্ষাধিক চারাপোনা দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার সহ দুই দিনাজপুরের মৎস্যজীবীরা নিয়ে গিয়েছেন।
সাগরদিঘি ফিশফার্ম সূত্রে জানা গিয়েছে, এখানকার পাঁচটি হ্যাচারিতে মাছ থেকে প্রজনন ঘটিয়ে ডিম উৎপাদন করা হয়। এরমধ্যে রুই, কাতলা, মৃগেল, সিলভার কাপ, গ্রাসকাপ সহ কয়েকটি প্রজাতির মাছ চাষ করা হচ্ছে। এই ফিশফার্মে বছরে ছ’কোটি ডিম উৎপাদন করা হয়। উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মাছচাষিরা এখানে এসে চারাপোনা কিনে নিয়ে যান। কিন্তু দূরবর্তী এলাকায় হাঁড়িতে মাছ পরিবহণ করার সময়ে অনেক চারাপোনাই মারা যায়। সেটা রুখতেই এবছর থেকে অক্সিজেন প্যাকেট যুক্ত বিশেষ ব্যবস্থায় চারাপোনা বিক্রি শুরু হয়েছে। একটি নির্দিষ্টমাপের প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগে জল ও অক্সিজেন ভরে তারমধ্যে চারাপোনা রেখে দেওয়া হচ্ছে। এই বিশেষ পদ্ধতিতে ওই চারাপোনা ৬-১২ ঘণ্টা পর্যন্ত রাখা যায়। হাঁড়িতে চারাপোনা নিয়ে গেলে দু’ঘণ্টা পর্যন্ত তাদের বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব হয়। এই বিশেষ অক্সিজেন প্যাকে মাছকে দীর্ঘক্ষণ অন্যত্র বহন করে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে। ফলে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলি থেকে এসে মৎস্যজীবীরা সাগরদিঘির চারাপোনা সংগ্রহ করে নিয়ে যেতে পারছেন।