বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
বিজেপির মাতালহাট অঞ্চল সম্পাদক অনন্ত কুমার বর্মন বলেন, ওই পঞ্চায়েত সদস্যদের অত্যাচারে কিছুদিন আগেও বিজেপির কর্মীরা গ্রামে থাকতে পারতেন না। নিচুতলার কর্মীরা দিনের পর ওনাদের হাতে মার খেয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। অথচ তাঁদেরই দলে নেওয়া হলো কেন? বিজেপিতে ঢুকেই তারা স্বমূর্তি ধারণ করেছেন। পুরনো কর্মীদের উপর তাঁরা চড়াও হচ্ছেন। অবিলম্বে তাঁদের বহিষ্কার করতে হবে। বিজেপির জেলা সভাপতি মালতী দেবী বলেন, নতুনদের আমরা দলে স্বাগত জানাচ্ছি। জেলার সমস্ত পঞ্চায়েতই ধাপে ধাপে বিজেপির হয়ে যাচ্ছে। দলকে শক্তিশালী করার জন্য এটা করতে হচ্ছে। তবে এনিয়ে দলের কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ থাকা স্বাভাবিক। তৃণমূলও এভাবে আমাদের দলের মধ্যে দুষ্কৃতী ঢুকিয়ে দিতে পারে। আমরা এব্যাপারে আলোচনা করে দলগতভাবে সিদ্ধান্ত নেব।
বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, কোচবিহারের অন্তত ২২টি পঞ্চায়েতের সিংহভাগ সদস্য ধাপে ধাপে বিজেপির পতাকা হাতে তুলে নিয়েছেন। দিনহাটার পঞ্চায়েত সমিতির সাতজন সদস্যকে নিয়েও নানা জল্পনা ছড়িয়েছে। এদিন দুপুরে বিজেপির নিচুতলার কর্মীরা দল বেঁধে দিনহাটা থেকে কোচবিহার শহরে দলের জেলা পার্টি অফিসে হাজির হন। জেলা অফিসে ঢুকেই তাঁরা চেয়ার তুলে ভাঙচুর করার জন্য উদ্যত হয়েছিলেন। অন্যান্যরা দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। বিক্ষোভকারীরা এরপর মাটিতে বসে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করে দেন। নিশীথবাবু ও মালতীদের দেবীর বিরুদ্ধে তাঁরা স্লোগান দিতে শুরু করেন। তাঁদের অভিযোগ, যে তৃণমূলীদের হাতে এতদিন যাদের হাতে তারা মার খেয়েছেন আজ তাদেরকেই জামাই আদর করে ঘরে বসানো হচ্ছে। তৃণমূল থেকে এসে বিজেপির সংসদ সদস্য হয়েছেন নিশীথবাবু। তিনিই এখন তৃণমূলের লোকজনকে বিজেপির ঘরে আশ্রয় দিচ্ছেন বলে অভিযোগ। এটা কোনওভাবেই মানা যায় না। এদিকে পরিস্থিতি ঘোরালো হচ্ছে এটা আঁচ করেই দলের জেলা সহ সভাপতি ব্রজ গোবিন্দ বর্মন, জেলা সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয় চক্রবর্তী, সুকুমার রায় প্রমুখ বিক্ষোভকারীদের বোঝানোর চেষ্টা করেন। এভাবে বিক্ষোভ দেখালে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হতে পারে বলেও জেলা নেতৃত্ব আশঙ্কা প্রকাশ করেন। বিক্ষোভকারীদের পালটা দাবি, যেভাবে ওই তৃণমূলীদের দলে নেওয়া হচ্ছে তাতে গ্রামে গ্রামে দলের ভাবমূর্তি আরও নষ্ট হচ্ছে। বিক্ষোভকারীরা সদ্য দলে আসা পঞ্চায়েত সদস্যদের বহিষ্কার করার দাবিতে অনড় থাকেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে জেলা সভাপতি দ্রুত অন্যান্যদের নিয়ে বৈঠকে বসেন। রাজনৈতিক মহলের মতে ভোটে জিততেই তৃণমূল থেকে স্রোতের মতো জনপ্রতিনিধি ও সাধারণ নেতা কর্মীরা বিজেপিতে আসতে শুরু করেছেন। মূলত পিঠ বাঁচানোর জন্যই তাঁরা এই পথ নিয়েছেন। কিন্তু যাদের অত্যাচারে এতদিন দলের কর্মীরা সর্বস্ব হারিয়েছেন তারা দলে আসার পরই যাবতীয় কালিমা ধুয়ে যাবে এটা কিছুতেই মানতে পারছেন না আদি বিজেপিরা। জেলার সর্বত্র এনিয়ে ক্ষোভ মাথাচাড়া দিচ্ছে।