শরীর-স্বাস্থ্যের আকস্মিক অবনতি। বিদেশ ভ্রমণের সুযোগ আসতে পারে। সম্পত্তি নিয়ে পারিবারিক বিবাদ, ব্যবসায় নতুন সুযোগ ... বিশদ
ভোটের আঙিনায় এই প্রথম হলেও মিলিদেবীর তাতে এতটুকু অসুবিধা হচ্ছে না। কারণ বাবা ছিলেন আরএসপি তথা দলের চা শ্রমিক সংগঠনের জাঁদরেল নেতা। পারিবারিক রাজনৈতিক ঘরানাতেই তিনি মানুষ হয়েছেন। মনোহরবাবু যখন মন্ত্রী ও দলের নেতা হিসাবে এলাকায় যেতেন তখন মেয়েকে সঙ্গে নিতেন। তখন থেকেই মিলিদেবী জেলার চা শ্রমিকদের কাছে ঘরের মেয়ে হয়ে উঠেছেন। কলকাতায় পরিবার ছেড়ে কীভাবে ভোটের প্রচার সামলাচ্ছেন? প্রশ্ন শুনে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক নিয়ে পড়াশুনা করা মিলিদেবীর সাবলীল উত্তর, বাবা রাজনীতির জগতের মানুষ ও প্রাক্তন জনপ্রতিনিধি থাকার সুবাদে রাজনীতির প্রাথমিক পাঠ আমার ছিলই। ফলে বুঝতেই পারছেন ভোটের ময়দানে আমাকে হোঁচট খেতে হচ্ছে না।
মিলিদেবীর স্বামী বিম্বিসার ওঁরাও একটি সরকারি সংস্থায় বড় পদে আছেন। বড় ছেলে মায়াঙ্ক শিবপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে পড়াশুনা করছে। ছোট ছেলে উৎসব ক্লাস সেভেনের পড়ুয়া। কী রান্না করতে ভালোবাসেন? এই প্রশ্নেব উত্তরে মিলিদেবীর লাজুক জবাব, রোজকার রান্না তো আমাকে করতে হয় না। উৎসবের সময় নিজে রান্না করি। এদিকে চা বাগানে মানুষ হওয়ার সুবাদে এবং নিজে আদিবাসী সম্প্রদায়ের হওয়ায় আদিবাসী নৃত্যে পারদর্শী মিলিদেবী। তিনি বলেন, বাপের বাড়িতে থাকলে চা বাগানের বউদের সঙ্গে নাচানাচি করি। লোকসভা নির্বাচনের ইতিহাসে আলিপুরদুয়ার আসনে ফ্রন্টের মিলিদেবীই প্রথম মহিলা প্রার্থী। একথা মনে করিয়ে দিলে মিলিদেবী বলেন, সেজন্যই তো প্রচারে আমাকে শুনতে হচ্ছে ‘রাউরে মনকর বেটি’ অর্থাৎ আমাদের মেয়ে। আমি তো চা শ্রমিকদের ঘরেরই মেয়ে। প্রচারে যে বাগানেই যাচ্ছি সেখানেই শ্রমিকরা আমাকে ঘরের মেয়ে হিসাবে জড়িয়ে ধরছেন।
মেটেলি থেকে কুমারগ্রামের সংকোশ পর্যন্ত চা বাগানগুলিতে এক সময় কাস্তে হাতুড়ির তুলনায় শুধুই কোদাল বেলচার ঝনঝনানি শোনা যেত। কিন্তু ২০১১ সাল থেকে জেলায় বামপন্থীদের রক্তক্ষরণ শুরু হয়। গত পঞ্চায়েত ভোট থেকে এই রক্তক্ষরণ আরও বেড়ে যায়। রাজনৈতিক মহলের প্রশ্ন, পারবেন মিলিদেবী ফিরিয়ে আনতে চা শিল্পে বামপন্থীদের সেই স্বর্ণযুগকে? এই প্রশ্নে একজন রাজনৈতিক নেতার মতোই মিলিদেবী বলেন, প্রচারের সময় চা শ্রমিকরাই বলছেন বামফ্রন্টের সময়ই আমরা ভালো ছিলাম। অন্য দলগুলি এখন চা শ্রমিকদের নিয়ে শুধুই রাজনীতি করছে। শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি, বকেয়া ও বন্ধ বাগান খোলা সহ শ্রমিকদের নানা সমস্যা নিয়ে বিজেপি, তৃণমূল বা কংগ্রেস কারও কোনও মাথাব্যথা নেই। আমি ভোটে লড়ছি সংসদে অসহায় চা শ্রমিকদের দাবিদাওয়া আদায়ের লড়াইয়ের জন্যই। আমি চা বাগানে বড় হয়েছি। চা শ্রমিকদের দাবিদাওয়া ভুলব কী করে। সেজন্য তো প্রচারে ভালো সাড়া পাচ্ছি।