বিদ্যায় অধিক পরিশ্রম করতে হবে। ব্যবসায় যুক্ত ব্যক্তির পক্ষে দিনটি শুভ। প্রেম-প্রীতিতে আগ্রহ বাড়বে। নতুন ... বিশদ
উত্তর দিনাজপুরের জেলা সভাপতি মোহিত সেনগুপ্ত বৃহস্পতিবার পরিষ্কার বলে দেন, এবার ভোটে আমাদের কোনও কাজ নেই। সিপিএমকে ভোট দিতে বলতে পারব না। ওদের হয়ে কাজও করতে পারব না। জোটের ফর্মূলার আগেই সিপিএম রায়গঞ্জ ও মুর্শিদাবাদ দু’টি সিট নিয়ে নিল। ওরা রায়গঞ্জ ও মুর্শিদাবাদের আসন জোর করে নিয়েছে। দুই জায়গাতেই ওরা হারবে। রায়গঞ্জ আসন কংগ্রেসের। গত নির্বাচনে ১৬২০ ভোটে কং প্রার্থী হেরেছেন। সিপিএম প্রার্থী মহম্মদ সেলিম সোশ্যাল মিডিয়ায় বলেছেন কংগ্রেস ক্ষয়িষ্ণু হয়ে গিয়েছে, কংগ্রেসের কিছু নেই। কংগ্রেসের কিছু আছে কি না আছে, সেটা ভোটে তিনি প্রমাণ পেয়ে যাবেন। সিপিএম, তৃণমূল এবং বিজেপিকে বাদ দিয়ে মানুষ ভোট দেবে। কিংবা নোটায় ভোট দেবে।
এদিকে জেলা কংগ্রেস সভাপতির এই বক্তব্যে লালপার্টির শিবির অনেকটাই মুষড়ে পড়েছে। সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য তথা রায়গঞ্জ কেন্দ্রের প্রার্থী সেলিম বলেন, রায়গঞ্জ আসনে সমঝোতা হয়েছে। কংগ্রেস নেতৃত্ব বলেছে প্রার্থী দেবে না। এরপরে কী হবে না হবে আলোচনা করে ঠিক হবে।
রায়গঞ্জে সিপিএম প্রার্থী দিয়ে দেওয়ায় জেলা কংগ্রেস সভাপতিই শুধু নন, কংগ্রেসের অন্যান্য নেতা-কর্মীরাও হতাশ, ক্ষুব্ধ। এনিয়ে প্রকাশ্যেই তাঁরা বলছেন, এই আসন প্রিয়দার, গোলাম ইয়াজদানির। এখানে সিপিএমের হয়ে প্রচার করলে তাঁদের অসম্মান করা হয়। রাজনৈতিক সৌজন্যতা সবদলের প্রতিই থাকবে। কিন্তু লড়াইয়ের ময়দানে সকলকে সঙ্গে নেওয়া যায় না। কংগ্রেসের চাকুলিয়া ব্লক কংগ্রেসের সভাপতি তথা জেলা কংগ্রেসের অন্যতম সদস্য মহম্মদ মোস্তাফারও এককথা, রায়গঞ্জ আসন কংগ্রেসের। যে প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি তাঁর একক প্রচেষ্টায় জেলাটাকে উন্নয়নের দিকে নিয়ে গেলেন তাঁর প্রয়াণের পর তাঁর উত্তরসূরী হিসেবে দীপা দাশমুন্সি এখানে আছেন। তারপরেও এআইসিসি বা প্রদেশ কংগ্রেস আসনটি সিপিএমের কাছে দানপত্র করে দেবে তা আমরা ভাবিনি। কংগ্রেসীরা কেন, জেলার কোনও মানুষই এই সিদ্ধান্ত মেনে নেবে না।
দুই দলের আসন সমঝোতার পরে কংগ্রেসের এই অবস্থানে জেলা রাজনীতিতে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। ইতিমধ্যেই সিপিএম নির্বাচনের প্রচার শুরু করেছে। দলের প্রার্থীপদ না পেয়ে কংগ্রেসের জেলা নেতৃত্ব সহ নিচুতলার কর্মীরাও প্রদেশ কংগ্রেসের উপরে ক্ষুব্ধ হয়ে আছে। তাঁরা বলেন, গত নির্বাচনে কংগ্রেস প্রার্থী খুবই সামান্য ভোটে হেরেছিলেন। এবার জেতার সুযোগ ছিল। এই জেলা থেকে কংগ্রেসের অনেক বড় বড় নেতা এমপি হয়েছেন। প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি এই জেলা থেকে নির্বাচিত হয়ে কেন্দ্রে মন্ত্রী হয়েছিলেন। তিনি জেলায় কংগ্রেসের শক্ত ঘাঁটি তৈরি করেন। এখনও মানুষ প্রিয়রঞ্জনের নামে আবেগে ভাসে। রায়গঞ্জে এইমসের ধাঁচে হাসপাতাল করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন তিনি। এখানে কংগ্রেস প্রার্থী দেবে না এটা মানা যায় না।
যদিও রাজনৈতিক মহলের একাংশ বলছে, তৃণমূল কংগ্রেস রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পরে দলবদলের হাওয়াতে জেলায় কংগ্রেসের অনেক নেতা-কর্মী দল বদল করেছে। নির্বাচিত সদস্যরাও দলবদল করে তৃণমূল শিবিরে যোগ দিয়েছেন। এবার পঞ্চায়েত নির্বাচনেও দলের ভালো ফল হয়নি। এমতাবস্থায় লোকসভা নির্বাচনে দীপা দাশমুন্সিকে প্রার্থী করে কিছুটা ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছিল জেলা কংগ্রেস। হাইকমান্ড সেই আশায় জল ঢেলে দিয়েছে। এতেই জেলা কংগ্রেসের সবস্তরের কর্মীরাই চটেছেন। তাঁরা গোঁ ধরে আছেন হাজার অনুরোধ, নির্দেশেও সিপিএমের হয়ে প্রচারে তারা যাবে না।
মোহিতবাবুকে প্রশ্ন করা হয়েছিল নেতৃত্ব যদি নির্দেশ দেয় সেলিমের হয়ে কাজ করতে, তা হলে কী করবেন? তাঁর সোজাসাপ্টা জবাব,আমাদের কথা নেতারা শোনেননি। আমাদের কথা শুনলে তো আমরা ওনাদের কথা শুনব। আমরা তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই করে মার খাব, জেল খাটব। তখন তো নেতারা কেউ আসেননি!