পারিবারিক ঝামেলার সন্তোষজনক নিষ্পত্তি। প্রেম-প্রণয়ে শুভ। অতিরিক্ত উচ্চাভিলাষে মানসিক চাপ বৃদ্ধি। প্রতিকার: আজ দই খেয়ে ... বিশদ
বর্তমানে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার একটি শিক্ষক শিক্ষণ কলেজে এমএড পড়ছেন সুলতা। কলকাতায় বেশ কয়েক মাস ধরে বিধিবদ্ধ পুজো অর্চনার পাঠ নিয়েছেন তিনি। বিশ্বকর্মা পুজো থেকে সরস্বতী পুজো পর্যন্ত যে কোনও পুজো এখন করতে পারেন বলে তিনি জানান। পাশাপাশি বিবাহের মতো শুভকাজও শাস্ত্রীয় মতে করার প্রশিক্ষণ তিনি পেয়েছেন। তবে এই কলেজের পুজোতেই তাঁর হাতে-খড়ি হল। এতে তিনি স্বাভাবতই আনন্দিত ও গর্বিত।
মালদহ কলেজের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদিকা কস্তুরী সরকার বলেন, মাত্র কয়েকদিন আগেই আমরা জানতে পারি, আমাদের কলেজের এক প্রাক্তনী দিদি যজমানির প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। সুযোগ পেলে তিনি আমাদের কলেজে সরস্বতী পুজো করতে আগ্রহী। এরপরেই আমাদের বাংলা বিভাগের শিক্ষকের মাধ্যমে আমরা তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করি। দিদি সঙ্গে সঙ্গেই রাজি হয়ে যান।
তবে অব্রাহ্মণ নারীর এই পুজো নিয়ে কেউ কেউ ভ্রূ কুঁচকেছেন কয়েকজন। তবে ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদিকা বলেন, সময় এগচ্ছে। অতীতেও আমরা গার্গী, মৈত্রেয়ী, অপালার মত বিদূষী মহিলাদের পুরুষদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ধর্মাচরণের কথা শুনেছি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অনেক পুরুষের থেকে অনেক বেশি দক্ষতার সঙ্গে সরকার চালাচ্ছেন। নারীর স্বশক্তিকরণের কথাও তিনি বলছেন। নারী বা অব্রাহ্মণ হওয়ায় কাউকে পুজোপাঠ থেকে বিরত রাখা উচিৎ নয় বলেই আমরা মনে করি। মনের শ্রদ্ধা, ভক্তি, নিষ্ঠাটাই আসল। এদিন সরস্বতী পুজোর পাশাপাশি সুলতার পরিষ্কার, শুদ্ধ মন্ত্রোচ্চারণে অঞ্জলিও দিয়েছেন অনেক কলেজ পড়ুয়া। তরুণী এই পুরোহিতের সরস্বতী পুজো দেখতে অনেকেরই উৎসাহ ছিল তুঙ্গে।
সুলতা বলেন, নিজের প্রাক্তন কলেজের প্রাতিষ্ঠানিক সরস্বতী পুজো করেই পুরোহিত হিসাবে আমার ‘হাতে-খড়ি’ হল। আমি যজুর্বেদের নিয়ম মতে পুজো করেছি। ব্রাহ্মণরা সাধারণত সামবেদের রীতি মেনে পুজো করেন। আগামীতে দুর্গাপুজো বা কালীপুজো করার ইচ্ছে রয়েছে। মেয়েরা তো বাড়িতে নিজেরাই লক্ষ্মীপুজো বা অন্যান্য পুজো করেন। তাহলে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে পুজো করতে বাধা কোথায়?
রামকৃষ্ণ মিশনের এক সন্ন্যাসীও অব্রাহ্মণ নারীর পৌরহিত্যে আপত্তির কিছু দেখেননি। তিনি বলেন, স্বামী বিবেকানন্দ নিজেই নারীশক্তির জাগরণের পক্ষে জোর সওয়াল করেছিলেন। জন্মসূত্রে ব্রাহ্মণ না হলেও নিজস্ব চেতনার বিকাশের মাধ্যমে কেউ পুজো করতেই পারেন। তাতে প্রশ্ন উঠবে কেন?