বিতর্ক বিবাদ এড়িয়ে চলা প্রয়োজন। প্রেম পরিণয়ে মানসিক স্থিরতা নষ্ট। নানা উপায়ে অর্থ উপার্জনের সুযোগ। ... বিশদ
ইসলামপুরের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট থেন্ডুপ শেরপা বলেন, এদিন ১৪টি গাড়ি আটক করা হয়। এর মধ্যে একটি গাড়িতে পাথর ছিল। বাকি সবক’টিতে বালি বোঝাই করা ছিল। কাগজপত্রে অনিয়ম ধরা পড়েছে। আমরা হিসেব-নিকেশ করছি। গাড়িগুলিকে জরিমানা করা হচ্ছে।
ইসলামপুরের অতিরিক্ত পুলিস সুপার কার্তিকচন্দ্র মণ্ডল বলেন, এদিন মহকুমা প্রশাসন আমাদের নিয়ে বালিবোঝাই লরির বিরুদ্ধে অভিযান করে। ওভারলোডিংয়ের জন্য আমরা কেস দিতে পারি না। পরিবহণ দপ্তর সেগুলিকে কেস দেবে। আমরা লরি আটক করে দিয়েছে। এদিন চালকদের কয়েকজন পুলিসের বিরুদ্ধে টাকা নেওয়ার ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলেছে।
ইসলামপুর মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বিভিন্ন নদী থেকে বালি তোলার বিষয়টি এতদিন সেচদপ্তর দেখত। সম্প্রতি তা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তরের হাতে দেওয়া হয়েছে। মহকুমায় সেচদপ্তরের পরিকাঠামো শক্তিশালী না থাকার কারনে বিভিন্ন ক্ষেত্রে রাজস্ব ক্ষতি হচ্ছে। তাই সেটি ভূমিদপ্তরকে দেওয়া হয়। এদিন যেসব লরি আটক করা হয় তার প্রত্যেকটিই সরকারকে রজস্ব দিয়েছে। কিন্তু দেখা যায়, কেউ ১০০ সিএফটি’র জন্য রয়্যালটি কেটেছে কিন্তু লরিতে ২০০ কিংবা ৩০০ সিএফটি বালি তুলেছে। কেউ আবার ২০০ সিএফটি’র জন্য রয়্যালটি নিয়ে ৩০০ সিএফটি কিংবা তারও বেশি পরিমাণে বালি লরিতে পরিবহণ করছিল। রয়্যালটি ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগেই এদিন লরিগুলিকে ধরা হয়। ভূমি সংস্কার দপ্তরে জানিয়েছে, এখন থেকে মাঝেমধ্যেই এমন অভিযান চলবে। পুলিস ওই লরিগুলিকে তিনপুলে নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতির ফাঁকা জায়গায় রেখেছে। ভুমিদপ্তরের আধিকারিকেরা বালির, প্রতিটি লরিতে বালির পরিমাণ মেপে দেখে হচ্ছে। ওভারলোডিংয়ের জন্য পরিবহণ দপ্তর কেস দেবে। যদিও এদিন, লরিগুলি পুলিস আটক করতেই চালকরা পালিয়ে যায়।
অন্যদিকে স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই অনেক জায়গা থেকে অবৈধভাবে বালি তুলছে। চোপড়া ব্লকের মহানন্দা, ডক ও বেরং নদীতে প্রতিদিন লরি নিয়ে গিয়ে কিছু লোক বালি তুলে আনছে। অপরিকল্পিতভাবে বালি তোলায় নদীতে খাত তৈরি হচ্ছে। এতে নদীতে স্নান করতে নেমে মাঝেমধ্যে দুর্ঘটনাও ঘটছে। গ্রামের রাস্তায় ওসব ভারী লরি লচায় রাস্তাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাঁদের আরও অভিযোগ, প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে হাতেগোনা কয়েকটি ঘাট থেকেই বালি তোল হচ্ছে। কিন্তু প্রশাসনের বিনা অনুমতিতে অধিকাংশ জায়গায় বালি মাফিয়ারা ঘাট থেকে বালি তুলে নিয়ে যাচ্ছে। অল্প সময়ে বেশি পরিমাণে বালি তোলার জন্য আধুনিক মাটি কাটার মেশিনেশ ব্যবহার করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে একাংশের পুলিসকর্মীর যোগসাজেশের কথা বাসিন্দারা জানিয়েছেন।
গত কয়েক বছর ধরে চোপড়ায় বালিখাদানের ব্যবসা রমরমিয়ে চলছে। প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই বালি মাফিয়ারা বিভিন্ন নদীতে মাটি কাটার মেশিন নামিয়ে অবৈজ্ঞানিকভাবে বালি তুলছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসনকে বহুবার এসব জানালেও কোনও লাভ হলনি। ফলে বালি মাফিয়াদের দাপটে সাধারণ মানুষ প্রতিবাদ করতে পাচ্ছে না। তাঁদের দাবি, প্রশাসন এদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ না নিলে বর্ষায় সমস্যা আরও বাড়বে।
এদিকে বালি বোঝাই লরিগুলি তিস্তা ক্যানালের রাস্তা সহ গ্রামের ছোট রাস্তা দিয়ে চলাচল করা ওসব রাস্তা ভেঙে চুরমার হয়ে যাচ্ছে। নদীর বাঁধের ওপরেও এর প্রভাব পড়ছে। পুলিস মাঝেমধ্যে জাতীয় সড়কে অভিযান চালিয়ে গাড়ি ও চালকদের গ্রেপ্তার করে। কিন্তু বালিখাদানে অভিযান চালানো হচ্ছে না। বালি নিয়ে প্রতিদিন কয়েকশো লরি জেলার বিভিন্নপ্রান্তে ও বিহারে যায়। জাতীয় সড়কের বিভিন্ন জায়গায় পুলিস চেকিং পয়েন্ট আছে। ওই পয়েন্টে চালকদের কাছে বৈধ কাগজ আছে কি না তা ঠিকমতো খতিয়ে দেখা হয় না। বৈধ কাগজ থাকলেও অনেক সময়ে টাকা না দিলে গাড়ি ছাড়া হয় না বলে চালকদের একাংশের অভিযোগ। যদিও পুলিস প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছে।